সাজা পেয়ে জেলে গিয়েও ২০১৭-য় বারবার শিরোনামে এসেছেন শশীকলা
জে জয়ললিতা গতবছরের ডিসেম্বরে প্রয়াত হওয়ার পর থেকেই খবরে ছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী শশীকলা নটরাজন।
জে জয়ললিতা গতবছরের ডিসেম্বরে প্রয়াত হওয়ার পর থেকেই খবরে ছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী শশীকলা নটরাজন। জয়ার মৃত্যুর পরে তাঁর পয়েজ গার্ডেনের বাড়ি দখল করেন তিনি। সঙ্গে দলের নেতৃত্বেও জাঁকিয়ে বসেন। মুখ্যমন্ত্রী হতে গিয়েছিলেন তবে পারেননি। তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল সি বিদ্যাসাগর রাও সাংবিধানিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে বিলম্ব করছিলেন। কারণ ওদিকে সুপ্রিম কোর্টে আয় বহির্ভূত সম্পত্তি মামলায় শশীকলার রায় অপেক্ষা করে ছিল।
দোষী শশীকলা
আদালতের রায় বেরোনোর পর দেখা গেল, আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন শশীকলা নটরাজন। আদালত চার বছরের জন্য কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। সঙ্গে ১০ কোটি টাকা জরিমানাও করা হয়।
[আরও পড়ুন:মহিলা ক্রিকেটকে সম্মান জানাতে নজির বিহীণ পদক্ষেপ আইসিসি-র, ইতিহাসে মিতালী-একতারা]
প্রভাব খাটিয়ে দলের মাথায়
শশীকলা নিজের প্রভাব খাটিয়ে ও পন্নিরসেলবমকে সরিয়ে এআইএডিএমকের সাধারণ সম্পাদক বনে যান। দলের নিয়মে রয়েছে, যিনি সাধারণ সম্পাদক হবেন, তিনি দল ক্ষমতায় থাকলে মুখ্যমন্ত্রীও হবেন। সেই চালটাই চেলেছিলেন শশীকলা। তবে আদালতের রায়ে সব ভেস্তে যায়।
[আরও পড়ুন:সন্ন্যাসী থেকে মুখ্যমন্ত্রী, ২০১৭ সাল উত্তরপ্রদেশের যোগীর বছর]
বিধায়কদের বন্দি
তার আগে বেশ কয়েকদিন তার পক্ষের বিধায়কদের গোপন জায়গায় নিয়ে গিয়ে একজোট করে আটকে রাখেন শশীকলা যাতে কেউ অন্য দলে যোগ না দেয় ও বিধানসভায় তাঁর আনা প্রস্তাবে সম্মত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাকে সমর্থন করে।
তামিলনাড়ুতে রাজনৈতিক সঙ্কট
তবে আদালতের রায়ে শেষপর্যন্ত জেলে যেতে হয় শশীকলাকে। তার আগে তিনি ই পলানিস্বামীকে মুখ্যমন্ত্রী করে দিয়ে যান। যা নিয়ে ফের রাজনৈতিক সঙ্কট শুরু হয় তামিলনাড়ুতে। পলানিস্বামী ও পন্নিরসেলবম গোষ্ঠী একে অপরের বিরুদ্ধে বিষোদ্বগার করেন। যদিও অবশেষে এক হয়ে যান পন্নিরসেলবম ও পলানিস্বামী।
জেলে গিয়ে ঘুষকাণ্ডে জড়ানো
বেঙ্গালুরুর জেলে বন্দি শশীকলা নটরাজন ২ কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে জেলের ভিতরে এলাহী আয়োজন করেছেন। এই খবর প্রকাশ্যে আসেন কর্ণাটকের ডিআইজি (কারা) ডি রূপা। সেই নিয়ে ব্যাপক হইচই হয়। অবশেষে রূপাকেই সরিয়ে দেওয়া হয় পদ থেকে।
আয়কর হানা
শশীকলার ও তাঁর পরিবারের লোকজনদের বাড়িতে নভেম্বরে আয়কর হানা দিয়ে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি বেনামী সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে আয়কর দফতর। ভাইপো টিটিভি দিনাকরণের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। এমনকী এই ঘটনায় জেলবন্দি শশীকলাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
শেষবেলায় হার
শেষপর্যন্ত বছর শেষে এসে দলীয় প্রতীক যুদ্ধেও হার হয়েছে শশীকলা নটরাজন ও তাঁর ভাইপো টিটিভি দিনাকরণের। এআইএডিএমকের প্রতীক চিহ্ন দুটি পাতার অধিকার বাজেয়াপ্ত করেছিল নির্বাচন কমিশন। পরে তা পলানিস্বামী ও পন্নিরসেলবম গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এআইএডিএমকের আসল প্রতিনিধি তাঁরাই। শশীকলা বা দিনাকরণের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। ফলে সবমিলিয়ে জেলে গিয়েও সারাবছর খবরে থেকেছেন শশীকলা।