আফগানিস্তানের জাতীয় মহিলা ভলিবল খেলোয়াড়কে হত্যা করল তালিবানরা, বাকি অ্যাথলিটরা প্রবল আশঙ্কায়
আফগানিস্তানের দখল তালিবানদের হাতে চলে যাওয়ার পর সবচেয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন মহিলারা। কিছু মহিলা ক্রীড়াবিদ দেশ ছেড়ে পালাতে সক্ষম হলেও যাঁরা পারেননি, তাঁদের প্রতিদিন প্রতি মুহূর্ত কাটছে প্রবল আশঙ্কা আর উৎকণ্ঠার মধ্যে। তারই মধ্যে সামনে এল এক নারকীয় ঘটনা। ফুলের মতো ফুটফুটে মাহজাবিন হাকিমিকে শিরশ্ছেদ করল তালিবানরা। অপরাধ? মাহজাবিন আফগানিস্তানের মহিলা জুনিয়র দলের হয়ে ভলিবল খেলতেন। চলতি মাসের গোড়াতেই তাঁকে হত্যা করে।
Source Independent Persian: https://t.co/7bHSVpbWjo
— Emily Schrader - אמילי שריידר (@emilykschrader) October 20, 2021
আফগানিস্তানের এক ভলিবল কোচ পার্সিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্টকে জানিয়েছেন, মাহজাবিনকে চলতি মাসের গোড়ার দিকে হত্যা করা হলেও তাঁর পরিবারের সদস্যদের তালিবানরা হুমকি দিয়ে বলে এই ঘটনার কথা কাউকে না জানাতে। মাহজাবিন কাবুল মিউনিসিপ্যালিটি ভলিবল ক্লাবের অন্যতম সেরা ভলিবল খেলোয়াড় ছিলেন। জাতীয় জুনিয়র দলের হয়েও খেলেছেন। কয়েকদিন আগে মাহজাবিনের নিথর দেহের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তারপরই ঘটনার কথা সকলে জানতে পারেন।
আফগানিস্তানের মহিলা ভলিবল দলের কোচের কথায়, অগাস্টে তালিবানরা আফগানিস্তান দখলের আগে মাত্র দুজন ভলিবল খেলোয়াড় দেশ ছেড়ে পালাতে পেরেছেন। যাঁরা পালাতে পারেননি তাঁদের মধ্যে ছিলেন মাহজাবিন, যাঁকে প্রাণ দিতে হল তালিবানি অত্যাচারে। জানা গিয়েছে, আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার পর মহিলা অ্যাথলিটদের সন্ধানে নেমেছে তালিবানরা। সেই ক্রীড়াবিদদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। এমনকী সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়দের পরিবারের সদস্যদেরও সন্ধান চালাচ্ছে তালিবানরা। আফগানিস্তানের মহিলা ভলিবল দলের যে খেলোয়াড়রা দেশ বা বিদেশে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন এবং সংবাদমাধ্যমের সামনে এসেছেন তাঁদের এবং তাঁদের পরিবারের লোকজনদের খুঁজছে তালিবানরা। স্বাভাবিকভাবেই মহিলা ক্রীড়াবিদ ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা দিন কাটাচ্ছেন চরম আশঙ্কা আর উৎকণ্ঠায়। হতাশা আর ভয়কে সঙ্গী করে। কেউ অন্যত্র পালিয়ে গিয়েছেন, কেউ আত্মগোপনে বাধ্য হয়েছেন।
১৯৭৮ সালে আফগানিস্তানের মহিলা ভলিবল দল গঠিত হয়। মহিলাদের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তাও লাভ করে ভলিবল। যদিও সেই জনপ্রিয়তায় আঘাত হানতে মাহজাবিনকে হত্যা করে আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি করল তালিবানরা। আফগানিস্তানের মহিলা ভলিবল দলের সদস্যরা দেশ ছাড়তে চেয়ে আন্তর্জাতিক মহলের সাহায্য চাইলেও সফল হননি। গত সপ্তাহে ফিফা ও কাতার সরকার আফগানিস্তানের জাতীয় মহিলা দলের ফুটবলার ও তাঁদের পরিবারের সদস্য-সহ প্রায় ১০০ জনকে উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে আফগানিস্তান থেকে। তালিবানরা ছাত্রীদের স্কুলে যেতেও দিচ্ছে না। খেলাধুলো, রাজনীতি ও সমাজের নানা ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ বন্ধ করে দিয়েছে তালিবানরা।