গিলগিট-বালতিস্তানকে নিজেদের পঞ্চম প্রদেশ বানানোর তালে থাকা পাকিস্তান কাশ্মীর নিয়ে চোখ পাকাচ্ছে?
কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ তকমা দানকারী সংবিধানের ৩৭০ নম্বর ধারা বিলোপ করার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছে পাকিস্তান। ভারতকে কাশ্মীরে দখলদারি করার অভিযোগ তুলেছে তারা।
কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ তকমা দানকারী সংবিধানের ৩৭০ নম্বর ধারা বিলোপ করার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছে পাকিস্তান। ভারতকে কাশ্মীরে দখলদারি করার অভিযোগ তুলেছে তারা। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চেও নয়াদিল্লিকে কোণঠাসা করার জন্যেও উঠেপড়ে লেগেছে ইসলামাবাদ।
কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে ভারতকে নিশানা করলেও পাকিস্তানের অধীনে রাজ্যটির যে অংশ রয়েছে, তার হাল হকিকত নিয়ে ইসলামাবাদের কর্তারা যে খুব স্বস্তিতে নেই, তার পরিচয়ও পাওয়া গিয়েছে অনেকবার। তারই একটি বিশ্লেষণ করা যেতে পারে এই অবকাশে।
গিলগিট-বালতিস্তানে প্রবল ক্ষোভের মুখোমুখি হয়েছে পাকিস্তান
এই বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের 'অমীমাংসিত স্বাধীনতা সংগ্রাম' উদযাপন করা হয় সমগ্র পাকিস্তান জুড়ে। আবার, ওই একই দিনে, পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের লাগোয়া গিলগিট-বালতিস্তানে পাকিস্তানেরই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সম্পন্ন হয়, ওই অঞ্চলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমে সেই প্রতিবাদ এবং পাশতুন তাহাফুজ সামাজিক আন্দোলনের গতিবিধির খবর চেপে দেওয়া হয়। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে ২০১৮ সালের মে মাসে তৎকালীন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসি গিলগিট-বালতিস্তানের আইনসভায় গিলগিট-বালতিস্তান সংস্কারমূলক প্রস্তাব আনলে স্থানীয় মানুষের মধ্যে প্রবল ক্ষোভ দেখা দেয়। এমনকি, পুলিশকেও ডাকতে হয় সেই ক্ষোভ সামাল দেওয়া জন্যে। সংস্কারমূলক প্রস্তাবটি অন্তর্নিহিত অর্থ ছিল গিলগিট-বালতিস্তানকে পাক প্রধানমন্ত্রীর করুণার পাত্র করে রাখা আর ইসলামাবাদের ইচ্ছের উপরে ওই অঞ্চলের শাসনপদ্ধতির মতলব মোটেই ভাল চোখে দেখেনি স্থানীয়রা। এর আগে ২০০৯ সালে গিলগিট-বালতিস্তানের ক্ষমতায়ন এবং স্ব-শাসনের বিধি আনে পাকিস্তান। আর তার এক দশকের মধ্যেই ওই অঞ্চলে নিজেদের ইচ্ছে চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগে প্রবল প্রতিবাদের সম্মুখীন হয় ইসলামাবাদ সরকার।
চিনও চাপে রেখেছে পাকিস্তানকে গিলগিট-বালতিস্তানকে পঞ্চম প্রদেশ বানানোর জন্যে
ইসলামাবাদ গিলগিট-বালতিস্তানে সংস্কার আনতে বাধ্য হয় সেখানকার জনসাধারণের চাপে যাদের দাবি ছিল ওই অঞ্চলকে পাকিস্তানের পঞ্চম প্রদেশ হিসেবে স্থাপিত করা। এমনকি নিজেদের সিপিইসি প্রকল্পের সুরক্ষার কারণে চিনও পাকিস্তানকে ওই একই চাপ দিতে থাকে কারণ তাদের প্রকল্পটি গিলগিট-বালতিস্তান এলাকা দিয়েই পাকিস্তানের মাটিতে ঢুকেছে।
পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের মতো গিলগিট-বালতিস্তানের নিজস্ব প্রশাসনিক কাঠামো কেন থাকবে না সেই নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে আর এই নিয়ে তৈরী হয়েছে আইডেন্টিটির সঙ্কটও। কিন্তু অন্যদিকে, আরেকটি মত হচ্ছে গিলগিট-বালতিস্তানকে পাকিস্তানের পঞ্চম প্রদেশ ঘোষণা করলে তা আখেরে কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে আরও বিপাকে ফেলবে পাকিস্তানকেই। পাকিস্তানের শাসকরা এই ডামাডোলের মধ্যে থেকে কোনও সঠিক পরিত্রাণের পথ এখনও পাননি।
কাশ্মীর নিয়ে ভারতকে তাঁরা চোখ রাঙান কোন মুখে?