'নিকা হালাল'-এর শিকার! স্বামী-শ্বশুরের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের মামলা উত্তরপ্রদেশে
উত্তরপ্রদেশের এক মহিলা অভিযোগ করেছেন, জোর করে তাঁর উপর নিকাহ হালাল প্রথা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তাঁকে তাঁর শ্বশুর এবং স্বামী মিলে গণধর্ষণ করেছে।
মুসলিম সমাজে প্রচলিত 'নিকা হালাল' প্রথা তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে মোদী সরকার। আর এর মধ্যেই উত্তরপ্রদেশের সম্ভলের এক মহিলা, তাঁর উপর জোর করে 'নিকা হালাল' প্রথা চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করলেন। জানালেন , তাঁকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয় তাঁর শ্বশুরের সঙ্গে। তারপর তাঁকে ধর্ষণ করেন শ্বশুর। পুলিশ তাঁর স্বামী, শ্বশুর সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
নিকা হালাল প্রথা অনুযায়ী তালাক বা বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর প্রাক্তন স্বামী স্ত্রীকে সরাসরি পুনর্বিবাহ করতে পারেন না। ওই মহিলাকে অন্য কোনও পুরিষকে বিয়ে করে, তাঁর শয্যাসঙ্গিনী হতে হয়, তারপর তার কাছ থেকে তালাক নিলে তবেই আবার প্রাক্তন স্বামী-স্ত্রী পুনর্বিবাহ করতে পারে।
কিন্তু এক্ষেত্রে স্বামীর সঙ্গে ওই মহিলার আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ ঘটেনি বলে জানা গিয়েছে। বেরিলি জোনের পুলিশের এডিজি প্রেম প্রকাশ জানিয়েছএন, ওই মহিলা মোরাদাবাদ জেলার বাসিন্দা। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে নাখাসা তানার তুরতিপুরের এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর বিবাহ হয়।
একবছর যেতে না যেতেই মহিলাকে শ্বশুর বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর শ্বশুর বাড়ির বিরুদ্ধে মামলাও করেন তিনি। কিন্তু ২০১৬-র ডিসেম্বরে দুই পক্ষের মধ্যে মিটমাট হয়ে যায়। তিনি শ্বশুর বাড়িতে ফিরে গিয়েছিলেন।
কিন্তু ফেরার পরই তাঁর উপর অত্যাচার চরমে ওঠে। তিনি অভিয়োগ করেছেন, স্বামী, শ্বশুর, স্বামীর কাকা ও দুই ইমাম তাঁকে জানান দীর্ঘদিন তিনি বাড়ির বাইরে ছিলেন, তাই তাণকে নিকা হালাল করতে হবে। তিনি প্রতিবাদ করলে তাঁকে জোর করে শ্বশুরের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে একটি ঘরে বন্দী করে রাখা হয়।
সারা রাত ধরে শ্বশুর তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই মহিলা। ভোরে তাঁকে তালাক দেয় শ্বশুর। কিন্তু এখানেই অত্যাচার থামেনি। এরপরই আবার স্বামী সেই ঘরে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করে বলে জানিয়েছেন মহিলা। এর কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়েন।
২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে সন্তানের জন্ম দিতে তিনি বাপের বাড়িতে ফিরে যান। এরপর আর তিনি শ্বশুর বাড়িতে ফেরেননি। জেলার ডিএম-এর কাছে এবিষয়ে একটি অভিযোগ করেন। কিন্তু তিনি জানিয়েছেন, তারপরই তাঁকে ও তাঁর বাড়ির লোকেদের শ্বশুর ও স্বামী প্রাণের হুমকি দেওয়া হয়। চলতি মাসের এক তারিখ পুলিশ একটি গণধর্ষণের মামলা রুজু করেছে। এবিষয়ে তদন্ত চলছে।