সভা তুমি কার! মমতার না আন্নার?
অসুস্থ নাকি নাখুশ? প্রশ্ন উঠছে সে নিয়ে। আন্না শিবিরের তরফে জানানো হয়েছে এই জনসভা করার জন্য আরও পরিকল্পনার দরকার ছিল। আজ ছুটির দিন নয়, আন্নার পক্ষে প্রচণ্ড গরম, মানুষের কথা ভেবে সন্ধ্যাল সমাবেশ করা যেত, তাহলে লোক আসত, এমন নানা বিষয়ে তোলা হয়েছে। যাতে স্বভাবতই মনে করা হচ্ছে আন্না শিবির কোনও কারণে খুব একটা খুশী নয় তৃণমূলের প্রতি।
এদিকে আন্নার জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে তৃণমূল জাতীয় স্তরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিল। সে নিয়ে যথেষ্ট প্রচারও চালানো হয়েছিল। বিভিন্ন রাজনৈতিক শিবিরের নজরেও ছিল এদিনের মমতা-আন্নার জনতন্ত্র সমাবেশ। সেদিক থেকে দেখতে গেলে মমতা স্পষ্টভাবে কিছু না বললেও আন্নার অনুপস্থিতিতে তিনি যে যথেষ্টই বিব্রত তা বোঝা গিয়েছে।
কেউ সঙ্গে থাকুক বা না থাকুক যে লড়াই শুরু করেছি তা জারি থাকবে : মমতা
এর পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে, সভাটি আসলে কার তা নিয়েও। কারণ আন্না শিবিরে বলা হচ্ছে তৃণমূলের সমাবেশে পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। এদিকে তৃণমূল সুপ্রিমো এদিন বক্তব্য রাখতে উঠে বলেন, এটা তৃণমূলের সভা না, আন্নাজির সমাবেশ। সামনে প্রচুর কাজ , ওকে সম্মান করি তাই ওনার আমন্ত্রণেই সব কাজ ফেলে দিল্লি এসেছি। কথা দিয়েছিলাম, কথা রেখেছি। আমি কথার খেলাপ করি না। মূলত দু'দলই সভায় দায়িত্ব একে অপরের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে চাইছে।
আমি কথার খেলাপ করি না, অর্থাৎ আন্না যে কথা দিয়েও কথা রাখেননি তা বোঝাতে চেয়েছেন মমতা। সভা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগে পর্যন্তও সমাবেশে আন্নার উপস্থিত থাকার কথা ছিল। অথচ হঠাৎ এমন কী হল যার জন্য শেষ মুহূর্তে আন্নার তরফে জানানো হল, তিনি অসুস্থতার কারণে সভায় যেতে পারবেন না। তবে কি রাজনৈতিক মঞ্চে মমতার সঙ্গে দাঁড়াতে চাইছেন না আন্না, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও।
মমতা এদিন বলেন , এই মঞ্চ রাজনীতির মঞ্চ ছিল না। শুধু মানুষের কাছে কিছু বার্তা দেওয়ার ছিল। যদিও এই সমাবেশ নিয়ে প্রচারের সময় তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছিল এই মঞ্চ থেকেই নির্বাচনী প্রচারের পরবর্তী নীতি ঠিক করে দেবেন আন্না। এর পরেও কী আন্নার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় থাকবে?
মমতার জাতীয় স্তরের প্রথম সমাবেশই যে কার্যত সুপার ফ্লপ তা অনায়াসেই বলা যায়। মাঠে হাতে গোনা লোক। কোনও প্রাণই ছিল না সভায়। বাংলার বাইরে লোক টানতে দলের ব্যর্থতাকে ঢাকতে মমতা বললেন, এইধরণের সভায় বাইরে থেকে লোক আনাটাই রেওয়াজ. আমরা তা করতে চাইনি, করিওনি। সাধারণ মানুষের কর্মব্যস্ততার মধ্যেই এসেছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই। এ বলা ছাড়া আর কোনও গতিও ছিল না মমতার। কারণ মমতার শ্রদ্ধেয় আন্নাজি এভাবে যে তাকে ডোবাবেন তা তো আর আগে বুঝতে পারেননি দিদি। আজ তাই কিছুটা দিশাহীন পরিবর্তনের কান্ডারি।