ধারাবাহিক চুরির তদন্তে কেঁচো খুঁড়তে কেউটে! পরিচারিকার কাছ থেকে উদ্ধার ২৪ লক্ষের গয়না
চুরির দায়ে গ্রেফতার পরিচারিকা। সেই পরিচারিকার হেফাজত থেকে উদ্ধার প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা গয়না ও মূল্যবান জিনিস। এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে কলকাতা পুলিশের পর্ণশ্রী থানা।
চুরির দায়ে গ্রেফতার পরিচারিকা। সেই পরিচারিকার হেফাজত থেকে উদ্ধার প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা গয়না ও মূল্যবান জিনিস। এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে কলকাতা পুলিশের পর্ণশ্রী থানা।
পর্ণশ্রী থানায় অভিযোগ
১৯ জুলাই, বৃহস্পতিবার, পর্ণশ্রী থানায় একটি অভিযোগ জমা পড়ে। পর্ণশ্রী পল্লির জনৈক স্নেহাংশু ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, তাঁর বাড়ি থেকে নগদ দেড় হাজার টাকা সহ বেশ কিছু মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি গেছে। দিনের বেলায় চুরি হয়েছিল বলে অভিযোগ।
তদন্ত শুরু কেন পর্ণশ্রী থানার অফিসারেরা। চুরির ধরণ থেকে স্পষ্ট, বাড়িতে কোথায় নগদ টাকা বা দামি জিনিস আছে, চোরের স্পষ্ট ধারণা ছিল। মানে, চোর বাড়ির পরিচিত। অথচ, বাড়ির কোনও সদস্য বা পরিচারক-পরিচারিকা এই চুরিতে জড়িত নয়, জানিয়েছিলেন বাড়ির মালিক।
তদন্তকারী অফিসাররা বাড়ির লোকজনদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করেন, এমন কেউ আছে কিনা, যে এ বাড়িতে কদিন আগেও নিয়মিত আসত। জানা যায়, কিছুদিন আগে এক মহিলা এ বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেছিলেন কিছুদিন। তারপর, নির্দিষ্ট কারণ না দেখিয়েই কাজ ছেড়ে দিয়েছিলেন। নাম চিল গীতা।
কোনও ছবি না থাকায় পুলিশ ইতিমধ্যে সোর্সদের থেকে আসা খবরেও এক মহিলার কথাই উঠে আসে সম্ভাব্য অপরাধী হিসেবে। কেননা এই এলাকায় এমন ধাঁচের আরও কয়েকটি চুরি হয়েছে বিগত দিনগুলিতে। একই ধরণের চুরি। প্রত্যেক বাড়িতেই এক মহিলার যাতায়াত ছিল বলে অভিযোগ উঠে আসে।
গ্রেফতার অভিযুক্ত
সন্দেহ ও সোর্সের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পর্ণশ্রী থানার পুলিশ উপেন ব্যানার্জি রোডের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করে এক মহিলাকে। নাম, গীতা হালদার। বিভিন্ন বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন। জেরার মুখে অপরাধ স্বীকার করে নেন গীতা।
[আরও পড়ুন:দুষ্কৃতী হানা পুলিশকর্তার বাড়িতে! লন্ডভণ্ড আলমারি]
গীতার
দেওয়া
তথ্যের
ভিত্তিতেই
পর্ণশ্রী
থানার
বিশেষ
টিম
তল্লাশি
চালায়
রায়
বাহাদুর
রোডে
গীতার
বাড়িতে।
বাড়ির
ছাদে
চিলেকোঠার
ঘর
থেকে
উদ্ধার
হয়
চুরি
যাওয়া
সমস্ত
জিনিস।
কিন্তু,
এছাড়াও
তল্লাশিতে
আরও
যা
যা
বেরিয়ে
আসে,
তা
দেখে
অফিসারদেরও
চক্ষু
চড়কগাছ!
উদ্ধার ৯৬টি সোনার জিনিস
উদ্ধার হয় ৯৬টি সোনার জিনিস। মোট ওজন প্রায় ৮০০ গ্রাম। বাজারমূল্য কমপক্ষে ২৪ লক্ষ টাকা। জেরায় গীতা স্বীকার করে এই বিপুল টাকার সম্পত্তি জড়ো করেছিল শহরের বিভিন্ন বাড়ি থেকে চুরি করে এনে। এই চোরাই মালের তালিকায় দামি দামি গয়না ছাড়াও ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্সের দেওয়া পুরস্কারের মেডেলও রয়েছে।
এই
বিপুল
চুরির
পিছনে
গীতার
চিত্রনাট্য
ছিল
সহজ।
সে
নানা
এলাকায়
পরিচারিকার
কাজ
নিত।
কাজ
করার
ছুতোয়
জেনে
নিত
কোন
বাড়িতে
কোথায়
টাকা
ও
দামি
গয়নাপত্র
আছে।
সন্ধান
জানার
পর
হুট
করে
একদিন
কাজ
ছেড়ে
দিত।
তারপর,
কিছুদিনের
মধ্যেই
সুযোগ
বুঝে
ওই
এলাকায়
চুরি
করতে
ঢুকত।
যেহেতু
সে
তখন
আর
কাজ
করে
না
কোথাও,
ফলে
তার
ওপর
সন্দেহও
থাকত
না।
গীতার
বাড়ির
লোক
তার
এই
অপকর্মের
ব্যাপারে
সবই
জানত।
শুধু
এতটা
চোরাই
মাল
বাজারে
না
বেচে
তারা
যে
কেন
বাড়িতে
রেখে
দিয়েছিল,
সে
প্রশ্নও
উঠতে
শুরু
করেছে।
তদন্তকারী দলের সদস্যরা
দাঁড়িয়ে, বাঁদিক থেকে কনস্টেবল সোনামণি সাহা শর্মা, কনস্টেবল মহাদেব রাউত, সাব ইন্সপেক্টর সৌম্য খান, ইন্সপেক্টর প্রশান্ত মজুমদার, সাব ইন্সপেক্টর অঞ্জনা বোস এবং সিভিক ভলান্টিয়ার নবমিতা দে।
[আরও পড়ুন:ছাত্রী ও তার মা-কে ধর্ষণের অভিযোগ! গ্রেফতার 'প্রভাবশালী' শিক্ষক ]