পাহাড়ের মানুষের আবেগ নিয়ে রাজনীতি! গোর্খাল্যান্ড নিয়ে গুরুংকে সাবধান করলেন অনীত
গোর্খাল্যান্ড সব গোর্খাদের দাবি। এটা একটা আবেগ, একটা স্বপ্ন। সেই স্বপ্নকে উসকে দিয়ে পাহাড় অশান্ত করতে আমরা আর দেব না। পাহাড়ের মানুষ যেমন গোর্খাল্যান্ড চায়, তেমনই উন্নয়নও চায়।
পাহাড়ের মানুষের আবেগ কোনোরকম রাজনীতি করা যাবে না! গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুংকে গুরুংকে সাবধান করে দিলেন গোর্খা প্রজাতান্রির্ক মোর্চার প্রধান অনীত থাপা। তাঁর সাফ কথা, গোর্খাল্যান্ড নিয়ে কোনোভাবে অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না।
অনীতের কথায় গোর্খাল্যান্ড এক আবেগের নাম। তাই গোর্খাল্যান্ডরে ইস্যু করে পাহাড়কে অশান্ত করা যাবে না। জিটিএর চিফ এক্সিকিউটিভ অনীত থাপা জানিয়েছেন, জিটিএ চুক্তি প্রত্যাহার একটি অর্থহীন শিশুসুলভ সিদ্ধান্ত। এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা পাহাড়়ে অন্য খেলা খেলতে চাইছে। কিন্তু তা আমরা হতে দেব না।
জিটিএ চিফ এক্সিকিউটিভ অনীত থাপা জানিয়েছেন, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা জিটিএ চুক্তি থেকে তার অধিকার প্রত্যাহার করে নিলেও জিটিএ-তে তার কোনও প্রভাব পড়বে না। এটা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা বা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরির একটি রাজনৈতিক স্টান্ট। আর তিনি যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা নিতান্তই হাস্যকর।
তিনি এই মর্মে আরও বলেন, দীর্ঘদিন জিটিএ পরিচালনা করেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। ওই দলের সুপ্রিমো বিমল গুরুং জিটিএ-র চিফ এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান ছিলেন। এখন তাঁরা বলছেন, জিটিএ কোনওভাবেই গোর্খাদের উন্নয়নের জন্য কাজ করেনি। তাহলে কাজ করেনি গোর্খ জনমুক্তি মোর্চা। কিন্তু তারা কাজ করছেন। পাহাড়ের গোর্খা প্রজাতির মানুষ নিশ্চয় বুঝবেন সে কথা।
অনীত থাপা বলেন, গোর্খাল্যান্ড সব গোর্খাদের দাবি। এটা একটা আবেগ, একটা স্বপ্ন। সেই স্বপ্নকে উসকে দিয়ে পাহাড় অশান্ত করতে আমরা আর দেব না। পাহাড়ের মানুষ যেমন গোর্খাল্যান্ড চায়, তেমনই উন্নয়নও চায়। গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে পাহাড়ে কোনও হিংসাত্মক ক্রিয়াকলাপ আর চলবে না।
তিনি বলেন, মনে রাখবেন, কোনো বিজেপি নেতার বক্তব্যই গোর্খাল্যান্ডের পক্ষে নয়। শুধু উসকে দেওয়া রাজনীতি করছে বিজেপি। তাই গোর্খারা আর ভুল বুঝবহেন না প্রতারিত হবেন না। আমরা চাই গোর্খাদের উন্নয়ন। আমরা উন্নয়ন করব। আমাদের প্রতি বিশ্বাস রাখুন।
উল্লেখ্য, শুক্রবার জিটিএ চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি জিটিএ চুক্তি থেকে সই প্রত্যাহার করে নেন। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার তরফে জিটিএ চুক্তি প্রত্যাহারের বিষয়টি জানিয়ে ভারতের রাস্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দেওয়া হয়। তারপর শুক্রবার এক সাংবাদিক সম্মেলন করে বিষয়টি জানান দলের সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি।
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরির বক্তব্য, "আমরা আমাদের সই প্রত্যাহারের মাধ্যমে সমর্থন উঠিয়ে নিলাম। এর পরে আগামীদিনে এই জিটিএ-এর ভাগ্য সম্পূর্ণভাবে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে। আমাদের কোনও দায় থাকবে না।" গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার এই সিদ্ধান্তের পর আশঙ্কা তৈরি হয়, এটা পাহাড়কে ফের উত্তপ্ত কররা একটা চাল নয় তো! কেননা সম্প্রতি গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে ফের জোটবদ্ধ হচ্ছে পাহাড়ের দলগুলি।