নয়ডায় সুপারটেক টুইন টাওয়ার গড়ে ওঠা ও তার ধ্বংস করার বৃত্তান্ত! মধ্যের নানা ওঠা-পড়ার কাহিনী
নয়ডায় সুপারটেক টুইন টাওয়ার গড়ে ওঠা ও তার ধ্বংস! মধ্যের নানা ওঠা-পড়ার কাহিনী
উত্তর প্রদেশের নয়ডায় (Noida) ২৮ অগাস্ট টুইন টাওয়ার (twin tower) ধ্বংস করতে ৯০০০ টির বেশি গর্ত খোঁড়া হয়েছে। সেখানে রাখা হয়েছে ৩৫০০ কেজির বেশি বিস্ফোরক। ১০০ মিটারের সুপারটেক টুইন টাওয়ার ভেঙে পড়তে চলেছে তাসের ঘরের মতো। কাঠামো ভাঙতে আইনি লড়াই চলে এক দশরে বেশি সময় ধরে।
২০০০-র মাঝমাঝি চালু হয় আবাসন প্রকল্প
নয়ডা ভিত্তিক সংস্থা সুপারটেক লিমিটেড এমারল্ড কোর্ট নামে আবাসন প্রকল্প চালু করে ২০০০ সাল নাগাদ। বর্তমানে নয়ডা ও গ্রেটার নয়ডা সংযোগকারী এক্সপ্রেসওয়ের আশপাশের থাকা হাউজিং সোশ্যাইটির ৩,৪ ও ৫ বিএইচকে ফ্ল্যাটের মূল্য ১ থেকে ৩ কোটির মধ্যে।
যেখানে থাকার কথা সবুজ এলাকা, সেখানেই টুইন টাওয়ার
এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্য প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ২০০৫-এর জুনে প্রকল্পের সূচনার সময় সেখানে ১৪ টি নয়তলা বহুতল থাকার কথা ছিল। যদিও ২০১২ সাল নাগাদ তা পরিবর্তিত হয়ে যায় ১১ তলার ১৫ টি এবং ৪০ তলার দুটি কমপ্লেক্স সেখানে তৈরি করা হয়। যেখানে সবুজ এলাকা থাকার কথা সেই জায়গায় কারসাজির বিষয়টি সেখানকার বাসিন্দাদের কাছে ধরা পড়ে যায়। যেখানে সিয়ান ও অ্যাপেক্সের উচ্চতা ২৪ তলা হওয়ার কথা সেখানে তা ৪০ তলা পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
২০১২-তে আদালতে বাসিন্দারা
২০১২ সলে বাসিন্দারা সিয়ান ও অ্যাপেক্স নিয়ে শোরগোল শুরু করেন। তারা অভিযোগ করেন টুইট টাওয়ার বেআইনিভাবে তৈরি করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে নির্মাণকারী সংস্থা সুপারটেক মিথ্যা বলছে বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা। ২০১২-তে এলাহাবাদ হাইকোর্টে করা আবেগনে বাসিন্দারা টুইট টাওয়ার ভেঙে ফেলার জন্য আবেদন করেন। হাইকোর্ট ২০১৪ সালে টুইট টাওয়ার ভাঙার নির্দেশ দেওয়। সুপারটেক রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করে, যা পৌঁছে যায় সুপ্রিম কোর্টে।
সুপ্রিম কোর্টে দাবি, পাল্টা দাবি
সুপ্রিম
কোর্টে
সুপারটেক
দাবি
করে
নয়ডা
টুইন
টাওয়ার
নির্ধারিত
আইন
মেনে
হয়েছে।
ফলে
সেখানকার
বাসিন্দাদের
এনিয়ে
কোনও
আপত্তির
কারণ
থাকতে
