জিন্নার মূর্তি ধ্বংস পাকিস্তানে, ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের
জিন্নার মূর্তি ধ্বংস পাকিস্তানে, ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের
পাকিস্তানের (Pakistan) মাটিতেই সেদেশের জনক মহম্মদ আলি জিন্নার (MA Jinnah) মূর্তি ধ্বংস করে দেওয়ার মতো চাঞ্চল্যকর ঘটনা। রবিবার এই ঘটনা ঘটলেও, সোমবার এই ঘটনার কথা সামনে আনে সেদেশর সংবাদ মাধ্যম। অস্থির বালোচিস্তান (Balochistan) প্রদেশের উপকূলের গদর শহরে বালোচ জঙ্গিরা বোমা দিয়ে এই মূর্তি ধ্বংস করে দেয় বলে জানিয়েছে সেখানকার প্রশাসন।
জুনে বসানো হয় মূর্তিটি
গত জুন মাসে মেরিন ড্রাইভে মূর্তিটি বসানো হয়েছিল। জায়গাটিকে নিরাপত্তার দিক থেকে নিরাপদ অঞ্চল হিসেবেই বিবেচনা করা হত। কিন্তু সেই জায়গাতেই রবিবার বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয়। জানিয়েছে পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম। বিস্ফোরণে মূর্তিটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে বলেই জানানো হয়েছে সেই রিপোর্টে।
বিস্ফোরণে দায় স্বীকার
পাকিস্তানে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন বালোচ রিপাবলিকান আর্মির এক মুখপাত্র বাবঘর বালোচ এই বিস্ফোরণে তাদের সংগঠনের যুক্ত থাকার দাবি করেছেন। বিস্ফোরণ নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে গদরের ডেপুটি কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত মেজর কবীর খানকে উদ্ধৃত করেছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম। গদরের ডেপুটি কমিশনার জানিয়েছেন, জঙ্গিরা পরিকল্পনা করেই জিন্নার মূর্তি ধ্বংস করেছে। জঙ্গিরা এলাকায় পর্যটক হিসেবে ঢুকেছিল বলে দাবি করেছেন তিনি।
অপরাধীদের শীঘ্রই ধরা হবে
গদরের ডেপুটি কমিশনার জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত বিস্ফোরণের ঘটনায় কাউতে গ্রেফতার করা না গলেও, দু-এক দিনের মধ্যে তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। সব দিক থেকেই এই বিস্ফোরণের বিষয়টিকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরাধীকে শীঘ্রই ধরা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আগে জিন্নার বাড়িতে বিস্ফোরণ
বালোচিস্তানের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বর্তমান সেনেটর সরফরাজ বুগতি টুইট করে বলেছেন, গদরে কোয়াদ-ই-আজমের মূর্তি ধ্বংসের অর্থ হল পাকিস্তানের মতাদর্শের ওপরে আক্রমণ। যড়যন্ত্রকারীদের যথাযোগ্য শাস্তির দাবি তুলেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, জিয়ারতে জিন্নার বাড়িতে হামলায় যেভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল এবারও সেইভাবেই দেওয়া হোক।
প্রসঙ্গত ২০১৩ সালে বালোচ জঙ্গিরা জিয়ারতে ১২১ বছরের পুরনো একটি বাড়ি, যা জিন্না বাসভবন হিসেবে ব্যবহার করতেন, তাতে বিস্ফোরণ ঘটায়। গুলি চালায়, চারঘন্টা ধরে সেখানে আগুন লাগিয়ে তছনচ করে দেয়। সেখানে ধারা আসবাবপত্র এবং স্মারক ধ্বংস করে দেয়। জিন্না শেষ কয়েকবছর এই বাড়িতেই কাটিয়েছিলেন, সেই সময় তিনি যক্ষায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরে বাড়িটেকে জাতীয় স্মারক হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
১৮৭৬ সালের ২৫-এ ডিসেম্বর জন্ম জিন্নার। তিনি অল ইন্ডিয়া মুসলিম লিগের নেতা হিসেবে কাজ করেছে ১৯১৩ সাল থেকে ১৯৪৭-এর ১৪ অগাস্ট পাকিস্তান তৈরির সময় পর্যন্ত। পরে তিনি ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল হিসেবেও কাজ করেছেন। প্রসঙ্গত ১৯৪৮-এ মৃত্যু হয় জিন্নার।