মরিয়া কংগ্রেস, কেরলের নির্বাচনই গড়ে দিতে পারে রাহুল গান্ধীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ
পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি আজ কেরলে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ভোটগ্রহণ। সেরাজ্যের ১৪০টি আসনে একটি দফাতেই নির্বাচন সম্পন্ন হবে। এই আবহে সেরাজ্যে রবিবারই ছিল প্রচারের শেষ দিন। এবং কেরলের ভোটারদের মন জয় করার শেষ চেষ্টায় রাহুল গান্ধীকে সেদিন দেখা গিয়েছিল ওয়ানাডের থিরুনেল্লির মন্দিরে গিয়েছিলেন। যেন শেষ চেষ্টায় বিজেপির ঝুলিতে যেতে চলা 'হিন্দু ভোটব্যাঙ্ক'কে নিজেদের দিকে টেনে বামফ্রন্টকে ঠেকানো।
২০১৯-এ কংগ্রেসকে ভরসা জুগিয়েছিল কেরল
২০১৯ সালের লোকসভায় কেরেলের ২০টি আসনের ১৯টিতেই জিতেছিল কংগ্রেস। গোটা দেশে মুখ থুবড়ে পড়লেও এই রাজ্যে কংগ্রেস 'হাত' তুলে দাঁড়াতে পেরেছিল। যে রাহুল গান্ধী নিজে আমেঠিতে স্মৃতি ইরানির কাছে হেরেছিলেন, তিনি নিজের সম্মান বাঁচিয়ে কেরলের ওয়ানাড থেকে লোকসভায় নির্বাচিত হন। আর এবার সেই রাজ্যেই বিধানসভা নির্বাচন।
রাজ্যে পালাবদলের আশা দেখেছিল কংগ্রেস
লোকসভা নির্বাচনের পর রাজ্যে পালাবদলের আশা দেখা কংগ্রেস অবশ্য জোর ধাক্কা খেয়েছিল ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত স্থানীয় নির্বাচনে। একপেশে নির্বাচনে সিপিএম-এর সামনে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি কংগ্রেস। তাছাড়া বাম-িবরোধী ১৭ শতাংশ ভোট বিজেপির ঝুলিতে যাওয়ার জেরেও জখম হয় কংগ্রেসের স্বপ্ন। এই আবহে কেরলের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করেছিলেন রাহুল গান্ধী নিজে।
'বন্ধু' বাম যখন প্রতিদ্বন্দ্বী
যে রাজ্যে থেকে তিনি সংসদে গিয়েছেন, সেই রাজ্যে কংগ্রেসের সরকার গঠন করানোর লক্ষ্যে উঠে পড়ে লেগেছিলেন রাহুল গান্ধী। কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি বর্তমানে দলের সাফল্য মরিয়া। এবং এরজন্যই তিনি বামজোটকে আরএসএস-এর সঙ্গে এক আসনে বসাতেও দ্বিধাবোধ করেননি। প্রসঙ্গত, কেরলে বামেদের বিরুদ্ধে লড়লেও অসম, তামিলনাড়ু, বাংলায় বামেদের সঙ্গে হাত মিলিয়েই ভোটে লড়ছে কংগ্রেস। তবে কেরল যেন কংগ্রেসে কাছে প্রেস্টিজ ফাইট। রাহুল গান্ধীর জন্য যেন অস্তিত্বের লড়াই।
আশার আলো দেখিয়েও মুখ ফেরাচ্ছে কেরল
যেসকল রাজ্যে ভোটগ্রহণ হচ্ছে, সেগুলির মধ্যে একক দল হিসেবে কেরলে কংগ্রেসের জয়ের সম্ভাবনা সবথেকে প্রবল। তবে গতবছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত স্থানীয় নির্বাচনের পরই ঘুরতে থাকে হওয়া। বিভিন্ন সমীক্ষাকে যদি মেনে নেওয়া হয়, তাহলে এবার কেরলে ফিরতে চলেছে বামজোট। আর তা হলে এই প্রথমবার কেরল দেখবে লাগাতার দুই দফা কোনও একটি দলই মসনদে বসছে।
কেরলের উপর নির্ভর করছে রাহুলের ভবিষ্যৎ
বর্তমানে দেশে কংগ্রেস পাঁচটি রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে। তার মধ্যে একক দল হিসেবে মাত্র তিনটি রাজ্যেই ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস। এই আবহে কেরলে কংগ্রেসের জয় খুব প্রয়োজন। শুধুমাত্র কংগ্রেসের ভবিষ্যতের জন্য নয়, এই জয় দলের অন্দরে রাহুল গান্ধীর দর বাড়ানোর পক্ষেও প্রয়োজন। আর এই লক্ষ্যেই কেরলে বহু আগে থেকে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে প্রচার শুরু করেছিল কংগ্রেস। তাঁর পশ্চিমবঙ্গে একবারও না আসতে পারার নেপথ্যে রয়েছে কেরলে তাঁর ব্যস্ততা। রাহুল গান্ধী নিজেকে এখন দক্ষিণ ভারতের বলে দাবি করছেন। তবে তাঁর এই আবেগ উস্কে দেওয়ার ছক কাজে লাগবে কি না, তা জানা যাবে ২ মে। আর এর ওপরই নির্ভর করছে দলের সভাপতি পদে রাহুল গান্ধীর পুনঃনির্বাচন।