কালই জামিন? জেলের অঙ্কেই মুক্ত হতে পারেন কুণাল ঘোষ, আভাস বিচারপতির
কলকাতা, ৪ অক্টোবর : এর আগে বারবার তিনি বিচারপতির সামনে করজোড়ে প্রার্থনা করেছেন জামিনের। যুক্তি খাড়া করেছেন, কোন যুক্তিতে তাঁর জামিন পাওয়া উচিত। তবু জামিন অধরা থেকেছে। এবার সেই বহু প্রতীক্ষিত জামিন হয়তো পেতে চলেছেন কুণাল ঘোষ স্রেফ জেল-পাটিগণিতের জোরে।
বুধবারই জামিন পেতে পারেন সারদাকাণ্ডে তৃণমূলের সাসপেন্ডেড সাংসদ কুণাল ঘোষ। জামিন মিললে প্রায় তিন বছর পর তিনি জেল থেকে বেরবেন। দু-দু'টো শারদোৎসব জেলে বসে কাটানোর পর অন্তত এবার পুজো তাঁর কাটতে জেলের বাইরে কাটতে চলেছে। হাইকোর্টের বিচারপতি অসীমকুমার রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবারই স্পষ্ট করে দিয়েছে এই জামিন-বার্তা। কুণাল ঘোষকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিতে সিবিআইকে শর্ত আরোপ করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০১৩ সালের ২৩ নভেম্বর সারদাকাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। তারপর থেকে একটার পর একটা মামলায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। এরই মধ্যে বারবার মুখ খুলে তিনি বিপাকে পড়েছেন। তার জামিন আটকাতে এবং তাঁর মুখ বন্ধ করতে বহু তৎপরতা দেখানো হয়েছে। কখনও তিনি নিজে সওয়াল করেছেন, যুক্তি সাজিয়েছেন কেন তাঁর জামিন পাওয়া উচিত। যুক্তি দিয়েছেন তাঁকে জোর করে জেলে আটকে রাখা হয়েছে। এবার স্বয়ং বিচারপতিই তাঁর জামিনের সওয়াল করলেন।
এখন কুণাল ঘোষের জামিনে মুক্তির স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অসীমকুমার রায় বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নিয়ম অনুযায়ী সর্বোচ্চ তিন বছর সাজাপ্রাপ্ত হতে পারেন একজন দোষীসাব্যস্ত অপরাধী। অর্থাৎ সাজা হতে পারে সর্বোচ্চ ৩৬ মাস। তার মধ্যে বছরে ৪৫ দিন হিসেবে তাঁর ছুটি প্রাপ্য চার মাস ১৫ দিন। অর্থাৎ তাঁকে সর্বোচ্চ জেল খাটতে হবে ৩১ মাস ১৫ দিন। কিন্তু আজ পর্যন্ত কুণাল ঘোষ জেল খেটেছেন ৩৪ মাস ১১ দিন। প্রায় তিন মাস জেল তিনি বেশি খেটেছেন।
ফৌজদারি আইন অনুযায়ী এমনিতেই টানা দেড় বছর জেলে থাকলে জামিন দিতে বাধ্য আদালত। অতএব বিচারপতি এদিন জানিয়ে দেন, আগামীকালই শর্ত সাপেক্ষে তাঁকে জামিন দিতে হবে। কী শর্ত আরোপ করা হবে জানাক সিবিআই। কালই বিচারপতি অসীমকুমার রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ কুণাল ঘোষের জামিন মামলার রায় দান করবে। সেখানেই সিবিআই শর্ত আরোপ করবে। তারপরই জামিন মামলার রায় শোনাবেন বিচারপতি।