শুভেন্দুর পথেই রাজীব, তবে এক সুরে নয়! কী বোঝাতে চাইছেন অভিনব পদক্ষেপে
শুভেন্দুর পথেই রাজীব, তবে এক সুরে নয়! কী বোঝাতে চাইছেন অভিনব পদক্ষেপে
শুভেন্দুর পথেই এগোলেন রাজীব, তবে সুর তুললেন অন্য। একই পথে হেঁটেও তাঁর ভিন্ন সুরে রাজনৈতিক মহলে জল্পনার পারদ চড়ল। কী বোঝাতে চাইছেন সদ্য ইস্তফা দেওয়া ডোমজুড়ের বিধায়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়? বুকে মমতার ছবি, চোখে জল, হাতে ইস্তফা পত্র নিয়ে তিনি কাদের উদ্দেশ্য বার্তা দিতে চাইলেন?
রাজীবের পরবর্তী পদক্ষেপ কি গেরুয়া যাত্রা!
রাজীব যে বিজেপিতে যোগদান করতে চলেছেন, তা মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে যায়। তৃণমূলে তরফে তারপরও চেষ্টা করা হয়েছিল তাঁকে রাখার। কিন্তু সেই চেষ্টা ততটা ফলপ্রসূ হয়নি। তবে শুভেন্দুর বেলায় যে ব্যর্থতা ঘটেছিল, তার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, তৃণমূল ছিল বিশেষ সাবধানী। এবার রাজীবের পরবর্তী পদক্ষেপে আরও স্পষ্ট হয়েছে তাঁর গেরুয়া যাত্রা।
দলনেত্রীর বিরুদ্ধে নয়, ক্ষোভ স্তাবকদের বিরুদ্ধে
মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় রাজভবনের সামনে দাঁড়িয়ে হাউহাউ করে কেঁদেছিলেন। এদিনও বিধায়ক পদে ইস্তফা দেওয়ার পর তাঁর চোখে ছিল জল আর বুকে মমতার ছবি। এই ছবিই অনেক বার্তা দিয়ে যাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। তাঁর ক্ষোভ যে দলনেত্রীর বিরুদ্ধে নয়, কয়েকজন স্তাবকদের বিরুদ্ধে তা ফের স্পষ্ট করে দিলেন তিনি।
শুভেন্দুর নিশানায় ভাইপো-পিকের পাশাপাশি পিসিও
শুভেন্দু যেমন দল ছাড়ার আগে প্রকাশ্যে না হলেও জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁর ক্ষোভ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে। তাঁদেরকে সামনে আনার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও তাঁর ক্ষোভ ছিল। সেইমতো দল ছাড়ার পর প্রত্যেক সভাতেই তিনি পিসি-ভাইপোকে নিশানা করছেন। উগরে দিচ্ছেন ক্ষোভ।
রাজীবের উল্টো সুর, মমতার ছবি নিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
কিন্তু রাজীবের বেলায় পুরো উল্টো ছবি দেখা যাচ্ছে। তিনি মন্ত্রিত্ব ছেড়েও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন। আবার বিধায়ক পদ ছাড়ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি বুকে আঁকড়ে। চোখে জল নিয়ে তিনি তৃণমূলের সঙ্গে একে একে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। আবারও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তাঁকে বিধায়ক হওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
কাউকে আক্রমণ নয়! রাজীব তাহলে ছাড়ছেন কেন দল?
এই মর্মে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যেই জানান, তিনি দল ছাড়লেও কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করবেন না। কোনওদিনও তাঁর মুখ থেকে কারও বিরুদ্ধে কু-কথা শোনা যাবেন না, তা তিনি যেখানেই যোগ দেন না কেন! রাজীব তাহলে ছাড়ছেন কেন দল? রাজীবের ক্ষোভ কিছু স্তাবক, দুর্নীতি আর জেলা নেতৃত্বের বি্রুদ্ধে।
রাজীবের মন্ত্রিত্ব ও বিধায়ক পদ ত্যাগের কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা
সেখানেও প্রশ্ন, যদি জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধেই তাঁর মূল ক্ষোভ হবে। তবে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর নেতা প্রাক্তন জেলা সভাপতি অরূপ রায়কে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য রাখলেন কেন! কেনই বা তিনি অরূপ রায়কে তাঁর নেতা বলে সম্মান দেখালেন। রাজীবের মন্ত্রিত্ব ও বিধায়ক পদ ত্যাগের কারণ নিয়ে তাই ধোঁয়াশা রয়েই যায়।
মন্ত্রিত্ব ও বিধায়ক পদে ইস্তফার পর রাজীব জল্পনা বাড়ালেন
যাই হোক মন্ত্রিত্ব ও বিধায়ক পদে ইস্তফা দেওয়ার পর এখন দেখার রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় কী সিদ্ধান্ত নেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মায়ের আসনে বসিয়েই তিনি দলত্যাগ করে অন্য দলে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন। জানিয়ে দিলেন সংসদীয় গণতন্ত্রে নির্দল থেকে কোনও কাজ করা যায় না মানুষের জন্য। তিনি কী করবেন, কোন দলে যাবেন, তা জানাবেন আগামীকালই।
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা যাঁদের
হাওড়ার ডুমুরজলায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল, বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া, হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তীরও। তারপর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগদান নিয়েও জল্পনার শেষ নেই। সেইসঙ্গে হাওড়ার যুব তৃণমূল সভাপতি অনুপম ঘোষ, হাওড়ার প্রাক্তন সভাপতি লক্ষ্মীরতন শুক্লাসহ অনেকেরই নাম ঘোরাফেরা করছে।
রাজীবের আরও এক তৃণমূলের সতীর্থ অমিতের সভায় থাকছেন! মুখ খুললেন হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তী