পারে
না।
পাল্টা
বাসিন্দারা
অভিযোগ
করেন,
টুইন
টাওয়ার
নির্মাণের
একের
পর
এক
আইন
লঙ্ঘন
করা
হয়েছে।
বিল্ডার
প্রকল্পের
পরিকল্পনায়
ইচ্ছাকৃত
পরিবর্তন
করেছে
বলে
অভিযোগ
করেন
তাঁরা।
শুনানি
চলে
বিচারপতি
ডিওয়াই
চন্দ্রচূড়
এবং
বিচারপতি
এমআর
শাহ
ডিভিশন
বেঞ্চে।
২০২১-এর
৩১
অগাস্ট
সুপ্রিম
কোর্ট
বাসিন্দাদের
পক্ষে
রায়
দেয়।
টুইন
টাওয়ারকে
বেআইনি
বলে
জানায়
সুপ্রিম
কোর্ট।
সুপারটেক
টুইন
টাওয়ার
ভেঙে
ফেলার
নির্দেশ
দেয়
সুপ্রিম
কোর্ট।
টাকা যোগাতে হবে সুপারটেককে
নির্দেশে
বলা
হয়
নিউ
ওখলা
ইন্ডাস্ট্রিয়াল
ডেভেলপমেন্ট
অথরিটি
টুইট
টাওয়ার
ধ্বংসের
পরিকল্পনা
ও
বাস্তবায়ন
করবে
বিশেষজ্ঞদের
নিয়ে।
অন্যদিকে
টুইন
টাওয়ার
ধ্বংসের
জন্য
বিশেষজ্ঞদের
পারিশ্রমিক
দিতে
সুপারটেককে
নির্দেশ
দেয়
সুপ্রিম
কোর্ট।
পাশাপাশি
টুইন
টাওয়ারে
যাঁরা
ফ্ল্যাট
কিনেছিলেন,
তাঁদের
সুদ
সহ
টাকা
ফেরত
দিতেও
নির্দেশ
দেয়
সুপ্রিম
কোর্ট।
সুপারটেকের
তরফে
সুপ্রিম
কোর্টে
নির্দেশ
পর্যালোচনার
জন্য
আবেদন
করা
হয়।
টুইন
টাওয়ার
ধ্বংসের
কারণে
আশপাশের
বাসিন্দারে
নিরাপত্তার
বিষয়টি
তুলে
ধরা
হয়।
এত
কিছুর
মধ্যেও
সুপ্রিম
কোর্ট
তাদের
অবস্থান
পরিবর্তন
করতে
অস্বীকার
করে।
টুইন টাওয়ার ধ্বংসের দায়িত্ব মুম্বই ভিত্তিক সংস্থাকে
টুইন টাওয়ার ধ্বংসের দায়িত্ব দেওয়া হয় মুম্বই ভিত্তিক সংস্থা এডিফিস ইঞ্চিনিয়ারিংকে। এই সংস্থা এর আগে কেরলের কোচির কাছে চারটি বড় অবৈধ নির্মাণ ভেঙেছে। তারা ইমপ্লোশান নামে কৌশল ব্যবহার করে বিল্ডিং-এর কাঠামার মধ্যে ড্রিল করে গর্ত করে তার মধ্যে বিস্ফোরক বোঝাই করে দিয়েছে। বিস্ফোরণ মাটির ওপরে ঘটানো হলেও তার শেষ পর্যন্ত ভিতরে যাবে এবং প্রত্যেকটি ফ্লোর ভেঙে পড়বে। টুইন টাওয়ার ধ্বংসের সময় যাতে ধূলো বাইরের দিকে উড়ে না যায়, তার দিকেও নজর রাখা হচ্ছে।
উঠেছে হাজারো প্রশ্ন
টুইন টাওয়ার ধ্বংসকে স্থানীয়রা স্বাগত জানালেও, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন টুইন টাওয়ার ধ্বংসের কোনও দরকার ছিল না। বিল্ডারকে শাস্তি দিতে মোটা অঙ্কের অর্থ জরিমানা করা যেত। কিংবা টুইন টাওয়ারের দখল নিয়ে সরকার তা সামাজিক কাজে লাগাতে পারত। সেখানে দরিদ্রদের জন্য আবাসন করা যেত। যদিও এর পাল্টা যুক্তিতে বলা হচ্ছে টুইন টাওয়ার ধ্বংস করে বার্তা দেওয়া হচ্ছে. নির্মাণে দুর্নীতি থাকলে রেহাই পাওয়া যাবে না। বেআইনি নির্মাণ অপরাধের রূপ নেবে না।