নোটের পাশের রেখাগুলি কেন? এর অর্থই বা কী?
ভারতীয় টাকার (Indian Currency) ধারে বিভিন্ন ধরনের রেখা থাকে। নোটের মূল্য অনুযায়ী এই রেখাগুলি (lines) পরিবর্তিত হয়ে থাকে। কিন্তু কেন এই দাগ কিংবা লাইনগুলো দেওয়া হয়? সাধারণভাবে এই লাইনগুলি এবং নোটের ওপরে থাকা ছবি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বহন করে থাকে।

ব্লিড মার্ক তৈরি প্রতিবন্ধীদের জন্য
ভারতীয় টাকার ধারে যেসব দাগগুলি থাকে, সেগুলিকে ব্লিড মার্ক বলা হয়। এগুলি প্রতিবন্ধীদের (যাঁরা চোখে দেখতে পান না) জন্য তৈরি করা হয়ে থাকে। সাধারণভাবে যাঁরা চোখে দেখতে পান না, তাঁরা স্পর্শ করলে বুঝতে পারে এই নোটগুলির মূল্য কত। সেই কারণে ১০০, ২০০, ৫০০ কিংবা ২০০০ টাকা নোটের লাইনগুলি বিভিন্ন রকমের। ফলে এই লাইনগুলি ওই নোটগুলির মূল্যকেই প্রকাশ করে থাকে।

বিভিন্ন নোটে লাইনের সংখ্যা আলাদা
১০০ টাকার নোটের দু পাশে চারটি করে লাইন রয়েছে। ২০০ টাকার নোটের দুদিকে চারটি করে লাইন আর সঙ্গে দুটো শূন্য রয়েছে। ৫০০ ও ২ হাজার টাকার নোটে যথাক্রমে ৫ ও ৭ টি করে লাইন রয়েছে। এই লাইনগুলির সাহায্যেই যাঁরা চোখে দেখতে পান না, তাঁরা স্পর্শ করেই টাকার মূল্য বলে দিতে পারেন।

বিভিন্ন নোটে রয়েছে বিভিন্ন ছবি
মূল্য অনুযায়ী ভারতীয় টাকায় বিভিন্ন ছবি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ২০০০ টাকার নোটের পিছনের দিকে থাকে মঙ্গলযানের ছবি, যা দেশের মঙ্গল মিশনের অংশ। ৫০০ টাকার নোটে রয়েছে লাল,কেল্লার ছবি। ২০০ টাকার নোটের পিছনে রয়েছে মধ্যপ্রদেশের বিদিশার সাঁচি স্তুপের ছবি। যা সম্রাট অশোকের সময়ে তৈরি করা হয়েছিল।

১০০ টাকার নোটে রয়েছে 'রানি কি ভাব'
১০০ টাকার নোটে রয়েছে রানি কি ভাবের ছবি। যা ঐতিহাসিকভাবে রয়েছে গুজরাতের পাটনে। এটি তৈরি করা হয়েছিল সোলাঙ্কি রাজবংশের রানি উদয়মতি এবং তাঁর স্বামী প্রথম ভীমদেবের স্মরণে। ২০১৪ সালে ইউনেস্কো এটিকে হেরিটেজ তালিকায় স্থান দিয়েছে।
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে ভারতে বিভিন্ন সময়ে শাসকরা তাঁদের সুবিধার কারণে মুদ্রার প্রচলন করেছিলেন। তা তিনি শেরশাহই হোন কিংবা মোঘল কিংবা মারাঠা, সবাই নিজেদের মতো করে মুদ্রা বের করেছিলেন। ইংরেজ শাসনে তা তুলনামূলত অনেকটাই উন্নত হয়। ভারতে ব্যাঙ্কনোটে প্রচলন হয়েছিল ওয়ারেন হেস্টিংসের সময়ে তৈরি হওয়া সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অফ বেঙ্গল অ্যান্ড বিহারের মাধ্যমে। পরবর্তী সময়ে তা বর্তমান টাকার রূপ নেয়। যার দেখভাল করে থাকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া।