করোনা সঙ্কটে দেশের জন্য সুখবর, স্মার্টফোন উৎপাদনের বড় অংশ ভারতে সরাতে ইচ্ছুক স্যামসাং
করোনা সঙ্কটে দেশের জন্য সুখবর, স্মার্টফোন উৎপাদনের বড় অংশ ভারতে সরাতে ইচ্ছুক স্যামসাং
ভিয়েতনাম ও অন্যান্য দেশ থেকে স্মার্টফোন উৎপাদনের একটি বড় অংশ ভারতে সরিয়ে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং ফোন সংস্থা। ভারতে ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের (৩ লক্ষ কোটি) উৎপাদনের চূড়ান্ত পরিকল্পনা রয়েছে স্যাংমসাংয়ের। এই বিষয়ের সঙ্গে জড়িত এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন এই তথ্য।
পিএলআই প্রকল্পের আওতায় উৎপাদন
ওই কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, ‘স্যামসাং পিএলআই (প্রোডাকশন লিংকড ইনসেন্টিভ) প্রকল্পের আওতায় ভারতে স্মার্টফোন তৈরির জন্য তার উৎপাদনে বৈচিত্র্য আনতে পারে এবং এটি ভিয়েতনামের মতো বিভিন্ন দেশ জুড়ে এর বিদ্যমান সক্ষমতাগুলিতে প্রভাব ফেলবে।' প্রসঙ্গত চিনের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ স্মার্টফোন রপ্তানিতে নাম রয়েছে ভিয়েতনামের।
ভারত সরকারের কাছে রিপোর্ট পেশ স্যামসাংয়ের
এই বিষয় সম্পর্কে অবগত ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, স্যামসাং ইতিমধ্যেই আগামী পাঁচ বছরে ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের (পিএলআই স্কিমের অন্তর্গত) বেশি অর্থের স্মার্টফোন উৎপাদনের পরিসংখ্যান দিয়ে ভারত সরকারের কাছে রিপোর্ট পেশ করেছে। এক শীর্ষ সরকারি আধিকারিক এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, এর মধ্যে ২০০ ডলারেরও বেশি দামের ফ্যাক্টরির ফোনগুলি ২৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি হতে পারে। এই বিভাগে উৎপাদিত বেশিরভাগ ফোন রপ্তানি হবে।
লাভ ভারতের
সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে স্যামসাংয়ের এই পদক্ষেপ ভারতকে অনেক ক্ষেত্রেই সহায়তা করবে। করোনা আবহে কর্মসংস্থান হারিয়েছেন বিশাল সংখ্যক মানুষ। জিডিপি ঠেকেছে তলানিতে। এই পরিস্থিতিতে এ ধরনের সিদ্ধান্ত দেশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় মোবাইল উৎপাদন ইউনিট রয়েছে নয়ডাতে, যেখান থেকে অন্যান্য বাজারে রপ্তানি হয় স্মার্টফোন। ভিয়েতনামে সংস্থা সম্প্রতি ৫০ শতাংশ ফোন তৈরি করেছে। এটি দক্ষিণ কোরিয়ায় উৎপাদন বন্ধের প্রক্রিয়াধীন, যেখানে শ্রমের ব্যয় বেশি এছাড়াও স্যামসাংয়ের ব্রাজিল এবং ইন্দোনেশিয়াতেও উৎপাদন ঘাঁটি আছে।
ভারতে উৎপাদন করতে আগ্রহী অ্যাপেল সহ বহু সংস্থা
স্যামসাংয়ের এই পদক্ষেপের ফলস্বরূপ অ্যাপেলও ভারতে তাদের উৎপাদন ঘাঁটি তৈরি করতে চাইছে। বিশ্বব্যাপী যাদের স্মার্টফোন রপ্তানির বাজার প্রায় ২৭০ বিলিয়ন ডলার। মান অনুসারে অ্যাপেলের ৩৮ শতাংশ মার্কেটে শেয়ার রয়েছে এবং স্যামসাংয়ের ২২ শতাংশ। ভলিউম অনুসারে স্যামসাংয়ের ২০ শতাংশ ও অ্যাপেলের ১৪ শতাংশ। কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ জানিয়েছিলেন, ২২টি দেশীয় ও বিদেশি সংস্থা মিলে আগামী পাঁচ বছরে ১১.৫ লক্ষ কোটি টাকার জিনিস উৎপাদন করবে। যার ফলে ৭ লক্ষ কোটি টাকার বেশি রপ্তানি করতে পারবে বিদেশে। একটি সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ভারতে পা রেখেছে অ্যাপেলের প্রস্তুতকারী সংস্থা। আসতে চলেছে আরও কয়েকটি সংস্থা। তাদের মধ্যে রয়েছে স্যামসাং, উইশট্রন, প্যাগাট্রন, ফক্সকনের মতো প্রথমসারির সংস্থা। করোনা আবহে বিশ্বের বহু দেশ এবং সংস্থা ভারতের বাজারে ঢুকে পড়তে চাইছে। তাদেরকে টেনে আনতে বেশকিছু স্কিম রাখছে কেন্দ্র।