আজ দীপাবলী, আলো-শব্দের উৎসব, শক্তির আরাধনায় ভক্তেরা
কলকাতা, ২ নভেম্বর : শক্তির আরাধনা, আলোর রোশনাই, হরেক রকম বাজির সমষ্টিই তো দীপাবলী। আজ শুভ দীপাবলী। কোথাও আলোর মেলা তো কোথাও আবার বাজির তারতম্যে চক্ষু চড়কগাছ। কিন্তু দীপাবলীতে বাজির শব্দমাত্রা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের বেঁধে দেওয়া ৯০ ডেসিবেলই থাকছে। তাই শব্দদানবের জ্বালাত অতিষ্ট না হয়েই আলো ও শক্তির আরাধনাতেই মনোনিবেশ করছে কলকাতা।
তবে দেশের অন্যান্য প্রদেশের সঙ্গে বাঙালিদের দীপাবলী পালনের একটা পার্থক্য রয়েছে। দীপাবলীতে যেখানে দেশের পূর্বভাগে অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গ, অসম ও ওড়িশার কিছু অংশ কালীপুজোয় মাতে সেখানে দেশের সর্বত্র ধন ও সিদ্ধির দেবদেবী লক্ষ্মী ও গণেশ ঠাকুরের পুজো করা হয়। কিন্তু দীপাবলীতেই কালীপুজো করা হয় কেন। কালীপুজোরও একটা ইতিহাস রয়েছে।
কালীপুজোর
ইতিহাস
হিন্দু
সমাজে
যে
সমস্ত
পুজো
হয়ে
থাকে
তা
কিন্তু
সবসময়
শাস্ত্র
মতে
হয়
না।
যেমন
বালগঙ্গাধর
তিলক
মহারাষ্ট্রে
প্রথম
গণেশ
পুজার
প্রচলন
করেন।
যা
এখনও
মহারাষ্ট্রে
অত্যন্ত
সাড়ম্বরে
পালন
করা
হয়ে
থাকে।
একইভাবে
অষ্টাদশ
শতাব্দীতে
নবদ্বীপের
রাজা
কৃষ্ণচন্দ্র
প্রথম
মহাকালী
পুজোর
প্রবর্তন
করেন।
তাঁর
বংশধরেরাই
এই
পুজোর
ঐতিহ্য
ধরে
রাখেন।
প্রাথমিকভাবে
শক্তির
আরাধনায়
মা
কালীর
পূজা
শুধুমাত্র
বিত্তশালী
ও
খ্যাত
পৃষ্ঠপোষকদেরই
কুক্ষিগত
ছিল।
যদিও
বর্তমানে
দুর্গাপুজোর
পর
জনপ্রিয়তার
নিরিখে
কালীপুজোই
সার্বজনীন
পুজোগুলির
মধ্যে
অন্যতম।
পুরাণ
কাহিনী
মা
দূর্গার
মতো
মা
কালীরও
একটি
পুরাণ
কাহিনী
রয়েছে।
কোনও
এক
সময়
সুম্ভ
ও
নিসুম্ভ
নামের
দুই
অসুর
স্বর্গে
ও
মর্ত্যে
আক্রমণ
করে।
তাদের
আটকাতে
দেবী
দূর্গার
কাছে
প্রার্থনা
করেন
দেবতারা।
সুম্ভ-নিসুম্ভকে
আটকাতে
মা
দূর্গার
কপাল
থেকে
জন্ম
হয়
মা
কালীর।
মহামায়ার
চণ্ডাল
রূপই
হলেন
মা
কালী।
এর
পরই
নিজের
খাঁড়া
দিয়ে
অসুরদের
বধ
করতে
শুরু
করেন
কালী।
বধের
সঙ্গে
সঙ্গেই
তাদের
রক্তও
পান
করতে
থাকেন
দেবী।
ফলে
ক্রমশই
রক্তের
তৃষ্ণা
বাড়তে
থাকে।
মৃত
অসুরদের
মেরে
তাদের
মুন্ডের
মালা
গলায়
পড়ে
নেন
তিনি।
এমতাবস্থায়
কালীকে
আটকানো
কার
পক্ষেই
সম্ভব
হচ্ছিল
না।
পথে
কেউ
এলেই
তাকেও
মেরে
ফেলছিলেন।
কালীর
উন্মত্ততাকে
আটকাতে
তাঁর
স্বামী
শিব
পথে
শুয়ে
পড়েন।
উন্মত্ত
অবস্থায়
যখন
মা
কালীর
স্বামীর
গায়ে
পা
তুলে
দেন,
অনুশোচনায়
তখন
তাঁর
জিহ্বা
বেরিয়ে
আসে।
এবং
ধীরে
ধীরে
শান্ত
হন
দেবী।
মা
কালীর
এই
রূপকেই
পুজা
করা
হয়।
কালীপুজো মূলত মধ্যরাতে হয়ে থাকে। কার্তিক মাসের অমাবস্যার রাতে মা কালীকে পুজো করা হয়। আগেরকার দিনে যুদ্ধে যাওয়ার আগে জয় পাওয়া ও নিরাপত্তার জন্য মা কালীকে পুজো করা হতো। যদিও এখন প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে মহা কালীর পুজো করা হয়ে থাকে।
কলকাতাতে অত্যন্ত ধুমধাম করে পালিত হয় কালীপুজো। এখানকার ফাটা কেষ্টর কালীপুজো বিখ্যাত। তবে কলকাতাকে টেক্কা দিতে শহরতলীও উঠে আসছে ক্রমশ।
মহা কালী
শক্তির আরাধনায় মা কালীর পুজো করা হয় দীপাবলীতেই
বাজি-মাত
রংমশাল,চড়কি,ফুলঝুড়ি, হরেক রকমের বাজিতেই পালিত হয় দীপাবলী
শ্যামাকালী
মা কালীর অনেক রূপের মধ্যে শ্যামা রূপ অন্যতম
রামকৃষ্ণদেব ও মা সারদা
মা কালীর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব
সার্বজনীন কালীপুজো
এখন আর বিত্তবানের কুক্ষীগত নয় কালীপুজো, সার্বজনীন হয়ে উঠেছে কালীপুজো
উদ্বোধনে মমতা
কলকাতায় এক মন্ডপে পুজোর উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
গান্ধীনগর
দীপাবলী উপলক্ষে গান্ধীনগরের অক্ষরধাম মন্দির প্রদীপের আলোয় সেজে উঠেছে
মির্জাপুর
দীপাবলি উপলক্ষে মির্জাপুরের একটি দোকানে লাড্ডু তৈরিতে ব্যস্ত মহিলারা
মথুরা
বৃন্দাবনে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে বাজি পুড়িয়ে দীপাবলী উৎযাপন করছেন সেখানকার বিধবা মহিলারা