বিজেপি অন্দরে নবীন বনাম প্রবীন কোন্দল চরমে, বুঝিয়ে দিল বিহার নির্বাচনের ফল!
নয়াদিল্লি, ১১ নভেম্বর : বিহার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির কুৎসিত হারকে কেন্দ্র করে দলের অন্দরের নবীন বনাম প্রবীন লড়াইটা ফের একবার প্রকাশ্যে চলে এল। বিহার নির্বাচনে দলের ভূমিকা প্রসঙ্গে নেতৃত্বের দিকে আঙুল তুললেন দলের প্রবীন ও বরিষ্ঠ কয়েকজ নেতা। যদিও তার পাল্টা প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব।
মঙ্গলবারই, প্রাক্তন ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদবানী, দলের প্রাক্তন সভাপতি মুরলী মনোহর যোশী এবং প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা সহ বরিষ্ঠ কিছু বিজেপি সদস্য একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন, যেখানে দলের এই হারের পিছনে নাম না করে নরেন্দ্রী মোদী ও অমিত শাহর পথপ্রদর্শনকে আক্রমণ করা হয়।
আদবানী এবং অন্যান্য নেতারা প্রশ্ন তোলেন, "বিহারের হারের জন্য সবাই দায়ী বলা মানে কেউই এর জন্য দায়ী নয় তা নিশ্চিত করে বলা। সাম্প্রতিক হারের আসল কারণ হল গত বছর থেকে দলের পুরুষত্বহীন আচরণ।"
যদিও দলের বরিষ্ঠ সদস্যদের এই খোঁচার পাল্টা বিবৃতি দিয়েছে বিজেপি। ক্যাবিনেটের তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা দলের প্রাক্তন সভাপতি রাজনাথ সিং, বেঙ্কাইয়া নাইডু এবং নীতিন গড়কড়ি একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, প্রবীন সদস্যদের থেকে আসা যে কোনও পরামর্শ দল নিশ্চয়ই গ্রহণ করবে।
প্রবীনদের সমালোচনার পাল্টা জবাবে বিজেপির বিবৃতিতে বরিষ্ঠদের মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, অটল বিহারী বাজপেয়ী এবং লালকৃষ্ণ আদবানীই সেই দুই ব্যক্তি যারা সম্মিলিতভাবে দলের জয় ও পরাজয়ের জন্য দায়িত্ব গ্রহণ করার কথা বলে স্বাস্থ্যকর রাজনীতির নজির তৈরির কথা বলেছিলেন।
শুধু তাই নয়, এই নেতৃত্বের অধীনে যেখানে প্রবীনরা বিহার ও দিল্লির হারকে দেখিয়েছেন সেখানে বিজেপির বিবৃতিতে এই একই নেতৃত্বের অধীনে ঝাড়খণ্ড, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র এবং জম্মু ও কাশ্মীরে জয়ের উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, আন্দামান, কেরল এবং অসমের স্থানীয় নির্বাচনে বিজেপির জয়ের ঘটনাও উল্লেখ করা হয়েছে।
এই বিবৃতিতে বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, দিল্লি ও বিহার নির্বাচনের ফল আমাদের বিরক্ষে গিয়েছে। বিভিন্ন ফোরামে দল এনিয়ে পর্যালোচনা করবে। এমনকী বিহারের ফলের পর দলের খামতি মেটাতে দলের প্রবীন সদস্যদের সঙ্গেও আলোচনা করা হবে।
মোদী-আদবানীর মধ্যে যে একটা ঠাণ্ডা লড়াই চলছে তা বিহারের ফলের পর আরও তীব্রভাবে সামনে এল। বিহার বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন সকালে লালকৃষ্ণ আদবানীর জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর বাড়ি গিয়ে ফুলের তবক ও মালা দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু তাতে যে এই দুই চরম ব্যক্তিত্বের আভ্যন্তরীন শীতলতা যে দূর হয়নি তা আবারও ষ্পষ্ট হয়ে গেল।