রাজ্যের পুরসভাগুলিতে নির্বাচন প্রক্রিয়া যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করতে নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
পুরভোট করাতে তৎপর কলকাতা হাইকোর্ট, ১১১টি পুরসভায় অবিলম্বে ভোট করানোর নির্দেশ কমিশনকে
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের যুক্তিকে মান্যতা দিয়ে রাজ্যের পুরসভা নির্বাচন প্রক্রিয়া যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করা যায় তার ভার রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য সরকারের উপরেই ছেড়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। দ্রুত পুরসভা নির্বাচন করা আর্জিতে হাইকোর্টে দায়ের হওয়া জোড়া জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে শুক্রবার এই নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি ইন্দ্র প্রণব মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিনের ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্যের পুরসভায় নির্বাচন নিয়ে এদিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের যুক্তি ছিল, ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে নির্ঘণ্ট ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। ভোটার তালিকা সংশোধন থেকে শুরু করে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ এবং শান্তিপূর্ণ ভোট প্রক্রিয়া সহ নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় কর্মসূচি কিভাবে করা যায় তা নিয়েও যাবতীয় কাজ শুরু করে দিয়েছে কমিশন। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে তারা পুরসভা ভোটের দিনক্ষণ ঠিক করবে।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আরও যুক্তি, রাজ্যের নির্বাচন কর্মসূচিতে ভোট কর্মীদের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। যেহেতু বিধানসভা নির্বাচনে এই ভোট কর্মীরা অংশগ্রহণ করবেন, তাই একই সঙ্গে একই ভোট কর্মীদের নিয়ে সমান্তরালভাবে পুরসভা নির্বাচন সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে এই নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেলে রাজ্য সরকারের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে পুরসভা গুলো নির্বাচন প্রক্রিয়া যত দ্রুত সম্পন্ন করা যায় তার চেষ্টা করছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
এদিন রাজ্যের যুক্তি ছিল, ইতিমধ্যে এ-সংক্রান্ত একটি মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। যেখানে কলকাতা পৌর নিগমের নির্বাচন নিয়ে মামলা দায়ের হয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতেই এদিন হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতা পুরনিগম ছাড়া বাকি পুরসভাও পুরনিগমগুলোর ক্ষেত্রে দিয়ে এই নির্দেশ দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে হাওড়া পুরনিগম সহ একাধিক পুরসভার পুরো নির্বাচন না করেই প্রশাসক নিয়োগ করে কর্পোরেশন চালাচ্ছেন রাজ্য সরকার। তাই দ্রুত পুরসভার ভোট প্রক্রিয়া সুসম্পন্ন হয় তার আর্জি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। একটি মামলা দায়ের করেন হাওড়া জেলার সিপিএমের জেলা কমিটির তরফে শংকর মিত্র। অপর মামলাটি দায়ের করেন মৌসুমী রায়।
শংকর বাবুর আইনজীবীর বক্তব্য, ২০১৩ সালের শেষ নির্বাচন হয় হাওড়া পুরনিগম এলাকায়। ২০১৮ তে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পুরভোট হওয়ার কথা থাকলেও নানান বাহানায় তা পিছিয়ে দেওয়া হয়। পরে নির্বাচন না করেই প্রশাসক নিয়োগ করে চলছে হাওড়া পুরো নিগম।
এছাড়াও একের পর এক প্রশাসক পরিবর্তন করা হচ্ছে রাজ্যের পৌরসভাগুলোতে। যাতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রক্রিয়া গুলো সম্পন্ন হতে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এমনকি এই নিয়োগ প্রক্রিয়া করে রাজ্য সরকার বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন যা সম্পূর্ণ পৌর আইন বিরোধী। এতে সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। যা সম্পূর্ণ সংবিধান বিরোধী। তাই এই প্রক্রিয়া বন্ধ করতে অবিলম্বে পুর নির্বাচনের দাবি জানান মৌসুমী রায়ের আইনজীবী।
শুভেন্দুর পথেই রাজীব, তবে এক সুরে নয়! কী বোঝাতে চাইছেন অভিনব পদক্ষেপে