প্রতি বছর ১৭ সেপ্টেম্বর হয় বিশ্বকর্মা পুজো, জানেন এর কারণ কি
বিশ্বকর্মা পুজো কেন হয় একই তারিখে
প্রতি বছরই একইদিনে বিশ্বকর্মার পুজো হয়। এ বছরও ১৭ সেপ্টেম্বরই বিশ্বকর্মা পুজো পড়েছে। বিশ্বকর্মা পুজো মানেই পুজোর বাদ্যি বেজে যাওয়া। তবে প্রত্যেক বছরই এই প্রশ্ন আমাদের মনে উঁকিঝুঁকি দেয় যে অন্যান্য পুজো তিথি–নক্ষত্র মেনে হলেও এই বিশ্বকর্মা পুজো কেন প্রত্যেক বছর একই দিনে পালন করা হয়? ভাদ্রমাসের সংক্রান্তির দিন বিশ্বকর্মার পুজা করা হয়।
একই তারিখে হয় বিশ্বকর্মা পুজো
বিদ্যার দেবী সরস্বতী, অর্থের দেবী লক্ষ্মী বা শক্তির দেবী দুর্গা-কালী সবার পুজোরই কোনও বাঁধাধরা তারিখ নেই। কিন্তু শিল্পের দেব বিশ্বকর্মার পুজো মানেই ১৭ সেপ্টেম্বর। ইংরাজি ক্যালেন্ডারে এই দিনটি কেন স্থির তা জানতে একটু পঞ্জিকা উলটে দেখতে হবে। আসলে হিন্দু ধর্মে সব দেব-দেবীর পুজোর তিথি স্থির হয় চাঁদের গতিপ্রকৃতির ওপর নির্ভর করে। এ বিষয়ে চান্দ্র পঞ্জিকা অনুসরণ করা হয়ে থাকে। কিন্তু বিশ্বকর্মার পুজোর তিথি স্থির হয় সূর্যের গতিপ্রকৃতির উপর ভিত্তি করে।
সূর্য সিংহ থেকে কন্যা রাশিতে প্রবেশ করে
যখন সূর্য সিংহ রাশি থেকে কন্যা রাশিতে গমন করে, তখনই সময় আসে উত্তরায়ণের। দেবতারা নিদ্রা থেকে জেগে ওঠেন এবং শুরু হয় বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন। হিন্দু পঞ্জিকার দুই প্রধান শাখা সূর্যসিদ্ধান্ত এবং বিশুদ্ধসিদ্ধান্ত- উভয়েই এ বিষয়ে একমত। আসলে বিশ্বকর্মার পুজো দিন ভাদ্র মাসের শেষ তারিখে নির্ধারিত। এই ভাদ্র সংক্রান্তির আগে বাংলা পঞ্জিকায় পাঁচটি মাসের উল্লেখ মেলে। এই পাঁচটি মাসের দিন সংখ্যাও প্রায় বাঁধাধরাই- সাকুল্যে ১৫৬টি দিন! এই নিয়ম ধরে বিশ্বকর্মা পুজোর যে বাংলা পঞ্জিকা মতে তারিখটি বেরোয়, তা ইংরেজি ক্যালেন্ডারের ১৭ সেপ্টেম্বরেই পড়ে। কোনও কোনও বছরে এই পাঁচ মাসের মধ্যে কোনওটা যদি ২৯ বা ৩২ দিনের হয়, একমাত্র তখনই বিশ্বকর্মা পুজোর দিন পিছিয়ে বা এগিয়ে যায়। তবে তা খুবই ব্যতিক্রমী ঘটনা।
এ বছরও ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পুজো
এ বছরও ১৭ সেপ্টেম্বরই বিশ্বকর্মা পুজোর দিন নির্ধারণ হয়েছে। সূর্য নিয়ম মেনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন কন্যা রাশিতে। আকাশে ইতিমধ্যেই রঙীন ঘুড়ি ভিড় জড়ো হয়েছে, যা জানান দিচ্ছে বিশ্বকর্মা পুজো নিকটে।
বিশ্বকর্মার হাতে তৈরি বহু জিনিস
প্রসঙ্গত, বিশ্বকর্মা লঙ্কা নগরীর নির্মাতা। তিনি বিশ্বভুবন নির্মাণ করেন। বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র, শিব এর ত্রিশূল, কুবের এর অস্ত্র, ইন্দ্রের বজ্র, কার্তিকেয়র শক্তি প্রভৃতি তিনি তৈরি করেছেন। শ্রীক্ষেত্র বা পুরীর প্রসিদ্ধ জগন্নাথ মূর্তিও তিনি নির্মাণ করেছেন। বিশ্বকর্মাকে বিশ্বের প্রথম স্থপতিকারও বলা হয়ে থাকে।