পেট্রোলের চেয়ে দামি জল, তেষ্টা মেটাতে কাঁদছে বন্যা বিধ্বস্ত অসম
পেট্রোলের চেয়ে দামি জল, তেষ্টা মেটাতে কাঁদছে বন্যা বিধ্বস্ত অসম
চারিদিকে থৈ ৈথ করছে জল। কিন্তু তেষ্টা মেটানোর উপায় নেই। এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে অসমে। যাকে বলে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে গোটা রাজ্য। এক ফোটা জলের জন্য হাহাকার করছেন মানুষ। পেট্রোলের থেকে দাবি এখানে পানীয় জল। মোটা টাকার বিক্রি হচ্ছে। অসমে বন্যার কারণে মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ১০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। ২৫ লক্ষের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাছাড় জেলা এবং শিলচর শহর।
বিপুল দামে বিকোচ্ছে জল
জলে ডুবে গিয়েছে ঘরবাড়ি। রাস্তাঘাট জল থৈ থৈ। কোমর সমান জল ঠেলে যেতে হচ্ছে রাস্তায়। ঘরবাড়ির অস্তিত্ব প্রায় মুছে গিয়েছে।এমন ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে অসমে। হাজার খানেক গ্রাম এখনও জলের তলায়। তাঁরা বুঝে উঠতে পারছেন না কীভাবে বাঁচবেন। আশ্রয় নিয়েছেন ত্রাণ শিবিরে। এত জলের মধ্যে থেকেও জলের জন্য হাহাকার শুরু হয়ে গিয়েছে। তেষ্টা মেটাতে হাহাকার করছে মানুষ। একলিটার জলের বোতল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। পেট্রোলের চেয়েও দামি হয়ে গিয়েছে জল। এমনই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে শিলচর শহর। একাধিক জায়গায় ড্রোনে করে পানীয় জল সরবরাহ করা হচ্ছে। চেন্নাই থেকে বিেশষ টিম নিয়ে আসা হয়েছে।
১৫০ টাকাট বিকোচ্ছে জলের বোতল
পানীয় জলের সংকট এতটাই চরমে উঠেছে যে শিলচর শহরে ২০ টাকার জলের বোতল ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেট্রোলের চেয়েও দামি হয়ে গিয়েছে পানীয় জল।তারমধ্যে বন্যার কারণে একাধিক জায়গায় বিদ্যুৎ নেই। সেকারণে পাম্পেও জল উঠছে না আবার জল ফিল্টারও করতে পারছেন না কেউ। জলের জন্য হাহাকার পড়ে গিয়েছে বন্যা বিধ্বস্ত শিলচর শহরে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনা নামানো হয়েছে। প্রায় ১২০ জন জওয়ান কাজ করছেন শিলচর শহরে। এছাড়া ইটানগর এবং ভূবনেশ্বর থেকে এনডিআরএফের বিশেষ দল নিয়ে আসা হয়েছে।
দেহ দাহ করার জায়গা নেই
জলের সংকটের পাশাপাশি শব দাহ করার জায়গারও অভাব দেখা দিয়েছে। শ্মশান সব ভেসে গিয়েছে বন্যার জলে। কারণ নদীর পাড়েই সাধারণত হয়ে থাকে দাহ করার জায়গা। সেগুলি সবই ডুবে গিয়েছে। শিলচরের বাসিন্দারা ভেবে পাচ্ছেন না কীভাবে তাঁরা দেহ দাহ করবেন। প্রিয়জনের দেহ আগলে বহুতলে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে অনেকজনকে। অনেকে দেহ নিয়ে নৌকায় চড়ে সমাধিস্থ করার খোঁজ করছেন। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন শিলচরের মানুষ।
পরিদর্শনে মুখ্যমন্ত্রী
এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। এনডিআরএফর বোটে করে তিনি দুর্গত এলাকায় পৌঁছে যান। সেখানে কথা বলেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। শিলচরের সাংসদ রাজদীপ রায় তাঁর সঙ্গে ছিলেন। এলাকা পরিদর্শনের পর তিনি জেলা প্রশাসনের আধিকারীকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। শেষে মুখ্যমন্ত্রী স্বীকার করে নিয়েছেন এতটাই বন্যা বিধ্বস্ত হয়েছে একাধিক জেলা যে প্রশাসন সর্বত্র পৌঁছতে পারেনি। ২৫ লক্ষের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বন্যায়।
অসমে বন্যায় বাড়ছে মৃতের সংখ্যা, জলবন্দি শিলচরের মানুষের কাছে ত্রাণ পাঠাতে ভরসা বায়ুসেনা