ফিফার নির্বাসন এড়াতে কী জরুরি ছিল? কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে ভারতীয় ফুটবল?
তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতির কারণ দেখিয়ে ভারতীয় ফুটবলকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে ফিফা। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে কেন্দ্রীয় যুবকল্যাণ ও ক্রীড়া মন্ত্রককে জানিয়েছে, এই নির্বাসন তোলার ব্যাপারে অবিলম্বে পদক্ষেপ করতে। যদিও সময় যত এগোচ্ছে ততই স্পষ্ট হচ্ছে, ফিফার নির্দেশগুলি মানলে এই পরিস্থিতি এড়ানো যেত। নির্বাসিত হওয়ার দায়ভার নিয়ে চলছে চাপানউতোর।
ফিফাকে গুরুত্ব না দেওয়াই কাল
ফিফা যে এআইএফএফকে নির্বাসিত করতে চলেছে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের পদক্ষেপেই। শীর্ষ আদালতে যে খসড়া সংবিধান জমা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত প্রশাসকমণ্ডলী, তাতে ইলেক্টোরাল কলেজে ৫০ শতাংশ প্রাক্তন ফুটবলার রাখার উল্লেখ ছিল। ৩৬ জন প্রাক্তন ফুটবলারকে ভোটাধিকার প্রদানের কথাও উল্লিখিত ছিল। এরপর সুপ্রিম কোর্টের সবুজ সঙ্কেত পেয়ে প্রশাসকমণ্ডলী নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেয়। ২৮ অগাস্ট সেই নির্বাচন হওয়ার কথা। যদিও প্রাক্তন ফুটবলারদের সংখ্যা বৃদ্ধি থেকে ভোটাধিকার প্রদানের এই শর্তেই আপত্তি আসে ফিফার তরফে। যদিও তাতে আমল দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। খসড়া সংবিধানে সংশোধন এনে এই বিষয়টি বাদ দেওয়ার কথা বলা হয়, নিদেনপক্ষে ৫০ শতাংশের পরিবর্তে তা ২৫ শতাংশ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরও কোন কমিউনিকেশন গ্যাপে সেটি করা হলো না তা নিয়ে ঘনাচ্ছে রহস্য।
খসড়ায় বদল আসন্ন
ফিফা ভারতীয় ফুটবলকে নির্বাসিত করার পর কেন্দ্রীয় যুবকল্যাণ ও ক্রীড়া মন্ত্রক ওই ৩৬ ফুটবলারকে ইলেক্টোরাল কলেজে রাখার বিষয়টি প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়। প্রশাসকমণ্ডলীর সঙ্গে ফিফার সঙ্গেও আলোচনা চলছে কেন্দ্রীয় যুবকল্যাণ ও ক্রীড়া মন্ত্রকের। গতকাল এই সংক্রান্ত শুনানি জরুরি ভিত্তিতে হয় সুপ্রিম কোর্টে। ক্রীড়া মন্ত্রকের তরফে সময় চেয়ে নেওয়া হয়েছে। সোমবার পরবর্তী শুনানি। যেটা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হচ্ছে সেটি হলো, সুপ্রিম কোর্ট ২০১৭ সালে এসওয়াই কুরেশি, ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়কে এআইএফএফের খসড়া সংবিধান তৈরির যে নির্দেশ দিয়েছিল তার পর থেকেই পরিস্থিতি জটিল হতে থাকে। ২০২০ সালে খামবন্দি অবস্থায় ওই খসড়া সংবিধান জমা পড়ে শীর্ষ আদালতে। তৎকালীন সভাপতি প্রফুল প্যাটেলের মেয়াদ শেষ হয়েছিল ২০২০ সালের ডিসেম্বরে। তারপরও আদালতের দোহাই দিয়ে নিজের পদ আঁকড়ে ছিলেন প্রফুল প্যাটেল। এরপর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তিনি অপসারিত হন, এআইএফএফে সংবিধান চূড়ান্ত করা ও নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি তৈরির ভার দেওয়া হয় তিন সদস্যের প্রশাসকমণ্ডলীর হাতে।
ঘুম ভাঙল দেরিতে
তবে ফিফা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে কী কী করলে নির্বাসন উঠে যাবে। নির্বাচন নতুন নিয়মে হবে, নাকি পুরানো নিয়মে হবে তা নির্ভর করবে সোমবারের শুনানির উপর। কিন্তু আপাতত প্রশাসকমণ্ডলীর পরিকল্পনামতো যে নির্বাচনের দিন ও মনোনয়ন জমা করার দিন ধার্য রয়েছে সেইমতোই সকলে ঘুঁটি সাজাচ্ছেন। এরই মধ্যে ফিফার সঙ্গে কথা চালাচ্ছে দেশের ক্রীড়া মন্ত্রক। নির্বাচনের বিষয়ে খসড়ায় পরিবর্তন আনা হতে পারে বলে সূত্রের খবর। জানা যাচ্ছে, ফিফার সঙ্গে আলোচনায় ঠিক হয়েছে ২৩ জনের কার্যকরী কমিটিতে থাকতে পারবেন ৬ ফুটবলার। কার্যকরী কমিটিতে থাকলেও যাঁদের ভোটাধিকার থাকবে না। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, নির্বাসিত হওয়ার পর যেভাবে ফিফার নির্দেশকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, সেটা আগে করলে নির্বাসনের লজ্জার মুখে পড়তে হতো না ভারতীয় ফুটবলকে।
নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছে
এআইএফএফ সভাপতি পদে কারা মনোনয়ন জমা দেবেন তা নিয়ে জল্পনা অব্যাহত। ভাইচুং ভুটিয়ার মনোনয়ন জমা দেওয়ার বিষয়টি পাকা বলেই সূত্রের খবর। কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রকের সায় কল্যাণ চৌবের দিকে রয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে। তিনিও মনোনয়ন জমা দেবেন বলে জানা গিয়েছে। সিওএ-র তরফে নির্বাচন সংক্রান্ত খসড়ায় জানানো হয়েছিল রাজ্য সংস্থার পাশাপাশি প্রাক্তন ফুটবলাররা সভাপতি পদে লড়তে পারবেন। সভাপতি-সহ অন্যান্য বদে মনোনয়ন জমার শেষদিন ধার্য হয়েছিল ১৯ অগাস্ট। তবে সবটাই নির্ভর করছে সুপ্রিম কোর্টে শুনানির উপর।
আইপিএল থেকে অপসারিত হচ্ছেন অনিল কুম্বলে! পাঞ্জাব কিংসে হেড কোচ বদলের হাওয়া