রূপান্তরকামী হওয়ায় বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হল মুম্বইয়ের চিত্রনির্মাতাকে!
মুম্বই, ২৪ জুন : রূপান্তরকামী এক চিত্রনির্মাতাকে তাঁর লিঙ্গের কারণে ফ্ল্যাটের মালিক বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে বলে অভিযোগ। রূপান্তরকামী ও চিত্রনির্মাতার দাবি, কিছুদিন আগেই তিনি ওই আবাসনে স্থানান্তরিত হন। কিন্তু আচমকাই বাড়ির মালিক মনে করেন এই আবাসনে পরিবার নিয়ে সবাই থাকে। এবং তারা চাইবেন না যে তাঁদের প্রতিবেশি একজন 'সমকামী' হোন। [যোগ্যতা সত্ত্বেও 'মুসলমান' বলে চাকরি হল না এক যুবকের]
জো পল নামের ওই রূপান্তরকামীর কথায়, "বাড়িওয়ালা সমকামী শব্দটি ব্যবহার করেছেন, কারণ হয়তো তিনি রূপান্তরকামী কী বিষয়টাই জানেন না।"
জো কলকাতার এক ফ্রিলান্স অ্যাডফিল্ম বা বিজ্ঞাপনের পরিচালক। তিনি কলকাতা থেকে এসেছেন। বাড়ির দালাল জাহাঙ্গীরের সাহায্য়ে তিনি যোগেশ্বরীর এই বাড়িটির খোজ পান। চুক্তিপত্র তৈরি হয়ে গেলেও তাতে বাড়িওয়ালা তখনও সই করেননি। তবুও জাহাঙ্গীরের আশ্বাসে নতুন ফ্ল্যাটে ওঠেন জো। [মুসলমান বলে মাথা গোঁজার ঠাই জুটল না এক যুবতীর]
জো-এর কথায়, "চুক্তি হওয়ার আগেই আমি জাহাঙ্গীরকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম আমার লিঙ্গের জন্য নতুন বাড়িতে থাকার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে নাতো? কারণ আগের বাড়ি আমি আমার লিঙ্গের কারণেই ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলাম। ৩ মাস ধরে প্রত্যেকদিন আমাকে মানসিকভাবে হেনস্থা হতে হয়েছিল। আমি নতুন বাড়িতে থাকার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র মনের শান্তি চেয়েছিলাম।
জাহাঙ্গীরও আশ্বাস দিয়েছিলেন, ১১ মাসের যে চুক্তি হয়েছে সেই সময়কালের মধ্যে জো কে কোনও রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না তাঁর লিঙ্গের কারণে। [ভারত পেল প্রথম 'রূপান্তরিত' কলেজ অধ্যক্ষা, মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়]
জো-এর দাবি তিনি যখন ওই ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করেন তখন ফ্ল্যাটের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ ছিল। নল থেকে শুরু করে রং সবকিছুর কাজ করিয়েছেন তিনি নিজেই। তাই এই ফ্ল্যাটেই থাকতে চাইছেন তিনি।
এদিকে এই গোটা ঘটনায়, জাহাঙ্গীর জানিয়েছেন, এঘটনা লিঙ্গের ভেদাভেদের ঘটনা নয়। এই ঘটনার দায় আসলে তারই। কারণ খদ্দের আনার আগে তিনি মালিকের সঙ্গে কথা বলে নেননি, তাই তিনি জানতেন না বাড়ির মালিক শুধুমাত্র কোনও পরিবারকেই ভাড়া দেবে বলে ঠিক করেছেন। একা থাকে এমন কাউকে বাড়ি দেওয়া হবে না।
কিন্তু জাহাঙ্গীরের দাবি মানতে নারাজ জো। জো স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন কোনও বিভ্রান্তি নেই এই বিষয়ে যে একা বলে নয়, তাঁর যৌন অগ্রাধিকারের ভিত্তিতেই তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।