মধ্যপ্রদেশ নিয়ে আদালতে জোড়া ধাক্কা কংগ্রেসের! ক্রমেই প্রশস্ত হচ্ছে বিজেপির রাস্তা
মধ্যপ্রদেশের লড়াই বেশ কয়েকদিন হল গড়িয়েছে আদালতে। সুপ্রিমকোর্টে ফ্লোর টেস্টের দাবি নিয়ে পৌঁছাতেই তার পাল্টা মামলা ঠুকে বিজেপিকে বেগ দিতে ময়দানে নামে কংগ্রেস। এরই মধ্যে সুপ্রিমকোর্টে আজকে বড় ধাক্কা খেল কংগ্রেস। পাশাপাশি অপর এক মামলায় কর্নাট হাইকোর্টেও মুখ পুড়েছে কংগ্রেসের। আর এরই সাথে মধ্যপ্রদেশের ক্ষমতা দখলের পথ আরও মসৃণ হয়ে পড়ল বিজেপির জন্য।
সুপ্রিমকোর্টে ধাক্কা খেল কংগ্রেস
কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের বিজেপি অপহরণ করেছে, এই অভিযোগে সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল কংগ্রেস। তবে এই অভিযোগ ধোপে টিকল না আদালতে। আজ মধ্যপ্রদেশ সংক্রান্ত এক মামলার শুনানি চলাকালীন মধ্যপ্রদেশের অধ্যক্ষ বিধায়কদের ইস্তফা খতিয়ে দেখার জন্য ২ সপ্তাহ সময় চায় আদালতের কাছে। তবে সেই সময় আদালত মঞ্জুর করেনি।
বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগ সুপ্রিম নির্দেশে
মধ্যপ্রদেশের বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের সঙ্গে স্পিকারের যোগ স্থাপনের জন্য বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগের নির্দেশ দিয়ে সুপ্রিমকোর্ট এই বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বলে। এর আগে বিধানসভার অধ্যক্ষ বলেছিলেন, বিক্ষুব্ধ বিধায়করা স্বশরীরে তাঁর সঙ্গে এসে দেখা করলে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হয়ে তবেই তিনি ইস্তফা গ্রহণ করবেন।
কর্নাটক হাইকোর্টে ধাক্কা খান দিগ্বিজয় সিং
এদিকে বুধবার সকালে বেঙ্গালুরুর রামাদা হোটেলের সামনে ধর্নায় বসেন কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং। আর এর জেরেই প্রতিরোধমূলকভাবে দিগ্বিজয়কে পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নেয়। এরপর ছাড়া পেয়ে বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি চেয়ে কর্নাটক হাইকোর্টে এক আবেদন করেছিলেন দিগ্বিজয়। তবে সেই আবেদন নাকচ করে দেয় হাইকোর্ট। এর জেরে আরও এক ধাক্কা খায় কংগ্রেস।
রাজ্যপাল-কংগ্রেস তরজা
মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল লালাজি ট্যান্ডনের নির্দেশে সোমবারই মধ্যপ্রদেশের বিধানসভায় শক্তি পরীক্ষা ছিল মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথের। তবে তাঁর হাতে তো শুধু মাত্র কংগ্রেসের ৯৪ জন বিধায়ক। এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে তিনি সরকার বাঁচাবেন। আস্থা ভোট নিয়ে দোনামনা দেখা যায় কংগ্রেসের অন্দরেও। রাজ্যপালের নির্দেশকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে কংগ্রেস বিধায়করা এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বলেন কমলনাথকেই।
বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের নিয়ে ঘোলাটে পরিস্থিতি
কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়ে একটি ভিডিও বার্তায়। মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস যতই বলুক যে ইস্তফা দেওয়া বিধায়করা তাদের সঙ্গেই আছেন, সেই দাবি যে সত্যি নয় তা প্রমাণ করে দিল একটি ভিডিও বার্তা। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার সঙ্গে কংগ্রস ত্যাগী ২১ বিধায়কের সেই ভিডিও বার্তায় আরও ঘোলাটে হয়ে যায় মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক সমীকরণ। এক ভিডিও বার্তায় বিক্ষুব্ধ বিধায়করা জানিয়ে দিয়েছেন যে এখনও তাঁরা বেঙ্গালুরুতেই রয়েছেন। তাঁদের পূর্ণাঙ্গ সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা হলে তবেই তাঁরা ভোপাল ফিরে যাবেন।
বিধায়কদের ফেরানোর চেষ্টায় ব্যর্থ কংগ্রেস
এর আগে অবশ্য কংগ্রেস দাবি করেছিল পদত্যাগী ২২ জন বিধায়কের মধ্যে ১২ জন বিজেপিতে যেতে চান না। তাঁদের স্পষ্ট দাবি, আমরা মহারাজের সঙ্গে এসেছি, কিন্তু আমরা বিজেপিতে যেতে চাই না। এর ফলে মধ্যপ্রদেশ অঙ্ক বদলাচ্ছে। কংগ্রেস জানায়, এই ১২ বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের বাড়িতে বৈঠকে বসেন। আর এই বৈঠকের পরই পাল্টা চাপে পড়ে বিজেপি। এদিকে বেঙ্গালুরুতে থাকা বিধায়কদের দাবি তাঁরা এখনও সেখানেই আছেন। যা নিয়ে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হতে শুরু করে। কংগ্রেস ক্রমেই জমি হারাতে শুরু করে। আর বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের ফেরাতে শেষ চেষ্টা করলেন দিগ্বিজয়।