‘জঙ্গলমহলের মা’-এর ডাক এল না, ‘মা-মেয়ে’র বিচ্ছেদে ‘মুক্ত’ ভারতীকে নিয়ে জল্পনা
যাঁকে ‘জঙ্গলমহলের মা’ বলে সম্বোধন করেছিলেন ভারতী ঘোষ, সেই ‘মা’-এর ডাক আর এল না। বিচ্ছেদ সম্পূর্ণ হল ‘মা-মেয়ে’র।
পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপার আইপিএস ভারতী ঘোষকে মুক্ত করে দিল রাজ্য সরকার। মঙ্গলবারই তাঁর ইস্তফাপত্র সরকারিভাবে গ্রহণ করল রাজ্য। সেইসঙ্গে ছিন্ন হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। যাঁকে 'জঙ্গলমহলের মা' বলে সম্বোধন করেছিলেন ভারতী ঘোষ, সেই 'মা'-এর ডাক আর এল না। বিচ্ছেদ সম্পূর্ণ হল 'মা-মেয়ে'র।
সবং ভোটের পরই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন একদা মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ আইপিএস ভারতী ঘোষ। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, গোপনে তিনি বিজেপিকে সাহায্যে করেছেন। মমতার পাশাপাশি তিনি মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ পুলিশ অফিসার হিসেবেও বিশেষ পরিচিত ছিলেন রাজনৈতিক মহলে। সবং-ভোটে সেই সুবিধা নিয়েই ভোট বাড়িয়েছে বিজেপি। এমন অভিযোগ ওঠে ভারতী ঘোষের বিরুদ্ধে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, এই কারণেই কম গুরুত্বপূর্ণ পদে বদলি করে দেওয়া হয় পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষকে। তারপরই তিনি তিনমাসের ছুটির আবেদন করেন এবং ইস্তফাপত্রও পাঠিয়ে দেন রাজ্য পুলিশের ডিজি-র কাছে। এতদিন বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখলেও, মঙ্গলবার ইস্তফাপত্র গ্রহণ করে রাজ্য সরকার। ফলে এখন মুক্ত আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষ।
ভারতী ঘোষ ইস্তফা দেওয়ার পরই তাঁরে বিজেপি-যোগের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা চলতে তাকে। এমনকী তিনি দিলীপ ঘোষ ও মুকুল রায়কে চিঠি দিয়ে বিজেপিতে যোগদানের ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন বলেও রটনা হয়। তবে বিজেপি বা ভারতীদেবীর পক্ষে এই চিঠির সত্যতা স্বীকার করা হয়নি। তাঁর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা উড়িয়ে দেন মুকুল রায়-দিলীপ ঘোষরা।
এখন রাজ্য সরকার তাণর ইস্তফা গ্রহণ করার পর ভারতীদেবী কী করেন, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক মহল। এমনও রটনা হয়েছিল ভারতী দেবীকে বিজেপি উলুবেড়িয়ায় প্রার্থী করা হতে পারে বিজেপির টিকিটে। তারপর বিজেপির প্রার্থী হিসেবে নাম উঠে আসে ইশরাত জাহান ও তাঁর আইনজীবী নাজিয়া ইলাহি খানেরও। বিজেপি বিষয়টি এখনও ঝুলিয়ে রেখে দিয়ে, রহস্যের সৃষ্টি করছে।
বিজেপি সূত্রে জানানো হয়েছে, আমাদের দল সর্বভারতীয়। এখানে জাতীয় নেতৃত্বের অনুমোদন প্রয়োজন হয় সাংসদ পদপ্রার্থী হতে গেলে। সেই কারণেই দেরি হচ্ছে প্রার্থীর নাম প্রকাশে। দিল্লি থেকে অনুমোদন করে দেওয়ার পরই আমরা জানিয়ে দেব কে হতে চলেছেন রাজ্যের দুই কেন্দ্রের উপনির্বীচনে বিজেপি প্রার্থী।
এদিন ভারতী ঘোষের ইস্তফা পত্র গ্রহণ করার পর এমন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে যে, রাজ্য তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত আরও জোরদার করতে পারে। গত সপ্তাহে স্বেচ্ছাবসরের ইচ্ছাপ্রকাশ করে চিঠি দিতেই কিছু অনিয়মের অভিযোগে ভারতীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা হয়। সেই তদন্তের প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। ফলে আইপিএস ভারতী ঘোষকে জেরার সম্ভাবনাও থাকছে।