পাকিস্তানে পিটিয়ে হত্যা শ্রীলঙ্কান ম্যানেজারকে, ৮০০ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর, গ্রেফতার ১১৮
পাকিস্তানে ৮০০ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায় অভিযুক্তকে বিচারের আওতায় এনে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে।
পাকিস্তানে ৮০০ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায় অভিযুক্তকে বিচারের আওতায় এনে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে একজন শ্রীলঙ্কার নাগরিককে মর্মান্তিকভাবে পিটিয়ে মারা হয়েছে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ১১৮ জনকে। এই ১১৮ জনের মধ্যে ১৩ জন প্রধান সন্দেহভাজন রয়েছে৷
শুক্রবার মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটয়ে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে। পাকিস্তানের কট্টরপন্থী ইসলামপন্থী দল তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তানের বিক্ষুব্ধ সমর্থকরা একটি পোশাক কারখানায় হামলা করে। এবং ধর্মনিন্দার অভিযোগে কারখানার জেনারেল ম্যানেজার প্রিয়ন্ত কুমারা দিয়াওয়াদানাকে পিটিয়ে হত্যা করে। তারপর তাঁকে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
দিয়াওয়াদানা শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডি শহরের বাসিন্দা। তিনি লাহোর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে শিয়ালকোট জেলার রাজকো ইন্ডাস্ট্রিজে (গার্মেন্টস-স্পোর্টসওয়্যার লেনদেন) গত সাত বছর বা তারও বেশি সময় ধরে জেনারেল ম্যানেজার হিসাবে কাজ করছিলেন।
এ ঘটনায় সর্বস্তরে ব্যাপক নিন্দার ঝড় ওঠে। ঘটনার পর অপরাধ স্থলে পৌঁছনোর জন্য পুলিশকেও চাপাচাপি করা হয়। একটি ভিডিওতে কিছুসংখ্যক পুলিশ সদস্যকে দেখা যায় যে, মৃতদেহটি পুড়িয়ে দেওয়ার সময় লোকজনকে অবস্থান করতে বলছেন। এদিকে, পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী ঘটনার নিন্দা করেছেন এবং এটিকে 'লজ্জার দিন' বলে অভিহিত করেছেন।
শিয়ালকোটের কারখানায় ভয়াবহ হামলা এবং শ্রীলঙ্কার ম্যানেজারকে জীবন্ত পুড়িয়ে ফেলা পাকিস্তানের জন্য লজ্জার দিন। আমি এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ এবং নিরপেক্ষ তদন্ত চাইছি বলে জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এই ঘটনায় সমস্ত অপরাধীকে আইনানুগ কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হবে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করছে পুলিশ। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এক টুইট বার্তায় এ কথা জানিয়েছেন।
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে শনিবার পাকিস্তানে একজন শ্রীলঙ্কার নাগরিকের গণপিটুনির নিন্দা করেছেন এবং আশা করেছেন যে, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জড়িত সকলকে বিচারের আওতায় আনবেন এবং শ্রীলঙ্কার বাকি প্রবাসীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি রাখবেন।
শনিবার এই ঘটনার একটি প্রাথমিক রিপোর্ট পাঞ্জাব পুলিশের মহাপরিদর্শক রাও সরদার আলি খান এবং পাঞ্জাব সরকারের মুখপাত্র হাসান খাওয়ার সংবাদ মাধ্যমের লকাছে উপস্থাপন করেছেন। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে- "পুলিশ এখনও পর্যন্ত ১১৮ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে। যার মধ্যে ১৩ জন প্রধান সন্দেহভাজন শ্রীলঙ্কার নাগরিকের গণপিটুনিতে জড়িত। এই ঘটনায় সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে ৮০০ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে৷
শ্রীলঙ্কান নাগরিকের মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার পর উত্তেজিত জনতা ওয়াজিরাবাদ সড়ক অবরোধ করে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন থানা থেকে পুলিশ সেখানে পৌঁছয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দিয়াওয়াদানার লাশ জনতা দ্বারা পুড়িয়ে দেওয়ার পরে পুলিশকে ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছিল।