উৎসবের মরশুম শুরু, আসুন দেখে নিই ১৪ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর কি কি পুজো–ব্রত রয়েছে
১৪ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর কি কি পুজো–ব্রত রয়েছে
করোনা আবহের মধ্যেই দেশে উৎসবের মরশুম শুরু হয়ে গিয়েছে। ১০ সেপ্টেম্বর থেকে দেশজুড়ে চলছে গণেশ উৎসব, যা শেষ হবে ১৯ সেপ্টেম্বরে। এরপরেই রয়েছে দুর্গোৎসব। এক কথায় বলা চলে সেপ্টেম্বর মাস থেকেই দেশে উৎসবের আবহে মেতে উঠেছে সবাই। আসুন দেখে নিই ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশজুড়ে কি কি পুজো–ব্রত রয়েছে।
১৪ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার)
এইদিন রয়েছে অনেক ব্রত। এদিন ভাদ্রপদ শুক্ল অষ্টমী মধ্যাহ্ন ১টা ১০ মিনিটের পরে নবমী তিথি। এদিন রয়েছে শ্রী দুর্গাষ্টমী ব্রত, শ্রী রাধাষ্টমী ব্রত, দুর্বাষ্টমী। এছাড়াও মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে ১৬ দিনের মহালক্ষ্মী ব্রত। এর পাশপাশি মঙ্গলবার মহর্ষি দধীচি জয়ন্তীও রয়েছে।
১৫ সেপ্টেম্বর (বুধবার)
ভাদ্র শুক্ল নবমী সকাল ১১টা ১৮ পর্যন্ত থাকর পর দশমী পড়ে যাচ্ছে। এদিন শ্রীচন্দ্র নবমী রয়েছে, অদুঃখ নবমী ও দশাবতার দশমী ব্রত রয়েছে। দশাবতার দশমী ব্রত হিন্দুদের ইশ্বর বিষ্ণুর দশ অবতারকে উৎসর্গ করা হয়। উত্তর ভারতে এই ব্রতের চল বিশেষ করে রয়েছে। এইদিন শ্রী হরি বিষ্ণুর দশ অবতারের পুজো করা হয় বিশেষ রীতি-রেওয়াজের মধ্য দিয়ে। ১০দিন ধরে এই ব্রত চলে।
১৬ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার)
ভাদ্র শুক্ল দশমী সকাল ৯টা ৩৭ মিনিট পর্যন্ত থাকবে তারপর একাদশী শুরু হয়ে যাবে। এদিন আশ্বিন সংক্রান্তি পালন হয়, এর পুণ্যকাল থাকবে পরের দিন সকাল ৭টা ৩৭ মিনিট পর্যন্ত।
১৭ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার)
ভাদ্র শুক্ল একাদশী সকাল ৮টার পর শুরু হবে দ্বাদশী। এদিন রয়েছে পদ্মা একাদশী ব্রত, অনেকে এই একাদশীকে পার্শ্ব পরিবর্তনী বা পরিবর্তনী একাদশী নামেও ডেকে থাকেন। আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষ একাদশী তিথিতে শ্রীভগবান বিষ্ণু ক্ষীর সাগরে শ্বেতদ্বীপে অনন্ত শয্যায় বা যোগনিদ্রায় শয়ন করে নিদ্রিত হন। তাই আষাঢ় শুক্লপক্ষীয় একাদশীটি শয়ন একাদশী নামে খ্যাত। এরপর ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষে একাদশী তিথিতে অনন্তশয্যায় শায়িত ভগবান শ্রীহরি প্বার্শ পরিবর্তন করেন। এসময় তিনি বাম অঙ্গ পরিবর্তন করে দক্ষিণ অঙ্গে শয়ন করেন, তাই এই একাদশীকে পার্শ্ব একাদশী বা পরিবর্তিনী একাদশী বা পদ্মা একাদশীও বলা হয়।
এছাড়াও রয়েছে বামন জয়ন্তী ও বিশ্বকর্মা পুজো। বাংলায় বিশ্বকর্মা পুজোর মাহাত্ম্য অন্যধরনের। বিশ্বকর্মাকে এই পৃথিবীর প্রথম স্থপতিকার হিসাবে মনে করা হয়। তাই সব অফিস-ব্যবসার জায়গা, নির্মাণ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সকলে এই পুজো করে থাকেন।
১৮ সেপ্টেম্বর (শনিবার)
ভাদ্র শুক্ল দ্বাদশী সকাল ৬টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত, ত্রয়োদশী পরবর্তী সূর্যোদয়ের পূর্বে সকাল ৬ টা পর্যন্ত এবং এরপর চতুর্দশী। পঞ্চক প্রারম্ভ শুরু হবে বিকেল ৩টে ২৬ মিনিট থেকে। এদিন রয়েছে শনি প্রদোষ ব্রত। প্রসঙ্গত, প্রতি মাসের শুক্লপক্ষের ত্রয়োদশী তিথিটিকে শাস্ত্রে প্রদোষ ব্রত হিসেবে নির্ধারিত করেছে। প্রদোষ ব্রত নামকরণটির মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে ব্রত উদযাপন এবং পূজার্চনার সময়কালের ইঙ্গিত। প্রদোষ কাল অর্থে সন্ধ্যাকালকে বোঝানো হয়। শাস্ত্রজ্ঞদের মতে সূর্যাস্তের সময় থেকে পরবর্তী ৯০ মিনিট পর্যন্ত প্রদোষকাল বলে গণ্য করা উচিৎ। প্রদোষ ব্রত সপ্তাহের যে কোনও বারে পড়তে পারে। সেই বার অনুযায়ী প্রদোষ ব্রতকে নানা ভাগে করা হয়। এদিন প্রদোষ ব্রত পড়েছে শনিবারে, তাই একে বলা হচ্ছে শনি প্রদোষ ব্রত। এই ব্রততে সন্ধ্যাকালে ওম উমা সহিত শিবায় নমঃ মন্ত্র ১০৮ বার জপ করতে হবে। যথাবিহিত অভিষেকের সঙ্গে শিবের পূজা করতে হবে। ১৮ সেপ্টেম্বর রয়েছে ত্রয়োদশী তিথি ক্ষয়ও।
১৯ সেপ্টেম্বর (রবিবার)
ভাদ্রপাদ শুক্লা চতুর্দশী সূর্যোদয়ের আগে ভোর ৫.২৯ মিনিট পর্যন্ত এর পর পূর্ণিমা। পঞ্চক চলতে থাকবে। এছাড়াও এদিন রয়েছে অনন্ত চতুর্দশী।
২০ সেপ্টেম্বর (সোমবার)
ভাদ্র শুক্ল পূর্ণিমা সূর্যোদয়ের আগে ৫টা ২৫ পর্যন্ত এরপর প্রতিপদ পরে যাচ্ছে। পূবভাদ্রপদ নক্ষত্র যুতা পূর্ণিমা উপবাসে স্নান করার সময়। এদিন রয়েছে মহালয়া। এদিন পিতৃপক্ষের শেষ ও মাতৃপক্ষের সূচনা। মহালয়ার দিন মৃত পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়, তাই গঙ্গায় এদিন বহু লোকের সমাগম হয়। এছাড়াও রয়েছে পূর্ণিমা শ্রাদ্ধ।