বাংলায় কেন এগোতে পারছে না সিপিএম? রোগ চিহ্নিত হওয়ার পরেও 'ভ্যাকসিনে'র অপেক্ষা
পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) বামেদের ক্ষমতা গিয়েছে ২০১১ সালে। তারপর থেকে শুধুই ক্ষয় হয়েছে। আর উঠে দাঁড়াতে পারেনি টানা ৩৪ বছর শাসন করা সিপিআইএম (CPIM)। প্রমোদ দাশগুপ্তের পরে তাঁর ছাত্রদের মধ্যে আজ অনেকেই নেই। সেই পরিস্থ
পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) বামেদের ক্ষমতা গিয়েছে ২০১১ সালে। তারপর থেকে শুধুই ক্ষয় হয়েছে। আর উঠে দাঁড়াতে পারেনি টানা ৩৪ বছর শাসন করা সিপিআইএম (CPIM)। প্রমোদ দাশগুপ্তের পরে তাঁর ছাত্রদের মধ্যে আজ অনেকেই নেই। সেই পরিস্থিতিতে রাজ্যের একসময়ে সব থেকে বড় লাল পার্টি দুর্বল থেকে দুর্বলতর জায়গায়। ১৫ মার্চ থেকে শুরু হওয়া রাজ্য সম্মেলনের আগে রোগ (disease) চিহ্নিত করে রিপোর্টও তৈরি হচ্ছে।
ছাত্র যুব আন্দোলন নিয়ে ইতিবাচক রিপোর্ট
একটি কোনও বামপন্থী দল টিকে থাকে ছাত্র-যুব, শ্রমিক-কৃষক, সমাজের সব ধরনের মানুষকে নিয়ে। কিন্তু বর্তমানে এই বাংলায় তারই অভাব লিপিবদ্ধ করেছে সিপিএম। ছাত্র-যুবরা আন্দোলনে সামিল হলেও অন্য কাউকে সেভাবে রাস্তায় দেখা যাচ্ছে না। স্কুল খোলার দাবি নিয়েই হোক কিংবা অন্য কিছু যাত্র-যুবরা পুরোটা না হলেও, তাদের শক্তি জাহির করেছে প্রতিকউর-সৃজনদের নেতৃত্বে।
রাস্তায় নেই শ্রমিক-কৃষকরা
২০১১ সালে ক্ষমতা যাওয়ার পর থেকে অনেক সুবিধাভোগী সরে গিয়েছেন। আবার অনেকে সরেছেন ভয়ে। এই মুহূর্তে রাস্তায় দেখা যাচ্ছে না বামপন্থী দলের বড় ভরসা শ্রমিক-কৃষকদের। প্রায় একবছর ধরে দিল্লির উপকণ্ঠে কৃষকরা আন্দোলনে সামিল হলেও রাস্তায় নামতে দেখা যায়নি এই রাজ্যের কৃষকদের। ইস্যু এক না হলেও, সেখানে ঋণ জর্জরিত কৃষকের আত্মহত্যার মতো ঘটনা ছিল। তাহলে কি রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্রমিক-কৃষকরা খুশি, উত্তরে তাঁরা বলছেন, না। তাহলে কেন পথে নয়, সেই প্রশ্ন উঠছে। আবার বস্তি অঞ্চলেও সংগঠনে পিছিয়েছে লাল পার্টি। কোথাও তো একটা ফাঁক রয়েছে। সমাজের এইসব অংশের মানুষকে যতক্ষণ না পর্যন্ত ফেরানো যাচ্ছে ততক্ষণ এগনো সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন অনেকে।
রোগ চিহ্নিত হলেও কাজ করা যাচ্ছে না
সিপিএম-এর তরফে রাজ্য সম্মেলনে জন্য খসড়া তৈরি করা হচ্ছে, সূত্রের খবর অনুযায়ী, তাতে বলা হয়েছে, রাজ্যের অসংগঠিত শ্রমিকদের কাছে দলের নেতাদের পৌঁছে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও, সেকাজ সেরকম এগোয়নি। এর পিছনে অনেকাংশেই এরিয়ে কমিটিগুলিকে দায়ী করা হয়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের তরফে। তবে শাখা সংগঠনের সদস্যরাও যে দায়ী তাও বলা যাচ্ছে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ অংশই বেসরকারি চাকরি করেন। অফিসের কাজ করে দলের কাজে বেশি করে সময় দেওয়াটা তাঁদের কাছে কিছুটা বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যার জেরে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিচ্ছিন্নতা তৈরি হচ্ছে জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষায়, যা বামপন্থী দলগুলোর ক্ষেত্রে একেবারেই কাম্য নয়।
আন্দোলনে দৃঢ়তা নেই
রোগ চিহ্নিত হলেও ভ্যাকসিনটা দেবে কে, কিংবা কারা দেবেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র কিংবা পলিটব্যুরোর সদস্য মহঃ সেলিমের মতো নেতারা জেলায় গিয়ে দলের কর্মীসভায় বলছেন এমন আন্দোলন করতে হবে, যাতে দাবি ছিনিয়ে আনা যায়। কিন্তু তাতে চায়ের জলও গরম হচ্ছে না। তিন কৃষি আইন বিরোধী আন্দোলনে যাঁর অবদান অনেকাংশে রয়েছে, সেই হান্নান মোল্লাও বলেছেন, রাজ্যে আন্দোলনে দৃঢ়তা দেখা যাচ্ছে না। ফলে সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও দাবি ছিনিয়ে আনার মতো আন্দোলন হচ্ছে না এই রাজ্যে। বাম মনোভাবা সম্পন্ন এমন অনেক বয়স্ক মানুষ রয়েছেন, যাঁরা ৬০ কিংবা ৭০ দশকের আন্দোলন দেখেছেন, তাঁরা বলছেন, গান্ধীবাদী পথে আন্দোলন করছে এখনকার বামপন্থীরা। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে, আর সেখান থেকেই ফল পাচ্ছে বর্তমান শাসক তৃণমূল কংগ্রেস।
হরিদ্বার ধর্ম সংসদের মুসলিম গণহত্যার ডাক কি নেতাজি অনুমোদন করতেন? সংসদে মহুয়ার নিশানায় মোদী সরকার