বিজেপিতেই মুকুল, কোনওদিনই তৃণমূলে যোগ দিইনি! 'বিস্ফোরক' দাবিতে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি
একেবারে জমজমাট নাটক! তৃণমূলে নয়, বিজেপিতেই রয়েছেন বলে দাবি করলেন মুকুল রায়। শুধু তাই নয়, আদৌ কোনওদিনই নাকি তৃণমূলে যোগ দেননি তিনি। শুক্রবার বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে আইনজীবী মারফত লিখিত ভাবে এমনটাই জানিয়েছেন মুকুল। তাঁর এহেন দাবি ঘিরেই কার্যত তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি।

যদিও বিজেপি-র পরিষদীয় দলের আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এই বিষয়ে তাঁরা আইন অনুযায়ী অবশ্যই এগোবেন। আগামী ৩ জানুয়ারি এই বিষয়ে ফের একবার শুনানি রয়েছ।
শুধু তাই নয়, বীরভুমের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আরও এক বিস্ফোরক দাবি করেন মুকুল। বলেন, আগামী পুরনির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি ভালো ফল করবে। আর তা আরও বিতর্ক বাড়িয়ে তুলেছে। যদিও এই বিষয়ে স্পিকটি নট শাসকদল তৃণমূল। এমনকি বিজেপির তরফেও এই বিষয়ে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবির পরেই দল ছাড়েন মুকুল রায়। একেবারে ছেলেকে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। আর এরপরেই তাঁর বিধায়ক পদ কেন খারিজ হবে না তা নিয়র প্রশ্ন উঠতে থাকে। দলবিরোধী আইন অনুযায়ী মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের আবেদন জানান শুভেন্দু অধিকারী।
আর তা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়। আর এই বিতর্কের মধ্যেই মুকুলকে পিএসসি চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগ করা হয়। যা বিতর্ককে আরও বাড়িয়ে তোলে। কীসের ভিত্তিতে পিএসসি চেয়ারম্যান করা হল তাঁকে তা নিয়েও বিজেপির তরফে প্রশ্ন তলা হয়। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ বিধানসভার অধ্যক্ষ করেননি। ফলে মামলা গড়ায় আদালতে।
মুকুল রায় ইস্যুতে একের পির এক মামলা হয়। সম্প্রতি একটি মামলায় বিধানসভার অধ্যক্ষকে দ্রুত মুকুল রায় ইস্যুতে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়। সেই মতো আজ শুক্রবার বিধানসভা শুনানি হয়। সেখানেই কার্যত আইনজীবী মারফৎ বিস্ফোরক দাবি করেন মুকুল রায়। শুনানিতে আইনজীবী মারফৎ মুকুল জানান, আমি কখনই তৃণমূলে যোগ দিইনি। বিজেপিতেই আছি। আর এহেন দাবি ঘিরেই সরগরম রাজ্য রাজনীতি।
উল্লেখ্য, মুকুল রায়ের এহেন দাবি নতুন কিছু নয়। একাধিক সময়ে নিজেকে বিজেপির সদস্য হিসাবেই দাবি করেছেন। তাঁর এহেন দাবি ঘিরে বিভ্রান্ত তৈরি হয় রাজনৈতিকমহলে। তিনি সুস্থ অবস্থায় বলছেন নাকি অসুস্থ অবস্থায় তা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেও অস্বস্তি তৈরি হয়। যদিও গত কয়েকমাস আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মুকুল অসুস্থ। ওর চিকিৎসা চলছে। এরপর কার্যত দীর্ঘদিন আর সেভাবে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি মুকুল রায়কে।
আজ শুক্রবার বীরভূমে যান মুকুল। সেখানেও কার্যত তাঁর বক্তব্যে অস্বস্তিতে তৃণমূল শিবির।