মুকুলের 'ঘরে'ই বিদ্রোহের আঁচ বিজেপির বিরুদ্ধে! একুশের আগে কি চমক অপেক্ষা করছে
মুকুল রায়ের ঘর থেকেই ফের বিদ্রোহের সুর উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। বিজেপি তড়িঘড়ি ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেও কাজের কাজ কিছু করতে পারছে না।
মুকুল রায়ের ঘর থেকেই ফের বিদ্রোহের সুর উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। বিজেপি তড়িঘড়ি ড্যামেজ কন্রো রলে নেমেও কাজের কাজ কিছু করতে পারছে না। তৃণমূল ছাড়ার সময়ে মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশ যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় গর্জে উঠেছিলেন, ফের বিজেপিতেও একই সুর তুলে দিলেন তিনি। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাই বিপাকে মুকুল রায়।
মমতাই আদর্শ, শুভ্রাংশু কি তাই বিদ্রোহী!
মুকুল রায় ২০১৭-র নভেম্বরে দলবদল করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তারপর প্রায় দু-বছর শুভ্রাংশু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে ছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই তিনি রাজনীতিতে আদর্শ মানেন, সেকথা বলতেও দ্বিধা করেননি। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের পর তিনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার এক বছর কাটতে না কাটতেই দল ছাড়ার ইঙ্গিত দিলেন।
Posted by Subhranshu Roy onWednesday, October 14, 2020 |
বিজেপির প্রতি মোহভঙ্গ, ফেসবুকে যে বার্তা
শুভ্রাংশু সম্প্রতি ফেসবুক পোস্টে লেখেন- রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছা অবসর নিলে কেমন হয়। এরপরই জল্পনার পারদ চড়ে যায়- তাহলে কি বিজেপি ছাড়তে চলেছেন শুভ্রাংশু! বিজেপির প্রতি তাঁর মোহভঙ্গ হয়েছে, তাই তিনি রাজনীতি ছেড়ে স্বেচ্ছা-অবসর নেওয়ার কথা ভাবছেন! তা নিয়ে ঘরে-বাইরে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়।
মুকুলের ঘর থেকেই কেন উঠছে বিদ্রোহের আগুন
এখন প্রশ্ন শুভ্রাংশু হঠাৎ কেন এমন উল্টো সুর গাইলেন। বিজেপি যেখানে এক হতে তৃণমূলকে উৎখাত করার চেষ্টা করছেন। এবং সেই যুদ্ধে মুকুল রায়ই কার্যত সেনাপতি বিজেপির। তাহলে তাঁর ঘর থেকেই কেন উঠছে বিদ্রোহের আগুন! শুভ্রাংশু কি বিজেপিতে মুকুল রায়ের এই ভূমিকায় খুশি নন? নাকি বিজেপিতে তিনি সুখে নেই?
শুভ্রাংশু কী বোঝাতে চাইছেন ফেসবুক বার্তায়?
শুভ্রাংশু কী বোঝাতে চাইছেন তাঁর এই ফেসবুক বার্তায়। তিনি কি এমনটাই উপলব্ধি করছেন যে, বিজেপি শুধু তাঁর বাবাকে ভোটে জিততেই ব্যবহার করছে? নাকি মুকুল রায়ের গুরুত্ব বৃদ্ধির ফলে বিজেপির আদি নেতা ও কর্মীরা তাঁদের দিক থেকে সরে যাচ্ছেন? ফলে মুকুল রায় সামনে থাকলেও তাঁর বিধানসভা নির্বাচনে জয় কঠিন হয়ে যাবে!
বিজেপিতে মানিয়ে নিতে পারছেন না শুভ্রাংশু!
শুভ্রাংশুর এই পোস্ট অনেক কিছু জল্পনার বাতাবরণ তৈরি করছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, শুভ্রাংশু বিজেপিতে খুব ভালো জায়গায় নেই। তিনি বিজেপিতে মানিয়ে নিতে পারছেন না বলেই হয়তো এমন হতাশার কথা বলেছেন। বলেছেন স্বেচ্ছা অবসর নিলে কেমন হয়। কিংবা তিনি চাইছেন তৃণমূলে ফিরে যেতে। সেখানে হয়তো তিনি অনেক ভালো ছিলেন বলে উপলব্ধি করছেন।
শুভ্রাংশু কি টের পাচ্ছেন আদি-নব্য দ্বন্দ্ব!
আবার শুভ্রাংশু আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে এমন কোনও সমস্যা উপলব্ধি করতে পারেন যে, যাঁদের নিয়ে তিনি চলেন, যাঁদের নিয়ে রাজনীতি করেন, তাঁরা দূরে সরে যাচ্ছেন। ফলে তিনি পদ্মশিবিরে একা হয়ে যাচ্ছেন। বিজেপির পুরনো নেতারা তাঁকে হয়তো সেভাবে সহযোগিতা করছে না। এমন নানা বাতাবরণ থেকে তিনি সরে আসতে ইচ্ছাপ্রকাশ করছেন রাজনীতি থেকে।
Posted by Subhranshu Roy onFriday, October 16, 2020 |
বিজেপি ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামার পর শুভ্রাংশু
তবে মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশুর এই স্বেচ্ছা-অবসরের বার্তার পরই বিজেপি তড়িঘড়ি ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামে। তার ফলস্বরূপ শুভ্রাংশু আরও একটি ফেসবুক পোস্ট করেন। সেখানে শুভ্রাংশু লেখেন- "রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছা অবসর নেব কি নেব না, তা ভবিষ্যৎই বলবে। কিন্তু জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মানুষের সেবা করে যাব। জনসেবার মধ্য দিয়েই মানুষের মাঝে থেকে যাব। কারণ মানুষের মধ্যেই নারায়ণ বর্তমান। যে-ই নারায়ণ, সে-ই জগন্নাথ, সে-ই রাম।"
বিজেপিতে থাকছেন নাকি বড় কোনও সিদ্ধান্ত শুভ্রাংশুর
শুভ্রাংশুর এই পোস্টে খানিক ড্যামেজ কন্ট্রোল হলেও তিনি রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছা অবসর বা দলবদলের জল্পনা জিইয়েই রেখেছেন। বীজপুরের বিধায়ক তথা মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করে বোমা পাঠাবেন বলেছিলেন। তা তিনি করেননি ঠিকই, কিন্তু বিজেপির কর্মসূচিতেও তিনি উপস্থিত হননি। ফলে জল্পনা থেকেই গেল- তিনি বিজেপিতে থাকছেন নাকি অবসর নিচ্ছেন!