টার্গেট ২০২৪? দেশের প্রতিটি কোনায় মমতার বার্তা পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার অভিষেকের
বিধানসভা ভোটের প্রচার পর্বেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া তৃণমূলের প্রচারের একমাত্র ‘মুখ' তিনিই। একদিকে গোটা রাজ্যে হুইল চেয়ারে বসে প্রচারে ঝড় তুলেছেন মমতা অন্যদিকে সমানে তাঁকে সাপোর্ট দিয়ে গিয়েছন তাঁর ভাই
বিধানসভা ভোটের প্রচার পর্বেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া তৃণমূলের প্রচারের একমাত্র 'মুখ' তিনিই। একদিকে গোটা রাজ্যে হুইল চেয়ারে বসে প্রচারে ঝড় তুলেছেন মমতা অন্যদিকে সমানে তাঁকে সাপোর্ট দিয়ে গিয়েছন তাঁর ভাইপো।
নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, যোগী আদিত্যনাথ, রাজনাথ সিংহের মতো বিজেপি-র সবর্ভারতীয় নেতাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে মমতার মতোই প্রচার চালিয়ে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বল মাঠের বাইরে পাঠিয়েছেন!
শাহ থেকে দিলীপ ঘোষের প্রত্যেকটা অভিযোগের জবাব দিয়ে বল মাঠের বাইরে পাঠিয়েছেন তিনি। আউট হননি, বরং গোটা টিমকে জিতেই এনেছেন। আর ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার তাঁর হাতেই উঠবে সেটা আন্দাজ করা ছিল। আর সেটাই করে দিলেন দলের কোচ তথা তৃণমূল সুপ্রিমো। আর দলের গুরু দায়িত্ব পাওয়ার পরেই রবিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে সাংবাদিক বৈঠক করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তাঁর আগে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে একদিকে দলের নেতা- কর্মীদের উদ্দেশ্যে দিলেন বার্তা। অন্যদিকে তাঁর লেখার মাধ্যমেই বুঝিয়ে দিলেন লড়াই ২০২৪ এর জন্যে। দিল্লিই লক্ষ্যে।
দেশের প্রতিটি প্রান্তে, প্রতিটি কোনায় দলনেত্রী মমতার বার্তা
শনিবার টুইটারে অভিষেক লেখেন, "নতুন দায়িত্ব দেওয়ার জন্য আমি দলের কাছে কৃতজ্ঞ। হাজার বাধা থাকা সত্ত্বেও যাঁরা আমার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছেন, যাঁরা বাংলাকে জিতিয়েছেন, দলের সেই সমস্ত সৈনিককে ধন্যবাদ।" তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন দলের বর্ষীয়ান অভিজ্ঞ নেতাদেরও। লিখেছেন, "দলের সমস্ত অভিজ্ঞ. বর্ষীয়ান নেতাদের ধন্যবাদ। যাঁরা দুর্দিনের দলের পাশে ছিলেন। দলকে সবথেকে বেশি মূল্য দিয়েছেন।" কীভাবে নিজের নতুন দায়িত্ব পালন করবেন অভিষেক, টুইটারে তারও আভাস দিয়েছেন তিনি। লিখেছেন, "আমি সকলকে কথা দিচ্ছি চেষ্টা কোনও ত্রুটি রাখব না। দেশের প্রতিটি প্রান্তে, প্রতিটি কোনায় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা, কাজ পৌঁছে দেব।"
প্রশান্ত-অভিষেক জুটি!
শুধু বিজেপি নেতাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রচারই নয়। বিধানসভা ভোটে দলের স্ট্র্যাটেজি কি হবে সেদিকেই প্রথমদিন থেকে নজর ছিল অভিষেকের। লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের শোচনীয় ধাক্কা। যা দেখে ভেঙে পড়তে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরকে (পিকে) নিয়ে আসা হয়। এরপর তাঁর দেখানো পথেই এগিয়ে গিয়েছেন অভিষেক। বারবার বাধা এসেছে। কিন্তু বিচলিত হননি। বিজেপি-র আইটি সেলের মোকাবিলায় তৃণমূলের নেটমাধ্যম-বাহিনী গড়ায় ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের সক্রিয় উদ্যোগ ছিল। বস্তুত, তৃণমূলের অন্দরের লোকজন মনে করেন, অভিষেক এবং তাঁর সঙ্গীদের সক্রিয় সহযোগিতা না-পেলে টিম-পিকের রাজ্যের গ্রামে গ্রামে গিয়ে মসৃণ ভাবে কাজ করা অত সহজ হত না। সে অর্থে দেখতে গেলে তৃণমূলে অভিশেক-পিকে একটি জুটি হিসেবেই কাজ করেছেন
দলের মূল সংগঠনে কোনও পদ দেওয়া হল তাঁকে
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদ দেওয়ার পাশাপাশি শনিবার যুব সংগঠনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে অভিষেককে। প্রায় সাত বছর ওই পদে ছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে সাময়িক ভাবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর কো-চেয়ারম্যানেরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ডায়মন্ড হারবারের সাংসদকে। এই প্রথম দলের মূল সংগঠনে কোনও পদ দেওয়া হল তাঁকে। তবে এর আগে দলের বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন অভিষেক। তবে এবার থেকে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলাবেন অভিষেক। এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, এবার থেকে লক্ষ্য দেশের বিভিন্ন রাজ্যে দলের সংগঠনকে নিয়ে যাওয়া। সেখানে পায়ের তলার মাটি শক্ত করা। আর সেই লক্ষ্যেই কাজ করবেন দলের সাংসদরা। অবশ্যই সেখানে অভিষেকের একটা বড় মত্মত থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে। আর অবশ্যই এই কাজে অভিষেককে সবরকম ভাবে সাহায্য করবেন প্রশান্ত কিশোর। এমনটাই মনে করা হচ্ছে।