‘টি-টোয়েন্টি’র ধাঁচে ‘টিম-২৫’! পঞ্চায়েত নির্বাচনে মুকুল-বধের ‘ফর্মুলা’ তৈরি মমতার
তৃণমূল কংগ্রেস পঞ্চায়েত যুদ্ধ-জয়ের রূপরেখা তৈরি করে ফেলল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য একেবারে আলাদা ফর্ম্যাট তৈরি করেই এবার ময়দানে নামছে তৃণমূল কংগ্রেস।
পঞ্চায়েত নির্বাচন জিততে রণকৌশল তৈরি করে ফেলল তৃণমূল কংগ্রেস। সম্প্রতি কোর কমিটির বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর নির্দেশ মেনেই উত্তর ২৪ পরগনা তৃণমূল কংগ্রেস পঞ্চায়েত যুদ্ধ-জয়ের রূপরেখা তৈরি করে ফেলল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য একেবারে আলাদা ফর্ম্যাট তৈরি করেই এবার ময়দানে নামছে তৃণমূল কংগ্রেস।
এবার 'ভোট-ম্যানেজার' মুকুল রায় নেই দলে। তিনি এবার রয়েছেন বিপক্ষ শিবিরে। তাই অতি সাবধানী তৃণমূল। কোনওভাবেই বিপক্ষকে এক চুল জমি ছাড়তে চান না তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা। লক্ষ্য স্থির রাখতে আগে থেকেই নতুন টিম তৈরি করে ফেলল উত্তর ২৪ পরগনা তৃণমূল। প্রতি বুথে 'টিম-২৫' নামে একটি কমিটি তৈরি করা হচ্ছে। সেই টিমই এবার বুথে বুথে নির্বাচন পরিচালনা করবে। জেলায় বিরোধীদের ধুয়ে-মুছে সাফ করে দিতে 'টি-২০' ফর্মুলাই নিয়েছেন মমতা।
একেবারে 'টি ২০'-র কায়দায় দল সাজানো হয়েছে। পঞ্চায়েতের আগে সংগঠন ঢেলে সাজাতে টেস্ট ম্যাচের কৌশল নয়, 'টি ২০'-তেই ভরসা রাখছে দল। আর এই নয়া পদ্ধতিতেই জয় হাসিল করার কৌশলই নিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। কম সময়ে বাছাই প্লেয়ার নামিয়ে বিরোধীদের কুপোকাৎ করাই তৃণমূলের মূল লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যপূরণে এই টিমে রাখা হচ্ছে প্রতিবুথের বাছাই নেতা, সক্রিয় কর্মী, এলাকার তৃণমূলপন্থী বুদ্ধিজীবীদের।
২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে ৩৩টির মধ্যে ২৭টিতে জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বাকি ছ'টি আসনের মধ্যে তিনটি কংগ্রেস, তিনটি সিপিএমের দখলে গিয়েছে। সেই ফলের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে এবার এই জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের রূপরেখা তৈরি করতে বদ্ধপরিকর তৃণমূল। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ, জেলায় ২২টির মধ্যে ২০টি পঞ্চায়েত সমিতির, ২০০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৭৯টি তৃণমূলের দখলে।
এই আসনগুলি ধরে রাখা এবার তৃণমূলের কাছে চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েই উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল পঞ্চায়েতের কৌশল পরিকল্পনা রূপায়ণ করে ফেলেছে। জেলা সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, আমাদের 'টিম-২৫' অনুমোদন পেয়ে গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুমোদন করার পরই জেলায় প্রায় সাড়ে চার হাজার বুথে 'টিম ২৫' গঠনের কাজ চলছে।
এলাকার নেতা-কর্মী ছাড়াও শিক্ষক, অধ্যাপক, চিকিৎসক, সমাজসেবী, শিল্পী, কলাকুশলী, সংস্কৃতিবাণ মানুষদের এই টিমে রাখা হচ্ছে। আর এঁদের মধ্যে যিনি সবথেকে বেশি দূরদৃষ্টতাসম্পন্ন হবেন, তাঁকেই 'টিম ২৫'-এর নেতা নির্বাচন করা হবে বলে জানান জেলা সভাপতি।