'শিনাকে ঘৃণা করতাম, কিন্তু আমি খুন করিনি', জেরায় জানালেন ইন্দ্রাণী মুখার্জী
মুম্বই, ৩০ আগস্ট : শিনা বোরা হত্যাকাণ্ডে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্যে গোলকধাঁধায় তদন্তকারী অফিসাররাও। শিনাকে খুনের অভিযোগ উঠেছে মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মা ইন্দ্রাণী মুখার্জীর বিরুদ্ধে। পুলিশ গ্রেফতারও করেছে তাকে। কিন্তু পুলিশি জেরায় ইন্দ্রাণী জানিয়েছেন,তিনি মেয়েকে সহ্য করতে পারতেন না ঠিকই, কিন্তু খুন তিনি করেননি। শিনার খুনের জন্য দায়ী তাঁর প্রাক্তন স্বামী সঞ্জীব খান্না।[ শিনা বোরা হত্যা কাণ্ড: খুন হওয়ার সময় ইন্দ্রাণীর 'খুব খুব ঘণিষ্ট' এক ব্যক্তির সন্তান শিনার গর্ভে ছিল!]
শিনা বোরা হত্যাকাণ্ডে ইন্দ্রাণীকে গ্রেফতারের পরই কলকাতা থেকে সঞ্জীবকেও গ্রেফতার করা হয়। প্রথমদিকে স়ঞ্জীব এই খুনের দায় নিতে অস্বীকার করলেও পরে পুলিশি জেরায় তিনি স্বীকার করেন, আর্থিক সাহায্যের লোভ দেখিয়ে ইন্দ্রানী এই অপরাধ কাজে তাকে জোর করে শামিল করেন। [শিনার দাদুই কি শিনার আসল বাবা? ধন্দে পুলিশ]
শনিবার ইন্দ্রাণী ও সঞ্জীবকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করে পুলিশ। কিন্তু এখনও বেশ কয়েকটি তথ্য নিয়ে ধোঁয়াশায় পুলিশ। তার মধ্যে অন্যতম হল ইন্দ্রাণীর সঙ্গে তার দুই সন্তান শিনা ও মিখেইলের অদ্ভুদ রাগ, ঘৃণা ও টানাপোড়েনের সম্পর্ক।
সবচেয়ে আশ্চর্যের এই রাগ বা ঘৃণা একতরফা ছিল না। ছেলেমেয়ে যেমন ইন্দ্রাণীকে অপছন্দ করতেন, ইন্দ্রাণীও শিনা ও মিখেইলকে ঘৃণার চোখেই দেখতেন। মায়ের সঙ্গে এই দুই সন্তানের সম্পর্ক ছিল শুধুই অবিশ্বাসের। [৬ মাস ধরে দিদির কঙ্কালের সঙ্গে বসবাস ভাইয়ের, খাবারও দিতেন নিয়মিত!]
পুলিশের কাছে ইন্দ্রাণী নিজের মুখে স্বীকার করেছেন শিনাকে ঘোরতর অপছন্দ করতেন তিনি। মিখেইলের সঙ্গেও সম্পর্ক অত্যন্ত তিক্ত ছিল। শনিবার মিখেইলকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। মিখেইল পুলিশকে জানায়, মা ইন্দ্রাণী মুখার্জী তাকে পুনের একটি মানসিক স্বাস্থ্য ক্লিনিকে তাকে ভর্তি করিয়ে দেন। সেখানে কয়েক মাস ধরে ছিলেন মিখেইল।
এদিকে রাহুল মুখার্জী যিনি শিনার সঙ্গে লিভ ইন রিলেশনে ছিলেন, গোপনে শিনার সঙ্গে বাগদানও করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে, তিনি নাকি শিনার পাসপোর্ট পাওয়ার পর ইন্দ্রাণীকে এবিষয়ে জিজ্ঞাসাও করেছিলেন। কারণ রাহুলকে ইন্দ্রাণী বলেছিলেন ইন্দ্রাণী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছেন। কিন্তু শিনার পাসপোর্ট পাওয়ার পর কেন তিনি পুলিশের কাছে যাননি সে নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। [শিনা বোরা হত্যাকাণ্ড : ঠিক কী ঘটেছিল সেদিন?]
রাহুল যদিও জানিয়েছেন, শিনা আচমকা নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পরে তিনি পুলিশের কাছে যখন প্রথমবার যান, সেখানে তাকে হেনস্থা হতে হয়। পুলিশের উপর হতাশা থেকেই আর পুলিশের কাছে পাসপোর্টের তথ্য জানাননি তিনি। কিন্তু পুলিশের দাবি. রাহুল এই তথ্য পুলিশকে আগে জানালে তদন্তে এত দেরি হত না। [খুন করে মৃতদেহের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক, গ্রেফতার কিশোর]
রাহুল ইন্দ্রাণী মুখার্জীর বর্তমান স্বামী পিটার মুখার্জী ও তাঁর প্রাক্তন স্ত্রীয়ের বড় ছেলে। শিনার পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার পর পিটার মুখার্জীকে বিষয়টি জানালেও পিটার ছেলের কথা বিশ্বাস করতে চাননি। কারণ ততক্ষণে ইন্দ্রাণী জানিয়ে দিয়েছিলেন, অন্য পাসপোর্ট নিয়েই শিনা মার্কিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন।