তৃণমূলের ‘টিম ২৫’-এর চ্যালেঞ্জে বিজেপির ‘টিম ১০’, ‘মিশন-বাংলা’য় অমিত-কৌশল
রাজ্যের কোযাগারের টাকায় আর রাজ্য সড়ক সংস্কার নয়। এবার থেকে রাজ্য সড়ক থেকে টাকা তুলেই রাজ্য সড়কের সংস্কার হবে। রাজ্য সড়কে বসছে টোল।
গুজরাতের বোঝা মাথার উপর থেকে সরতেই বাংলায় দিকে নজর দিতে শুরু করল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। আগামী মাসেই বাংলায় পা রাখতে চলেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। দুয়ারে পঞ্চায়েত ভোট। এবার সেই যুদ্ধে বাংলায় ধাক্কা দিতে হবে তৃণমূলকে। বাংলার গ্রাম দখলের পরিকল্পনা তাই ছকে ফেলেছেন তিনি। দিল্লি থেকেই বঙ্গ-বিজেপির উদ্দেশ্যে পাঠিয়েছেন প্রয়োজনীয় বার্তা।
[আরও পড়ুন:'টি-টোয়েন্টি'র ধাঁচে 'টিম-২৫'! পঞ্চায়েত নির্বাচনে মুকুল-বধের 'ফর্মুলা' তৈরি মমতার]
২০১৮-য় বাংলায় পঞ্চায়েত ভোট। সবার আগে সেই নির্বাচনকেই টার্গেট করতে চাইছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। সেই কারণেই নির্বাচনের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতেই তিনি বাংলায় আসছেন। তার আগে অমিত শাহ নির্দেশ পাঠিয়েছেন, বুথস্তরে কমিটি তৈরি করে ফেলতে হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই কমিটি গঠনের কাজ শেষ করার নির্দেশ পাঠিয়েছেন তিনি।
তিনি জানিয়েছেন, প্রতিটি বুথে ১০ জনের কমিটি তৈরি করা হবে। সেই কমিটিই নিজ নিজ বুথে পরিচালনা করবেন ভোট। তাই কমিটিতে সক্রিয় নেতা-কর্মী ও সমাজের বুদ্ধিজীবী মহলকে স্থান দিতে হবে। রাজ্য নেতৃত্বকে উদ্দেশ্য করে প্রতি জেলায় তাঁর এই বার্তা পাঠানোরও নির্দেশ দিয়েছেন। সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, কোনওভাবেই দলকে প্রচার সর্বস্ব করা যাবে না।
গুজরাত ও হিমাচল ফল প্রকাশের পর তিনি চান না কোনও রাজ্যেই কোনও গাফিলতি থাকুক কর্মীদের মধ্যে। শুধু ভোটের সময় কাজ করলে চলবে না। সারা বছর মানুষের পাশে থাকতে হবে। আর নাম কাওয়াস্তে একটা মোর্চা বা সেল তৈরি করে কোনও লাভ নেই। প্রত্যেক মোর্চা ও সেলকে সক্রিয় করে তোলার বার্তা দেন তিনি।
বাংলাকে নিয়ে বিজেপির নির্দিষ্ট লক্ষ রয়েছে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনই তাঁদের মূল টার্গেট। তার আগে ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনকে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব সেমিফাইনালের যুদ্ধ বলেই মনে করছে। বিজেপি চাইছে যেনতেন প্রকারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলকে একটা জবরদস্ত ধাক্কা দিতে। আর গ্রাম থেকেই যদি সেই ধাক্কা শুরু করা যায়, তবে তার থেকে আর ভালো কিছু হবে না বলেই মত অমিত শাহদের।
মঙ্গলবার রাজ্য দফতরে বিজেপির বৈঠক চলাকালীন কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহাকে ফোন করেন অমিত শাহ। তিনি বাংলায় দলের কাজকর্ম সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। নির্দেশ দেন, সভা-সমাবেশ করার পাশাপাশি বুথ কমিটি গঠনের কাজও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বাড়াতে হবে সদস্য সংখ্যা। সেই কারণে অন্যান্য দলের নেতারা যাঁরা বিজেপিতে আসতে চাইছেন, তাঁদের জন্য জায়গা খুলে দিতে হবে। তাঁর কথায়, সংগঠনে লোক না বাড়াতে তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করা যাবে না।
অমিত শাহ বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাংলা-জয়ের নীল নকশা তাঁর তৈরি। শুধু সেই নীল নকশার বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে। তাহলেই কেল্লাফতে। বা্ংলা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হটিয়ে দেওয়ার কাজ অনেকটাই এগিয়ে নেওয়া যাবে। প্রথম ধাক্কাটা দেওয়ার পরই নড়বড়ে হয়ে যাবে পুরো টিম তৃণমূল। অর্থাৎ তৃণমূলে ভাঙন ধরানো- বিজেপির আরও একটি মোক্ষম উদ্দেশ্য।