রাহুল ভারত অধিনায়ক হিসেবে প্রত্যাবর্তন করছেন, হারারেতে নামার আগে কেন আবেগাপ্লুত?
লোকেশ রাহুল মাস তিনেক পর ফের ভারতীয় দলের হয়ে আজ মাঠে নামছেন। জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের একদিনের আন্তর্জাতিক সিরিজের প্রথম ম্যাচে। তিনি দলের অধিনায়কও। হারারে স্পোর্টস ক্লাবে নামার আগে আবেগাপ্লুত লোকেশ রাহুল। কেন না, ২০১৬ সালে এই হারারেতেই তাঁর একদিনের আন্তর্জাতিক ও টি ২০ আন্তর্জাতিকে অভিষেক। ওয়ান ডে ইন্টারন্যাশনালের অভিষেকে শতরানও হাঁকিয়েছিলেন।
রাহুলের কামব্যাক
স্পোর্টস হার্নিয়া ও করোনা আক্রান্ত হওয়ায় দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে রাহুল। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে সিরিজ খেলতে পারেননি। যেতে পারেননি ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও। রিহ্যাব সেরে ফিট হয়ে এবার ছন্দে ফেরার লক্ষ্যে রাহুল। এশিয়া কাপের আগে চেনা মেজাজে ফিরতে ৫০ ওভারের ফরম্যাটেই তিনটি ম্যাচ পাচ্ছেন, জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে। হারারে স্পোর্টস ক্লাবে ২০১৬ সালের ১১ জুন একদিনের আন্তর্জাতিক অভিষেকে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ১৬৯ রানের টার্গেট তাড়া করছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির ভারত। রাহুল সাতটি চার ও একটি ছয়ের সাহায্যে ১১৫ বলে ১০০ রানে অপরাজিত থেকে দলকে ৪৫ বল বাকি থাকতে ৯ উইকেটে জেতান, ম্যাচের সেরাও হন। রাহুল বলেছেন, হারারেতেই আমার একদিনের আন্তর্জাতিক ও টি ২০ আন্তর্জাতিকে অভিষেক। প্রথম ম্যাচে শতরান পেয়েছিলাম। এখানে অনেক সুখস্মৃতি রয়েছে। তাতে আরও কিছু এবার যোগ করতে পারব বলে আশা রাখি। এতদিন বাদে এখানে খেলতে এসে এবং দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পেয়ে ভালোই লাগছে। ব্যক্তিগতভাবে উপলব্ধি করতে পারছি ক্রিকেটার হিসেবে কতটা উন্নতি করতে পেরেছি এবং কতটা পথ পেরিয়েছি। সেটা ভেবে ভালো লাগে। এই সিরিজে ভালো খেলাই লক্ষ্য।
ড্রেসিংরুমে খোলা হাওয়া
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর জিম্বাবোয়েতেই রাহুল একটি পুরো ODI সিরিজে দেশকে নেতৃত্ব দিতে চলেছেন। তিনি বলেন, আমি সব সময়ই নিজেকে একজন প্লেয়ার হিসেবে দেখি। বাউন্ডারি লাইন পেরিয়ে মাঠে ঢোকার সময়ই আমি অধিনায়ক বা লিডার। আমরা সকলেই একসঙ্গে অনেক ম্যাচ খেলেছি, বিভিন্ন সফরেও গিয়েছি। দলে বেশ কয়েকজন তরুণ ক্রিকেটারও রয়েছেন। তবে তাঁদের সঙ্গেও আইপিএলে এক দলে বা প্রতিপক্ষ শিবিরে থেকে খেলেছি। প্রত্যেকের দক্ষতার প্রতি আস্থা রয়েছে। রাহুল এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন কয়েক মাস পর ভারতের ড্রেসিংরুমে ফিরলেও সেখানে পরিবেশ হাল্কাই রয়েছে। সতীর্থরা খেলার প্রস্তুতির ফাঁকে নিজেদের মধ্যে মজা, গল্প করে সময় কাটাচ্ছেন।
|
আত্মবিশ্বাসী কেএল
ভারতের টি ২০ দলে এখন দারুণ প্রতিযোগিতা। তবে চোট সারিয়ে মাঠে ফেরার সময় কোনও চাপ অনুভব করছেন না রাহুল। তাঁর কথায়, যখন নির্বাচক কিংবা কোচ ও অধিনায়ক একজন ক্রিকেটারের পাশে থাকেন সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ক্রিকেটারের আত্মবিশ্বাস বাড়াতেও তা সহায়ক হয়। নিজের খেলা ও স্কিলের প্রতি মনোনিবেশ করে যেটা প্রয়োজন সেটাতেই ফোকাস স্থির রাখা যায়। দু মাস বাদে কেউ দলে ফিরলেও গত দুই-তিন বছরে ওই ক্রিকেটার দলের জন্য কী করেছেন সেটা মনে রেখে যখন দলের সকলে পাশে থাকেন সেটা সামগ্রিক পরিস্থিতি অনেকটাই সহজ করে দেয়। এটাই বাড়িয়ে দেয় আত্মবিশ্বাস। স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতিতে আত্মবিশ্বাস সঞ্চয় করে নামলে কোনও ভালো প্লেয়ার আরও ভালো হওয়ার দিকে এগিয়ে যেতে পারেন। দলের জন্য ম্যাচ-জেতানো ইনিংসও খেলতে পারেন।
|
নিজের মতো করেই
অধিনায়কত্ব নিজের মতো করেই করতে চান রাহুল। তিনি এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, ধোনি বা কোহলির ক্যাপ্টেন্সির সঙ্গে আমি নিজের ক্যাপ্টেন্সির তুলনা করি না। তাঁরা অধিনায়ক হিসেবেও যা নজির গড়েছেন তাতে আমি মনে করি না তাঁদের সঙ্গে আমার নাম তুলনায় আসে। দেশের জন্য তাঁরা যা করেছেন সেই জায়গায় পৌঁছানো যে সহজ নয় সে কথা উল্লেখ করে রাহুল আরও বলেন, আমি অনেকটাই নবীন। এটা অধিনায়ক হিসেবে আমার দ্বিতীয় সিরিজ। তবে আমি তাঁদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। সতীর্থ হিসেবে ভালো গুণগুলিই শেখা উচিত, সেটাই করেছি। অধিনায়ক হিসেবে নিজের প্রতি সৎ থাকলে তা সতীর্থদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। শান্ত থেকেই সতীর্থরা যাতে নিজেদের সেরাটা মেলে ধরতে পারেন তা সুনিশ্চিত করার পরিবেশই তৈরি করতে চান ক্যাপ্টেন রাহুল।