আরএসপির আধিপত্য কেড়েছে তৃণমূল, ২০১৯-এ ফিরে দেখা বালুরঘাটের ভোট ইতিহাস
প্রথম দু-দফায় পাঁচটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। এবার ২০১৯-এর লোকসভা যুদ্ধে তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণের অপেক্ষা। এই দফায় বাংলায় পাঁচটি কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে।
প্রথম দু-দফায় পাঁচটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। এবার ২০১৯-এর লোকসভা যুদ্ধে তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণের অপেক্ষা। এই দফায় বাংলায় পাঁচটি কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে। বালুরঘাট, উত্তর মালদহ, দক্ষিণ মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুরে ভোট হবে এই দফায়। তার আগে ৫ কেন্দ্রের ভোট ইতিহাসের দিকে ফিরে দেখা যাক। একঝলকে বালুরঘাটের ভোট ইতিহাস।
বালুরঘাট
বাংলার ৪২ লোকসভার কেন্দ্রের মধ্যে ছ-নম্বর লোকসভা কেন্দ্র হল এই বালুরঘাট। সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে গঠিত এই লোকসভা আসনটিতে আরএসপির দাপট ছিল '৭৭ সালের পর থেকে। ১৯৭৭-র আগে কংগ্রেসের দখলে ছিল। কিন্তু বাম শাসনে কংগ্রেস কোনও দাগ কাটতে পারেনি। ২০১৪ সালে প্রথম পরিবর্তন আনে তৃণমূল কংগ্রেস।
কোন কোন বিধানসভা
বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র হল- ইটাহার, কুশমান্ডি, কুমারগঞ্জ, বালুরঘাট, তপন, গঙ্গারামপুর, হরিরামপুর। এই সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ছ-টি দক্ষিণ দিনাজপুরের অন্তর্গত। কেবলমাত্র ইটাহার বিধানসভা কেন্দ্র উত্তর দিনাজপুর জেলার অন্তর্গত।
১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালের ভোট
এই দুই নির্বাচনে বালুরঘাট নয়, ছিল পশ্চিম দিনাজপুর কেন্দ্র। প্রথম নির্বাচন ১৯৫২ সালে জয়ী হয় কংগ্রেস। সাংসদ হন সুশীলরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। পরের নির্বাচন অর্থাৎ ১৯৫৭ সালে এই কেন্দ্র থেকে দুজন সাংসদ হন। দুজনেই কংগ্রেসের। একজন সেলকু মার্ডি, দ্বিতীয়জন চপলাকান্ত ভট্টাচার্য।
১৯৬২ সালে থেকে ১৯৭১
১৯৬২ সাল থেকে এই কেন্দ্রটির বালুরঘাট নাম হয়। ১৯৬২-তে প্রথম বালুরঘাট কেন্দ্র থেকে জয়ী হল সিপিআই। সিপিআইয়ের সরকার মুর্মু সাসংদ নির্বাচিত হন। পরের দুটি নির্বাচন অর্থাৎ ১৯৬৭ ও ১৯৭১ সালে এই কেন্দ্রে ফের জয়ী হয় কংগ্রেস। কংগ্রেসের জে এন প্রামাণিক ও রসেন্দ্রনাথ বর্মন সাংসদ নির্বাচিত হন।
১৯৭৭ থেকে ২০০৯
১৯৭৭ সাল থেকে ২০০৯ টানা এই কেন্দ্রের দখল ছিল আরএসপির। মোট ১০টি নির্বাচনে আরএসপি জয় পেয়েছে। পলাশ বর্মন টানা পাঁচবার এই কেন্দ্র থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছে। তারপর চারবার টানা এই কেন্দ্র থেকে জয় পান রণেন বর্মন। ২০০৯ সালে এই কেন্দ্র থেকে আরএসপির প্রশান্ত কুমার মজুমদার সাসংদ হন।
২০১৪ নির্বাচনের ফল
২০১৪ সালে বালুরঘাট কেন্দ্র থেকে বিজয়ী হন তৃণমূল কংগ্রেসের অর্পিতা ঘোষ। লক্ষাধিক ভোটে আরএসপির বিমলেন্দু সরকারকে হারিয়ে ৭৭ সালের পর প্রথম পরিবর্তন আনেন। বিজেপির বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী ২০১৪-র নির্বাচনে ভোট শতাংশে প্রভাব রেখেছিল। কংগ্রেসের ওমপ্রকাশ মিশ্র হয়েছিল চতুর্থ।
২০১৪ সালে কার কত ভোট
২০১৪ সালে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ৪,০৯,৬৪১ ভোট। আরএসপি পেয়েছিল ৩,০২,৬৭৭ ভোট, বিজেপি পেয়েছিল ২,২৩,০১৪ ভোট। আর কংগ্রেস প্রার্থী ভোট পান ৮০,৭১৫। এআইইউডিএফ প্রার্থী ১০ হাজার ভোট পান আর নোটায় পড়ে ১১ হাজারেরও বেশি ভোট।
২০১৯-এ কারা প্রার্থী
তৃণমূল কংগ্রেস এবার সিটিং এমপি অর্পিতা ঘোষকে প্রার্থী করেছে। আরএসপির প্রার্থী হয়েছে রণেন বর্মন। বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন আবদুস সাদেক সরকার। এসইউসিআই এই কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়েছে, তাদের প্রার্থীর নাম বীরেন মহান্ত।
[আরও পড়ুন: মরিয়া মমতা এবারে মুর্শিদাবাদ জিততে রাজনৈতিক কৌশল বদলেছেন; কিন্তু ওষুধে কাজ হবে কী? ]
[আরও পড়ুন:বাংলার রাজনীতিতে জঙ্গিপুরের ভোট সমীকরণ ঘিরে নজরকাড়া কিছু তথ্য]