বিজেপিকে ছেড়ে মমতা-সখ্যে আরও এক মুখ্যমন্ত্রী! দ্রুত বদলাচ্ছে জাতীয় রাজনীতির সমীকরণ
বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিজেপি ঘনিষ্ঠ পবন চামলিংয়ের হাত মেলানোর পিছনেও বৃহত্তর রাজনৈতিক অঙ্ক রয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচনের দামামা বেজে যাবে। তার আগে বিজেপি থেকে মুখে ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে এনডিএ শরিকের অনেক দলই। শিবসেনার পর টিডিপিও বিজেপি-সঙ্গ ছেড়েছে। দক্ষিণের দলগুলোর সঙ্গে নিত্য যোগাযোগ রেখে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমতাবস্থায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিজেপি ঘনিষ্ঠ পবন চামলিংয়ের হাত মেলানোর পিছনেও বৃহত্তর রাজনৈতিক অঙ্ক রয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
[আরও পড়ুন: পদে আছেন, ভোটে নন! শোভনে অনাস্থায় আসন্ন পঞ্চায়েতে উত্থান তৃণমূলের নয়া নেতার ]
শুক্রবার শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিং। উভয়েই অতীতের মতানৈক্য ভুলে একযোগে উন্নয়ন করার ব্যাপারে ঐক্যমত্য হন। দার্জিলিং ও সিকিমের উন্নতিতে উভয় রাজ্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে বলে জানান তাঁরা। দুই মুখ্যমন্ত্রীই বলেন, ভুল বোঝাবুঝি এখন অতীত। আমরা আলোচনার মাধ্যমে সব মিটিয়ে নিয়েছি। এবার আমরা একসঙ্গে উন্নয়ন করব।
এদিন উত্তরকন্যায় এসে উষ্ণ অভ্যর্থনা পান সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবনকুমার চামলিং। তারপর দুই মুখ্যমন্ত্রী রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। তাঁদের মধ্যে প্রশাসনিক কথাবার্তা হয়। হয় রাজ্যের উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে নানা কথা। এই বৈঠকের পর দুই রাজ্যের মধ্যে তৈরি হওয়া যাবতীয় জট কেটে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
[আরও পড়ন: বিজেপি বিরোধী প্রবল হাওয়া লেগেছে জোটের পালে, 'পিসি-ভাইপো'র নয়া চ্যালেঞ্জ মোদীকে]
বিশেষ করে পরিবহণ সংক্রান্ত যে সমস্যা তৈরি হয়েছে সেই গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের সময় থেকে, তাও মিটে যাবে বলে আশাবাদী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দুই রাজ্যেরই প্রয়োজন উভয়কেই। তাই দুই প্রতিবেশী রাজ্যের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি দরকার। আর তা এদিনের বৈঠকের পর থেকেই তৈরি হবে বলে প্রত্যয়ী বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
গত জুন মাস থেকে পাহাড় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল বিমল গুরুংদের গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের জেরে। সেই আন্দোলনে পরোক্ষে সিকিমের মদত ছিল বলে অভিযোগ। এমনকী বিমল গুরুংকে সিকিম আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। পাহাড়ে শিল্প সম্মেলনের পর দুই মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের কথা ঘোষণা হতেই পাহাড় রাজনীতি অন্য খাতে বইতে শুরু করেছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে পাহাড়ে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। দার্জিলিংয়ে এখন শাসন ক্ষমতায় যাঁরা, তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ। এমতাবস্থায় বিমল গুরুংয়ের ফিরে আসার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। তাই বাংলার সঙ্গে সখ্যতা ভবিষ্যতের পক্ষে ভালো বলেই মনে করেছেন সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী। তার উপর জাতীয় রাজনীতিতেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রভাব বাড়ছে। সেই নিরিখে পক্ষ বদল করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলাই শ্রেয় মনে করেছেন চামলিং। তাঁর কথাতেই স্পষ্ট ভবিষ্যৎ রাজনীতি দ্রুত বদলাচ্ছে।