'মানসিক যন্ত্রণা বোঝানো যাবে না', ব্রিগেডের আগের রাতে বার্তা বুদ্ধের
বিধানসভা ভোটের আগে শেষ ব্রিগেড! ভোটের আগে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে সামনে এনে কার্যত কর্মীদের এনার্জি বুস্টার দিতে চেষ্টা করেছিলেন আলিমুদ্দিনের ম্যানেজাররা।
বিধানসভা ভোটের আগে শেষ ব্রিগেড! ভোটের আগে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে সামনে এনে কার্যত কর্মীদের এনার্জি বুস্টার দিতে চেষ্টা করেছিলেন আলিমুদ্দিনের ম্যানেজাররা।
কিছুক্ষণের জন্যে হলেও যদি ব্রিগেডে আসতে পারতেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সেই আপ্রাণ চেষ্টা চেষ্টা চালিইয়েছিলেন বিমান বসু, সুজন চক্রবর্তীরা। কিন্তু ব্যর্থ আলিমুদ্দিন। ব্যর্থ হল সব চেষ্টা! তবে বিশাল সমাবেশের আগে কর্মীদের জন্যে বার্তা পাঠালেন প্রাক্তন মুখ্যমন্তীর। তাঁরা বার্তায় ফুটে উঠল তাঁর মানসিক যন্ত্রণার কথা।
ব্রিগেড যাওয়ার অনুমতি দেননি ডাক্তাররা
শেষ ব্রিগেডেও অসুস্থ শরীরে মাঠে এসেছিলেন তিনি। মঞ্চের পিছনে গাড়িতে বসেই শুনেছিলেন সভা। এবারও সেই চেষ্টাই করছিলেন। নিজেই যাবেন বলে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটকে চিঠি লিখে জানান বুদ্ধবাবু। কিন্তু ডাক্তারদের অনুমতি পাওয়ার অপেক্ষা ছিল তাঁর। রাতে প্রাক্ত ন মুখ্যমন্ত্রীকে ব্রিগেড না যাওয়ারই পরামর্শ দেন ডাক্তাররা। ধুলোতে ভয়ঙ্করভাবে অ্যালার্জি রয়েছে বুদ্ধবাবুর। গতবার ব্রিগেড গেলেও গাড়ির জানলা খোলেননি। অক্সিজেনের পাইপ নাকে লাগিয়েই সভা শুনেছিলেন। কিন্তু এবার আরও অসুস্থ হয়েছেন তিনি। গত কয়েকদিন আগে হাসপাতাল থেকে ঘুরেও এসেছেন তিনি। ফলে কোনও রকম রিস্ক নিতে চান না ডাক্তাররা।
''মানসিক যন্ত্রণা বোঝানো যাবে না'
আর তাই ব্রিগেডের আগের রাতেই কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে বুদ্ধবাবু বার্তা পাঠান। সেখানে তিনি লেখেন, মাঠে ময়দানে কর্মীরা লড়াই করছেন। আর আমি গৃহবন্দি হয়ে রয়েছি। এত বড় সমাবেশ হবে অথচ আমি যেতে পারছি না। এটা আমার কাছে যন্ত্রনার। তিনি যা লিখেছেন, 'ব্রিগেড সমাবেশ নিয়ে বিভিন্নভাবে খবরাখবর নেওয়ার চেষ্টা করছি। শুনে বুঝতে পারছি বহু মানুষ সমাবেশে আসবেন এবং অনেকে এসে গেছেন। বড় সমাবেশ হবে। এরকম একটা বৃহৎ সমাবেশে যেতে না পারার মানসিক যন্ত্রণা বোঝানো যাবে না। মাঠে ময়দানে কমরেডরা লড়াই করছেন আর আমি শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে ডাক্তারবাবুদের পরামর্শ মেনে চলেছি। ময়দানে মিটিং চলছে আর আমি গৃহবন্দী যা কোনদিন কল্পনাও করতে পারিনি। সমাবেশের সাফল্য কামনা করছি।
ব্রিগেডের সঙ্গে নাড়ির সম্পর্ক বুদ্ধদেবের
ছাত্রজীবন থেকেই বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এরপর থেকেই কার্যত ব্রিগেডের সঙ্গে নাড়ির সম্পর্ক বুদ্ধদেবের। ২০১১-য় রাজ্যে বামেরা ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পরেও ব্রিগেডের মঞ্চে দেখা গিয়েছে বুদ্ধবাবুকে। তুলেছেন আওয়াজ। দিয়েছেন পরিবর্তনের ডাক। কিন্তু গত কয়েকবছর ধরে অসুস্থ তিনি। মানুষের চোখের আড়ালেই রয়েছেন তিনি। ২০১৫-য় শেষ বার ব্রিগেডে তাঁর বক্তৃতা শোনা গিয়েছিল। সেই সময় ব্রিগেডের ময়দান থেকে তৃণমূল এবং বিজেপি, দুই দলকেই উৎখাত করার ডাক দিয়েছিলেন তিনি।
এরপর ২০১৯-এ এক ঝলক বুদ্ধদেব!
২০১৯ সালে ফেব্রুয়ারিতে ব্রিগেডের ডাক দেয় বামেরা। যতই বর্ষীয়ান নেতারা থাকুন না কেন বুদ্ধবাবুই যে স্টার আলিমুদ্দিনের সেটাই নিজেই প্রমাণ করেছিলেন। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে দেখা গিয়েছিল বুদ্ধদেবকে। কিন্তু অক্সিজেন লাগানো অবস্থায় গাড়ি থেকে নামতে পারেননি তিনি। সাকুল্যে ১২ মিনিটই সে বার মাঠে ছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর সেই উপস্থিতিই বামেদের উদ্ধুদ্ধ করার পক্ষে যথেষ্ট ছিল। এবারও তাই স্টার বুদ্ধবাবুকে একবার হলেও মাঠে চেয়েছিল আলিমুদ্দিন! কিন্তু এবার বোধহয় সত্যিই তাঁকে মিস করবেন অনুগামীরা।