বিবাহ বহি্ভূত সম্পর্কের জেরে বিবস্ত্র করে গাছে বেঁধে মার যুগলকে, মধ্যুযুগীয় বর্বরতা কুলপিতে
বিবাহ বহি্ভূত সম্পর্কের জেরে বিবস্ত্র করে গাছে বেঁধে মারধর করা হল যুগলকে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপিতে তালিবান শাসনের ছবি ফুটে উঠল আরও একবার। পুলিশ-প্রশাসনের তোয়াক্কা না করে নিজেরাই আইন হাতে তুলে নিলেন। আত্মীয় ও প্রতিবেশীরাই শাস্তি দিলেন যুগলকে।
বুধবার প্রতিবেশী এক যুবকের সঙ্গে গৃহবধূকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন শাশুড়ি ও দেওর। প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনরা তাদেরকে ধরে ফেলে। তারপর বিবস্ত্র করে গাছে বেঁধে মারধর শুরু হয়। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।
এরপর পুলিশ এই ঘটনায় অ্যাকশান নেয়। ভাইরাল ভিডিও নজরে আসার পর মহিলার দেওর, শাশুড়ি-সহ ১২ জনকে গ্রেফতার করে কুলপি থানার পুলিশ। এই ঘটনার পর শ্বশুর বাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে চলে গিয়েছেন গৃহবধূ। গণপিটুনির সেই আতঙ্ক এখনও তাঁর চোখে-মুখে।
পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, ওই গৃহবধূর স্বামী ভিনরাজ্যে কর্মরত। স্বামীর অনুপস্থিতিতে প্রতিবেশী যুবকের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়। অনেকদিন ধরেই কানাকানি চলছিল। তারপর বুধবার তাঁদের ঘনিষ্ঠ অবস্থায় হাতেনাতে ধরে ফলে। আপত্তিকর অবস্থায় গৃহবধূ ও তাঁর প্রেমিককে ধেখে ফেলায় এই জনরোষের সৃষ্টি হয়।
এই ঘটনায় পুলিশকে অন্ধকারে রেখে নিজেরাই আইন তুলে নেন হাতে। গৃহবধূ ও তাঁর প্রেমিককে একটি গাছে বেঁধে মারধর করা হয়। তাঁদেরকে বিবস্ত করে এভাবে মারধরের ঘটনায় তালিবানি শাসনের ছবি ফুটে ওঠে এ রাজ্যেই। একে মধ্যযুগীয়. বর্বরতা বলেও ব্যাখ্যা করা হয়। কেন এই ঘটনায় পুলিশের দ্বারস্থ না হয়ে নিজেরাই আইন তুলে নিলেন, এর মধ্যে কোনও রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মঙ্গলবার কুলপি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন আক্রান্ত মহিলা। তারপর তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে গৃহবধূর শাশুড়ি ও দেওর-সহ ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনার নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বুকে একের পর এক তালিবানি শসানের মতো ঘটনা ঘটছে বলে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি অভিযোগ করছে। গতকালই বোমা বিস্ফোরণে চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে। একটি বাড়িতে বোমা বাঁধার কাজ চলছিল, তখনই ঘটে বিস্ফোরণ।
এই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও, বাকি একজনের কোনও খোঁজ মেলেনি প্রথমে। স্থানীয়রা অভিযোগ করে, একজনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ আসার আগেই সরিয়ে ফেলা হয়েছে দেহ। শেষে পুলিশ জানা চারজনই জখম হয়েছে। এই ঘটনার নেপথ্যেও রাজনৈতিক যোগসূত্র রয়েছে কি না দেখা হচ্ছে।