বাংলায় ২৭ আসনের ঘাটতি মেটাতে ‘তুরুপের তাস’ মিম! একুশের অঙ্কে বিজেপি
বাংলায় ২৭ আসনের ঘাটতি মেটাতেই ‘তুরুপের তাস’ মিম! একুশের অঙ্কে বিজেপি
২০২১-এর বিধানসভা ভোটে বাংলা-দখলে বিজেপির তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারে মিম। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের নিরিখে বিজেপি ২৭ আসনে পিছিয়ে রয়েছে। তাই হিসেব সমান-সমান হতে পারে যদি মিম তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটে থাবা বসাতে পার। একদিকে তৃণমূল ভেঙে নড়বড়ে করে দেওয়ার খেলা চালাচ্ছে বিজেপি, অন্যদিকে তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসাতে আসছে মিম।
বিজেপি এবার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারে মিমকে
এবার ভোটে বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের চ্যালেঞ্জার হয়ে উঠেছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপি এবার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারে মিমকে। ধর্মীয় মেরুকরণের ভোটে মিমকে দিয়ে ভোট কেটে তৃণমূলকে কমজোরি করে দেওয়াই এবার তাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যেই অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসালিমেন বা মিম এসেছে বাংলায়।
২৭ আসন টার্গেট বিজেপির, লক্ষ্যপূরণে হাতিয়ার মিম
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ১৮টি লোকসভা আসনে জিতেছিল। আর শাসক তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ২২টি। এই লোকসভা ভোটের নিরিখে বিধানসভার ১২১টি আসনে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে ১৬৩টি আসনে। এই ভিত্তিতে গেরুয়া ব্রিগেড এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠ সংখ্যায় পৌঁছতে ২৭ আসনে পিছিয়ে রয়েছে।
ঘাটতি মিটে যাবে মিমের দাক্ষিণ্যে, জিতবে বিজেপি
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বিজেপি একইসঙ্গে দুটি খেলা খেলছে। এক তৃণমূলকে ভেঙে কমডোরি করে দেওয়া। আর একটি হলে মিমের অপেক্ষা। মিম যদি সংখ্যালঘু ভোটে কিয়দংশ থাবা বসাতে পারে, তবে ড্যাংডেঙিয়ে জিতে যাবে বিজেপি। ২৭ আসনের ঘাটতি মিটে যাবে মিমের দাক্ষিণ্যে। তারপর রয়েছে তৃণমূলত্যাগী মুকুল-শুভেন্দুর খেল।
একুশে মুকুল রায়ের দোসর হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী
মুকুল রায় বিজেপিতে যোগদানের পর ২০১৯-এর ভোটে তছনছ করে দিয়েছিল তৃণমূলকে। এবার ভোটে মুকুলের দোসর হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বিজেপিতে যোগদানের ফলে তৃণমূল অনেক আসনে পিছিয়ে পড়বে বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা। অধিকারী পরিবারের প্রভাব অখণ্ড মেদিনীপুরের ৩৫টিরও বেশি আসনে রয়েছ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটব্যাংকে থাবা, লাভ বিজেপির
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এবার ধর্মীয় ভিত্তিতে ভোটের মেরুকরণ হতে পারে বাংলায়। ওয়েইসির দল মিম বাংলায় এই ধর্মীয় ভোট মেরুকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। ধর্মীয় ভিত্তিতে ভোটের মেরুকরণের ফলে সংখ্যালঘু ভোটব্যাংকের একটি অংশ মিমের পক্ষে যেতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তা হলে বিজেপিরই লাভ, ক্ষতি তৃণমূলের।
সংখ্যালঘুদের ভোট এবার বড় ফ্যাক্টর হবে বাংলায়
সংখ্যালঘুদের ভোট সর্বদা পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে এসেছে। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে বাংলায় ২.৪৬ কোটি মুসলমান রয়েছে। তারা রাজ্যের জনসংখ্যার ২৭.০১ শতাংশ। এর মধ্যে ভোটার প্রায় ২ কোটি। বাংলার তিনটি জেলায়- মুর্শিদাবাদ, মালদহ ও উত্তর দিনাজপুরে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী হল মুসলিম। এই তিনটি জেলা বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থিত।
মিমের হানা এবার তৃণমূলের কাছে ভয়ের কারণ একুশে
সংখ্যালঘু ভোট রাজ্যের প্রায় ১০০ থেকে ১১০ আসনে নির্ণায়ক ফ্যাক্টর। এর মধ্যে ৪৩টি অবস্থিত ওই তিনটি জেলায়। অতীতে, পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট সরকার ৩৪ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। তার প্রধান কারণ ছিল মুসলিম ভোট দৃঢ়ভাবে আটকে রাখা। তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে রয়েছে এখন এই ভোটব্যাঙ্ক। তাই মিমের হানা এবার তৃণমূলের কাছে ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একুশের ভোটে বাংলায় ফ্যাক্টর ২ কোটি মুসলিম ভোট! মমতার চিন্তা বাড়াচ্ছে মিম