For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

'বাঙালি-র হিন্দু-মুসিলম কী, কবে জাগব আমরা', অসম গণহত্যায় গর্জে উঠলেন তপোধীর

ধিক্কার বা নিন্দা- এমন শব্দ ব্যবহার করাটাও বৃথা। যা ঘটেছে তা শুধু অসমের বাঙালি নয় সমস্ত বাঙালি জাতির উপরে আক্রমণ।

Google Oneindia Bengali News

ধিক্কার বা নিন্দা- এমন শব্দ ব্যবহার করাটাও বৃথা। যা ঘটেছে তা শুধু অসমের বাঙালি নয় সমস্ত বাঙালি জাতির উপরে আক্রমণ। এনআরসি বিতর্কের মধ্যে দিয়ে অসম-কে বাঙালি শূন্য করার এক প্রবল চক্রান্ত শুরু হয়েছিল। তিনসুকিয়ায় যে ভাবে ৫ জন নিরীহকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে তাতে বলতেই হয় এই অনিবার্য পরিণাম অপেক্ষাই করছিল। আগামীদিনে এই পরিস্থিতির মাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে। ওয়ানইন্ডিয়া বাংলা-কে প্রায় এক নিঃশ্বাসে এমনই তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন তপোধীর ভট্টাচার্য। অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য এই মুহূর্তে অসমের প্রতিবাদী বাঙালিদের অন্যতম মুখ। শিলচর থেকেও তিনি তাঁর আন্দোলনের মাত্রাকেও আরও বাড়ানোর কথা জানিয়ে দিয়েছেন।

অসমে ফের শুরু বাঙালি নিধন, রাস্তায় নামছে বাঙালি সব সংগঠন

এনআরসি-নিয়ে অসম জুড়ে এখন এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। স্বাধীনতার প্রাক্কালে অসম জুড়়ে যে বাঙালি বিদ্বেষের সূচনা হয়েছিল দশকের পর দশক তার মাত্রা ক্রমশই বেড়়েছে। ১৯৮৩ সালে বাঙালি গণহত্যা সবচেয়ে বেশি হয়েছে। এনআরসি-র জেরে তৈরি হওয়া পরিস্থিতিতে বাঙালি হত্যার সংখ্যাটা ৮৩-র নৃশংসতাকেও ছাপিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তপোধীর ভট্টাচার্য, এই হিংসাত্মক পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ও অসম সরকারে তীব্র ভাবেই দায়ী করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, অসমের ৪০টি বাঙালি গণসংগঠন নিয়ে যে নাগরিক অধিকার রক্ষা সমন্বয় সমিতি তৈরি হয়েছে তারাও পথে নামছে। শুক্রবার শিলচর, করিমগঞ্জে প্রতিবাদ মিছিল বের করা হচ্ছে। সমস্ত বাঙালি এবং যারা এই গণহত্যায় প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তাদের সকলকেই এই মিছিলে যোগ দিতেও আহ্বান করা হয়েছে।

অসমে বাঙালি নিধনের সঙ্গে সঙ্গে সুক্ষ্মভাবে হিন্দু ও মুসলিম বিভেদকেও ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তপোধীর। তাঁর সাফ বক্তব্য, এনআরসি-র জেরে শুধু বাঙালি হিন্দু-রাই নয় বাঙালি মুসলিমরাও সমানভাবে প্রভাবিত হয়েছে। বাঙালি একটা জাতি। সুতরাং এই জাতির উপরে যখন আক্রমণ হচ্ছে তখন সেখানে হিন্দু অথবা মুসলিম রক্ত খুঁজতে যাওয়াটা বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়। বাঙালি জাতি হিসাবে যে অনেক ঐশ্বর্যশালী এবং এখানে হিন্দু ও মুসলিমের বিভেদ খুবই গৌণ বলেও মন্তব্য করেছেন তপোধীর ভট্টাচার্য। আজ বাঙালি হিন্দু যদি বাঙালি মুসলিম-দের থেকে নিজেদের আলাদা ভাবত তাহলে হয়তো বাংলা সাহিত্যে একাধিক মুসলিম সাহিত্যিক, ধর্মগুরুরা সামদৃত হতেন না। আসলে চক্রান্ত করে বাঙালিদের দ্বিখণ্ডিত করার যে প্রয়াস ইংরাজরা একটা সময় নিয়েছিল, বর্তমানে অবাঙালি কিছু গোষ্ঠী এবং ক্ষমতালোলুপ কিছু রাজনৈতিক দল এবং নেতা সেই একই পথে হাঁটছে। এরপরও আজ যদি বাঙালি জাতি হিসাবে এই আক্রমণের বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ায় তাহলে মর্মান্তিক পরিণতি অপেক্ষা করছে বলেও মনে করছেন তপোধীর ভট্টাচার্য।

