তৃণমূলের প্রার্থীতালিকায় শুভেন্দুর অনুগামীরা! বিক্ষোভের জেরে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরির
তৃণমূলের প্রার্থীতালিকা প্রকাশের পর জেলায় জেলায় বিক্ষোভ। পূর্ব মেদিনীপুরও সেই তালিকার বাইরে নেই। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর খাসতালুকেই ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি। তিনি আবার জেলায় পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিটির আহ্বায়ক। অখিল গিরির বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।
বিক্ষোভ অখিলের বাড়ির সামনে
বিক্ষোভ শান্ত করতে গিয়ে বেগ পেতে হয় অখিল গিরিকে। পরে তিনি জানান, দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন আহ্বায়কের পদটি ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে। দলের প্রার্থীতালিকা দেখে যে তিনিও আঘাত পেয়েছেন সে কথা উল্লেখ করেন অখিল গিরি। বলেন, আমি কমিটির সদস্যদের সঙ্গে ওয়ার্ড ধরে ধরে প্রার্থীতালিকা নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। দু-দুবার বৈঠক করেছি। কিন্তু যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে তা দেখে আমি মর্মাহত।
প্রার্থীতালিকা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ
২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের ১০৮টি পুরসভায় ভোট। এদিন বিকেলে দলীয় প্রার্থীতালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে তৃণমূল কংগ্রেস। এরপরই জেলায় জেলায় শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভ। বিক্ষোভ আছড়ে পড়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হেভিওয়েট নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরির বাড়ির সামনে। যদিও জেলায় জেলায় বিক্ষোভের মধ্যেই তৃণমূল দাবি করে আগে যে লিস্টটি প্রকাশ করা হয়েছে তা ভুয়ো। অথচ দলেরই ফেসবুকে সেই তালিকা দেওয়া হয়। এমনকী পিকে-র টিম যে সাংবাদিকদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ চালায় সেখানেও প্রার্থীতালিকাটি দেওয়া হয়। এটা ঠিক, তাতে কোনও দলীয় পদাধিকারীর স্বাক্ষর ছিল না। তবে এ সব বোঝার ধৈর্য্য বা আগ্রহ কোনওটাই ছিল না ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের।
তৃণমূলের লিস্টে শুভেন্দুর অনুগামী!
অখিল গিরি দাবি করেন, কাঁথি ও এগরার জন্য নির্বাচন কমিটির পছন্দের তালিকায় অনুমোদন মেলেনি। লিস্ট দেখে তিনি মর্মাহত। দলীয় পদও তিনি ছেড়ে দেবেন। সূত্রের খবর, ৭, ১০ ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডে অতনু গিরি, দিলীপুকুমার মাইতি ও তরুণকুমার বেরাকে টিকিট দেওয়া হয়েছে। অরুণ ও দিলীপ সম্প্রতি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরেছিলেন। দিলীপ ফেরেন আজ সকালে। তাতেই নেতা-কর্মীদের সঙ্গে চটে যান অখিল গিরি। বিজেপিতে থাকা লোকেদের নাম তৃণমূলের প্রার্থীতালিকায় কীভাবে এলো তা বুঝতে পারছেন না বলে দাবি অখিল গিরির।
পদত্যাগের সিদ্ধান্ত
রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী বলেন, দাদার অনুগামী বলে যাঁরা পরিচিত এবং এখনও যোগাযোগ রাখেন তাঁদের নাম কীভাবে দলের প্রার্থীতালিকায় জায়গায় পেল তা বোধগম্য হচ্ছে না। জেলা থেকে পাঠানো তালিকায় এঁদের নাম ছিল না। নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এই লিস্ট দেখে আমিও মর্মাহত। তাই নির্বাচন কমিটির আহ্বায়ক পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবহে শীর্ষ নেতৃত্ব তা জেনে আর কিছু বলেননি। উল্লেখ্য, রাতের দিকে বিভিন্ন জেলায় সংশোধিত তালিকা পাঠানো হয়। তা বিক্ষোভের ক্ষত কতটা প্রশমন করবে তা বলবে সময়। তবে এক কথায় প্রার্থীতালিকা নিয়ে ঘেঁটে ঘ রাজ্যের শাসকদল!