ইতিবাচক মমতাকে দেখতে আগ্রহী নয়াদিল্লি ও ঢাকা
কলকাতা, ১৯ ফেব্রুয়ারি: তিস্তা চুক্তি নিয়ে কিছুটা নমনীয়তা দেখাবেন কি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? তাঁর তিন দিনের বাংলাদেশ সফর ঘিরে এটাই এখন সবচেয়ে বড় জল্পনা।
লোকসভা ভোটের আগেও উত্তরবঙ্গে ভোটের প্রচারে গিয়ে তিস্তা চুক্তির বিরুদ্ধেই কথা বলেছিলেন তিনি। তবে সময় ও প্রেক্ষাপট বদলেছে। তাই মমতার এবারের সফর নিয়ে বাড়তি আশায় বুক বাঁধছে ঢাকা।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা পৌঁছনোর কথা মমতার। তাঁর সঙ্গে থাকবেন মন্ত্রিসভার সদস্য সহ ৩৩ জনের প্রতিনিধি দল।
ঢাকা বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানাবেন বাংলাদেশের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার খান। এছাড়াও থাকবেন ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের আধিকারিকরা। কাল অর্থাৎ শুক্রবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই বহু প্রতিক্ষীত তিস্তা সমস্যার জট খোলে কিনা এখন সেদিকেই তাঁকিয়ে ওয়াকিবহাল মহল।
তিস্তার বণ্টন নিয়ে বিরোধিতা করায় গত কয়েকবছরে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক ক্রমেই ঘোলা হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সরকারের। গত বছরের শেষে বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের পর সম্পর্ক একেবারে তলানিতে এসে ঠেকে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মঞ্চকে সামনে রেখে সেই সম্পর্কই চাঙ্গা হয় কিনা সেটাই এখন দেখার।
তিস্তার জলবণ্টনের বিরোধিতা করেই ২০১১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে নির্ধারিত ঢাকা সফর শেষ মুহূর্তে বাতিল করেন মমতা। ঢাকা তখন থেকেই তাঁর প্রতি কিছুটা অসন্তুষ্ট। পরে খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণ এবং জামাতের সঙ্গে তৃণমূল সাংসদের যুক্ত থাকার অভিযোগ সম্পর্ককে একেবারে অম্লমধুর করে তুলেছে। বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মমতা নিজেও। তাই কখনও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের নামে চেয়ার উৎসর্গ করে কখনও বা অন্য কোনও উপলক্ষে সশরীরে মমতা ঢাকা যেতে চেয়েছিলেন বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। কিন্তু কি দিল্লি কি ঢাকা কেউও কোনভাবে ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। এবারের ঢাকা সফর তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও বাড়তি তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।
মমতা যে পুরনো বিবাদ মিটিয়ে ফেলতে আগ্রহী তার ইঙ্গিত আগেই পাওয়া গিয়েছিল। কিছুদিন আগে ছিটমহল হস্তান্তর নিয়ে আপত্তি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তিনি। ফলে এবারের সফর ঘিরে ঢাকার পাশাপাশি নয়াদিল্লিও মমতার কাছে ইতিবাচক কিছুই আশা করছে।