অসমে এনআরসি থেকে ৪১ লক্ষ বাঙালির নাম বাদ যাওয়ার পর থেকেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিভিন্ন বাঙালি বিরোধী সংগঠন। বিশেষ করে যে সব উলফা জঙ্গিরা মুচলেকা দিয়ে জঙ্গিপনা ছেড়ে জীবনের মূলস্রোতে ফিরে এসেছেন, তাঁরাও এখন বাঙালি হিংসা ছড়াতে আসরে নেমেছেন। এদের মধ্যে অন্যতম মুখ মৃণাল হাজারিকা। যাঁকে অসম জুড়়ে বাঙালি বিদ্বেষ ছড়ানোর জন্য পুলিশি গ্রেফতারি প্রয়োজন ছিল। কিন্তু, সে নিয়ে নিশ্চুপ অসম সরকার। উল্টে মৃণাল হাজারিকার দেখানোর পথেই উলফার মুচলেকা দেওয়া অন্য জঙ্গিরা এবং এখনও জঙ্গিপনা না ছাড়া উলফার অন্য জঙ্গিরাও আসরে নেমে পড়েছে। এই গণহত্যার পরও কি সরকার নিশ্চুপ হয়ে থাকবে? এমন প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। অথচ, এনআরসি-তে বাঙালিদের প্রতি বঞ্চনার প্রতিবাদ করায় অসম সরকার তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা করেছিল। এ কোন দেশ? গণতান্ত্রিক কাঠামোর আড়ালে এ কোন ভাওতাবাজি আর জঙ্গিপনা? যাকে সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ বলেও বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন তপোধীর। বিজেপি-র এক সর্বভারতীয় সর্বোচ্চ নেতা বাঙালিকে উঁইপোকা বলে সম্বোধন করেছিলেন। তাঁর মতে বাংলা কথা বলেলই সে নাকি অনুপ্রবেশকারী অথবা জঙ্গি। তপোধীরের মতে, এই মন্তব্যের পরও আজ যদি বাঙালি ঘুমিয়ে থাকে তাহলে আর কিছুই বলার নেই।

প্রান্তিক কিছু নিরীহ বাঙালি মানুষকে টেনে টেনে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হল তাকে আর কীভাবে ধিক্কার-নিন্দা জানাবেন তা বুঝে পাচ্ছেন না তপোধীর। ভারত নামক যে ভাবনায় এই দেশ তাকে পদদলিত করে ফেলা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম আজ যদি এনআরসি নিয়ে সঠিকভাবে সরব হত তাহলে হয়তো বাঙালিরা হয়তো বুঝতে পারতেন কতটা সঙ্গীন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, 'অধিকাংশ সংবাদপত্রই লিখেছে 'বাঙালি হিন্দু', এমনকী লেখা হয়েছে তালিবানি সন্ত্রাসের কথা, অথচ এই বাঙালি নিধনের সঙ্গে যারা জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে তাদের সঙ্গে মুসলিম জনগোষ্ঠীর কোনও যোগ থাকতে পারে এমন কোনও সূত্র কিন্তু পাওয়া যায়নি। কিন্তু, এইসব শব্দ দিয়ে সকলের মধ্যে একটা মুসলিম বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। কেউ একবার লেখেনি যাদের হত্যাকারী বলে সন্দেহ করা হচ্ছে তাদের সঙ্গে হিন্দু ধর্মের যোগ থাকার প্রভূত সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকী, কেউ এটাও লেখেনি যে অসমের গোসাইগাঁও-এ বৃহস্পতিবার এক বাঙালি মুসলিমেরও রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। সাদেক শেখ নামে সেই ২৭ বছরের যুবক বাড়ির উঠোনেই রহস্যজনকভাবে বিস্ফোরণে মারা যায়। কী ভাবে তাঁর মৃত্য়ু হল? তার কোনও সদুত্তর নেই প্রশাসনের কাছে। চেষ্টা চলছে কোনও একটা সহজ তত্ত্ব খাড়া করার।'

English summary
Tapdhir Bhatacharjee strongly condemned the Tinsukia massacre. He stated that after NRC implementation Bengalis are often attacked in various places of Assam but there is lack in taking action.
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X