প্রতিশোধ নিচ্ছে প্রকৃতি, হিমালয় গ্রাসে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে যোশীমঠ, সতর্ক করলেন ভূবিজ্ঞানীরা
প্রতিশোধ নিচ্ছে প্রকৃতি, হিমালয় গ্রাসে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে যোশীমঠ, সতর্ক করলেন ভূবিজ্ঞানীরা
প্রকৃতির প্রতিশোধ। মানুষের নির্মম আচরণে বীতশ্রদ্ধ প্রকৃতি এবার প্রতিশোধ নিতে শুরু করেছে। যোশীমঠে একের পর এক বাড়িতে ফাটল ধরার ঘটনায় এমনই সতর্কবার্তা দিলেন ভূবিজ্ঞানীরা। তাঁরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, হয়তো যোশীমঠের আর কোনও অস্তিত্বই থাকবে না। এত বেশি করে পাহাড় কেটে বসতি গড়ে তোলা হয়েছে অবৈজ্ঞানিকভাবে যে সেটার ভার আর নিতে নারাজ হিমালয়। সেকারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
সংকটে যোশীমঠ
উত্তরাখণ্ডে অন্যতম স্থান যোশীমঠ। গত কয়েকদিন ধরে উত্তরাখণ্ডের এই যোশীমঠে একাধিক বাড়িতে ফাটল দেখা দিতে শুরু করেছে। প্রথমে ভূমকম্প বলে সন্দেহ করেছিলেন সকলে। কিন্তু তার পর থেকে সেই ফাটল ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে একাধিক বাড়িতে। ইতিমধ্যেই একাধিক বাড়ির অবস্থা বিপজ্জনক আকার নিয়েছে। তাঁদের বাড়ি খালি করে দিতে বলেছে প্রশাসন। একাধিক জায়গা থেকে সরে যেতে বলা হয়েছে বাসিন্দাদের। ফাটল কমা তো দূরের কথা ফাটল ওরও বাড়ছে যোশীমঠের একাধিক জায়গায়।
কী বলছেন ভূবিজ্ঞানীরা
যোশীমঠের এই পরিস্থিতি নিয়ে নতুন সতর্কবার্তা দিয়েছেন বিশিষ্ট ভূবিজ্ঞানী কালাচাঁদ সইন। তিনি জানিয়েছেন ক্রমশ নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে যোশীমঠ। তার প্রহর গোনা শুরু হয়ে গিয়েছে। একের পর এক বাড়িতে ফাটল সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। প্রকৃতি এক প্রকার প্রতিশোধ নিচ্ছে এই প্রকৃতি। পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তার অন্যতম কারণ অপরিকল্পিত নির্মাণ। তাই এখনই এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির উপায় নেই বলেই সতর্ক করেছেন তিনি।
অপরিকল্পিত নির্মাণই কারণ
উত্তরাখণ্ডে গত কয়েক বছর ধরে একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা গিেয়ছে। মেঘ ফেটে বৃষ্টি থেকে শুরু করে হড়পা বান। কী না ঘটেছে। েকদারে মেঘ ফেটে বৃষ্টির জেরে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে গোরীকুণ্ড। তার পরে আবার একের পর ভূমি ধসে বিপর্যস্ত গোটা রাজ্য। এই বছরে আবার শুরু হয়েছে যোশী মঠে ফাটল। তার অন্যতম কারণ অপরিকল্পিত নির্মাণ। গত কয়েক বছরে যোশীমঠে একাধিক হোটেল, লজ তৈরি হয়েছে। সবগুলোই হয়েছে পাহাড়কেটে অপিকল্পিত ভাবে। তৈরি হয়েছে রাস্তা। সেটাও একেবারেই পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছে। একের পর এক গাছ কেটে বাড়িঘর তৈরির কারণে আলগা হয়েছে মাটি। তার জেরেই একের পর এক জায়গায় ধস নেমেছে।
গতিপথ পরিবর্তন করছে নদী
কেদার যাওয়ার পথে যোশীমঠ অন্যকম তীর্থস্থান। উত্তরকাশীর আগেই আসে যোশীমঠ। এই যোশীমঠের পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে মন্দাকিনি। ভূবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গতকয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে দেশের একাধিক নদী একটু একটু করে গতিপথ পরিবর্তন করছে। মন্দাকিনীও সেইরকমই গতিপথ পরিবর্তন করতে শুরু করেছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা। আরেকটি দিকেও ইঙ্গিত করেছেন ভূবিজ্ঞানীরা। প্লেট পরিবর্তন। ইউরেশিয়ান প্লেটের নীচে থাকা ইন্ডিয়ান প্লেট ক্রমশ সরতে শুরু করেছে। তার জেরেও এই ফাটল দেখা দিতে পারে। তবে যোশীমঠের অবস্থা যে একেবারেই ভাল নয় তার ইঙ্গিত দিয়েছেন ভূবিজ্ঞানীরা। এমনকী শীঘ্রই এই পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা।