কলকাতায় কঙ্কালের টঙ্কার: মিস্ট্রি তো ছিলই, এবার যোগ হল কেমিস্ট্রিও; রাখে মিডিয়া মারে কে !
কঙ্কালকাণ্ড নিয়ে এত হইহই রইরই কেন বলুন তো? ইতিহাসে কি এমন ঘটনা এই প্রথ্যমবার ঘটল? তা তো নয়.. আসলে বুঝলেন না, টপিক চাই টপিক | এখন তো আবার দেখলাম ভৌতিক আবহের মধ্যে যৌনতার সুরসুরিও দেওয়া হচ্ছে | মানে এক খবর-ব্যাপারী গোষ্ঠিকে দেখলুম বললেন ওই দে পরিবারের সদস্যরা নাকি একে অপরের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে আবদ্ধ ছিলেন | কি কাণ্ড ভাবুন তো ! মিস্ট্রি তো ছিলই, এবার তাতে কেমিস্ট্রিও যোগ হল |
কিন্তু
রহস্যের
কানাগলিতে
ঘুরতে
ঘুরতেও
মনে
একটা
প্রশ্ন
এল
|
মিডিয়ার
কি
এখন
এটাই
কাজ?
যদি
অস্বাভাবিক
কিছু
হয়েও
থাকে
কলকাতার
ওই
হতভাগ্য
পরিবারটিতে,
তার
জন্যে
কি
আলফ্রেড
হিচকক
থেকে
ফেলুদা,
সবাইকে
খবর
দিতে
হবে?
মানুষের মন বড়ই অদ্ভূত জিনিস |
তার রহস্যভেদ করে, এমন প্রযুক্তি আজ আবিষ্কৃত হয়নি | তাই সেই মনের অদ্ভূতুড়ে দিকগুলো নিয়ে বিনোদন করা কোনো কাজের কথা নয় | যদি রহস্যের সমাধান হল তো ভালো, নইলে গোয়েন্দা এবং পরিবারটিকে ছেড়ে দেওয়াই ভালো | কেন কারো জীবনের দুঃখ, তাঁদের প্রাইভেসিকে ফালাফালা করা? কোন মহাভারত রচিত হবে তাতে?
রহস্যকে মাখোমাখো করে ব্যক্তিগত পরিসরকে বারোয়ারি করে তোলা আমাদের মিডিয়ার কাছে জলভাত | কিন্তু আমরাই বা তা তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করি কেন? একঘেয়ে জীবনে মশলার অভাব বলে? যদি আমাদের ঘরোয়া ফ্যাকড়া কাল অন্য কেউ এইভাবে তরিবত করে খায়, আমাদের ভালো লাগবে?
মিডিয়ার বাড়াবাড়ি আজ এমন জায়গায় পৌঁছেছে, যে তারাই এখন দৈনন্দিন এজেন্ডা সেট করে দেয় | কিন্তু সেই এজেন্ডাকে চোখ বুজে তাড়া করতে গিয়ে আমরা কোনো বড় অন্যায় করে ফেলছি না তো? মোদী-মমতা হাত মিলিয়েছেন, বাংলাদেশ সীমান্ত লীলা সমাপ্ত, সামনে নির্বাচন নেই শিগগিরই, অতএব কঙ্কালের টঙ্কার | আর আমরা তাতেই মজেছি | আহা রে, বাহা রে করছি |
অবশ্য একটা পরিবর্তন যে হয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই | পশ্চিমবঙ্গে আগে কঙ্কাল বেশিরভাগই পাওয়া যেত গ্রামবাংলায়, মাটির নিচে | এখন তা পাওয়া যাচ্ছে খোদ কলকাতায় ফ্ল্যাটের মধ্যে | কঙ্কালের টঙ্কার এখন এ রাজ্যে যে শহরকেন্দ্রিক, সে নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই |