ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে বিশেষ তৎপরতা, ১০ IPS অফিসারকে নতুন দায়িত্ব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
ভোট পরবর্তী হিংসায় সিটের তদন্ত বিশেষ তৎপরতা, ১০ IPS অফিসারকে বিশেষ দায়িত্ব রাখলেন মমতা
ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে হাইকোর্টের নির্দেশে সিট গঠন করেছিল রাজ্য সরকার। সেই সিট ঠিকভাবে তদন্ত শুরু করল কিনা তা নজরে রাখতে ১০ জন আইপিএসকে দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নের তরফে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে গঠিত সিটকে চারটি জোনে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিজোনের দায়িত্বে থাকবেন ২ জন করে আইপিএস অফিসার। এছাড়াও সিটের সদর দফতরে থাকবেন ২ জন আইপিএস অফিসার। অর্থাৎ মোট ১০ জন আইপিএস অফিসারকে।
হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে সিট
ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে দিল্লি পর্যন্ত তোলপাড় করে ফেলেছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্র মন্ত্রী,প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়েও বিজেপি নেতারা বাংলার ভোট পরবর্তী অশান্তি নিয়ে সরব হয়েছেন। বারবার দিল্লিতে গিয়ে দরবার করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তিনি নিজে আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে গিয়েছেন। এমনকী দিল্লি থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক দল পাঠিয়েছিল রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা খতিয়ে দেখার জন্য। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কর্মীরা রাজ্যে এসে রিপোর্ট তৈরি করেছে। এই নিয়ে হাইকোর্টে মামলাও করে বিজেপি। তারপরেই হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু সেই সিট এখনও কেন তদন্ত শুরু করেনি তা নিয়ে আইকোর্টে প্রশ্ন করেছেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা।
১০ আইপিএসকে বিশেষ দায়িত্ব
হাইকোর্ট সিটের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন করার পরেই নড়েচড়ে বসে মমতা সরকার। তড়ঘড়ি নবান্নে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে গঠিত সিটকে চারটি জোনে ভাগ করা হল। রাজ্যের চারটি জোন হল নর্থ জোন, সাউথ জোন, ওয়েস্ট জোন এবং সিটের সদর দফতর। প্রতি জোেন ২ জন করে আইপিএস অফিসার থাকবেন। এছাড়া সিটের সদর দফতরে থাকবেন ২জন আইপিএস অফিসার। এছাড়াও কলকাতা পুলিশের দুই আধিকারিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা সিটের পাশাপাশি অতিরিক্ত তদন্তের দায়িত্ব নেবেন। অর্থাৎ কোনও ক্ষেত্রে তদন্তে প্রয়োজন হলে তাঁরা সাহায্য করবে সিটকে।
কারা থাকছেন দায়িত্বে
সিটের সদর দফতরের দায়িত্বে থাকছেন রেলের ডিআইজি সোমা দাস মিত্র, ডিসি শুভঙ্কর ভট্টাচার্য। নর্থ জোনে থাকছেন উত্তরবঙ্গের আইজিপি ডিপি সিং এবং মালদহ রেঞ্জের ডিআইজি প্রবীন কুমার ত্রিপাঠি। ওয়েস্ট জোনের দায়িত্বে থাকছেন পশ্চিমাঞ্চলের এডিজি সঞ্জয় সিং, বর্ধমান রেঞ্জের আইজিপি বি এল মীনা এবং সাউথ জোনের দায়িত্বে রয়েছেন দক্ষিণবঙ্গের এডিজি সিদ্ধনাথ গুপ্ত ও বারাসত রেঞ্জের ডিআইজি প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এছাড়াও কলকাতা পুলিশের দুই আইপিএস তন্ময় রায় চৌধুরী ও আইপিএস নীলাঞ্জন বিশ্বাস।
তদন্তে সিবিআই
এদিকে ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তের দায়িত্ব সিবিআইকেও দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের প্রতিনিধি দল রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শন করেছেন। চার জোনে ক্যাম্প করে তদন্ত করছে সিবিআই। দুর্গাপুর ক্যাম্প থেকে বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুরের কাজ করছেন তাঁরা। উত্তরবঙ্গের জন্য কোচবিহারে ক্যাম্প খোলা হয়েছে। এছাড়া কলকাতাকে ও সংলগ্ন কয়েকটি জেলার ভোট পরবর্তী মামলার তদন্ত করছে সিবিআইয়ের দুটি ক্যাম্প।