ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না গুজরাতে, এটাই উন্নয়নের মডেল: অরবিন্দ কেজরিওয়াল
কর্নাটকে এটাই প্রথম নির্বাচনী জনসভা ছিল আম আদমি পার্টি সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়ালের। প্রথমেই তিনি বলেন, গুজরাত মডেলের বিস্তর প্রশংসা হচ্ছে দেশে। নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হলে সেই মডেল প্রয়োগ করবেন সারা দেশে। তাতে সর্বনাশ হবে ভারতের। কেন? সেই ব্যাখ্যাও দেন তিনি।
বলেছেন, "গুজরাত দুর্নীতিতে ভরে গিয়েছে। টাকা না দিলে কোনও কাজ হয় না। ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে গেলে পাঁচ হাজার টাকা দিতে হয়। পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি পেতে গেলে দিতে হয় দশ লাখ টাকা। আমাকে গুজরাতের একজন শিল্পপতি বলেছেন, তিন বছর ধরে ঘুরে তিনি নতুন কারখানার লাইসেন্স পাননি। শেষে কয়েক লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে চার দিনেই পেয়ে গিয়েছেন লাইসেন্স। গুজরাতে যেমন সব পরিষেবার দাম বেঁধে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী, প্রধানমন্ত্রী হলে সারা দেশেও তাই করবেন।"
সম্প্রতি গুজরাত সফরে গিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন তিনি। তাঁকে পুলিশ আটকে দেয়। এ প্রসঙ্গে অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, "পুলিশ বলল, আপনি আগে থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করেননি। তাই দেখা করতে পারবেন না। বেশ, বুঝলাম। কিন্তু অ্যাপয়েন্টমেন্ট না থাকলে আমাকে সচিবালয়ে আটকাতে পারত। পাঁচ কিলোমিটার আগে আটকে দিল কেন? এত ভয় কেন আপনার, মিস্টার নরেন্দ্র মোদী?"
তিনি আরও বলেন, "গুজরাতে জোর করে কৃষকদের জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। দামটুকু পর্যন্ত দেয় না। একজন কৃষক আমাকে বললেন, তাঁর ৫০ একর জমি ছিল। প্রথমে গুন্ডা এসে ভয় দেখাল, তার পর পুলিশ। জমি দিতেই হল। কে নিল? মুকেশ আম্বানি। কেন নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ওঁর এত দহরম-মহরম? আগে গুজরাতের কৃষকরা ভর্তুকি পেতেন। এখন পান না। কার কথায় মোদীজি ভর্তুকি বন্ধ করলেন? গুজরাতে কৃষিতে বিকাশ নেতিবাচক হওয়া সত্ত্বেও কেন আপনি বলছেন ১১ শতাংশ হারে বৃদ্ধি হয়েছে? মজার ব্যাপার, মিডিয়া এ সব দেখায় না। আমি দিল্লিতে কটা কামরাওয়ালা ফ্ল্যাট নিলাম, সেটাই দেখায়। নরেন্দ্র মোদীর রাজত্বে ৮০০ কৃষক আত্মঘাতী হয়েছে। মিডিয়াকে বলছি, সৎ সাহস থাকলে গুজরাতের আসল ছবি দেখান।"
নরেন্দ্র মোদীকে রাহুল গান্ধী, রবার্ট ভদরার সঙ্গে তুলনা করে বলেন, "আপনি গুজরাতে জোর করে কৃষকদের জমি কাড়ছেন, দুর্নীতি করছেন। দিল্লি, হরিয়ানায় একই জিনিস করছেন রাহুল গান্ধী, রবার্ট ভদরা।"
অরবিন্দ কেজরিওয়ালের অভিযোগ, ইয়েদুরাপ্পা, বি এস শ্রীরামুলুর মতো দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের বিজেপি টিকিট দিয়েছে। কী স্বার্থ আছে এর পিছনে, খুঁজে দেখতে হবে। কর্নাটকে বিজেপি সরকার যা করেছিল, ক্ষমতায় এসে একইভাবে চুরি করছে কংগ্রেস।
জনগণের উদ্দেশে তাঁর আবেদন, দুর্নীতিগ্রস্ত বিজেপি এবং কংগ্রেসকে ছুড়ে ফেলুন। পাঁচ বছর একটু অন্যভাবে ভাবুন। তা হলে দেখবেন, ভারত আবার 'সোনার দেশ' হয়ে উঠবে। লোকসভা ভোটে নতুন আশা নিয়ে ভোট দিন। পরিবর্তন আনুন।