পঞ্চায়েতে বিরাট-জয় তৃণমূলের, চারমাসের লড়াই শেষে শীর্ষ-রায়েও সবুজ ঝড় বাংলায়
পুনরায় পঞ্চায়েত ভোটের জন্য জোর সওয়াল চালাল বিজেপি। শাসক তৃণমূল কংগ্রেস ও নির্বাচন কমিশন ছাড়া অন্যান্য বিরোধী দলগুলিরও একই অভিমত।
পঞ্চায়েতের চূড়ান্ত মামলাতেও বড় জয় পেল তৃণমূল কংগ্রেস। আক্ষরিক অর্থেই বিজেপির শোচনীয় পরাজয় ঘটল। পরাজয় ঘটল বিরোধীদের। পঞ্চায়েত ভোটে ৬৬ শতাংশ আসনের লড়াইয়ে বিপুল জয় পেয়েছিল তৃণমূল। ৩৪ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় নিয়ে আইনি লড়াইয়েও তৃণমূলের জয় জয়কার হল। সুপ্রিম কোর্টেও নির্দেশেও জয়ের স্বীকৃতি পেলেন তৃণমূল প্রার্থীরা।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর ২০১৫৯ আসলে জয়ী বলেই মান্যতা পেলেন তৃণমূলের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী প্রার্থীরা। চূড়ান্ত জয় পাওয়ার পর তৃণমূলের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের পর বিরোধীরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। বিজেপি-সহ বিরোধীরা চাইছিল পঞ্চায়েত প্রক্রিয়াটিকে ঘেঁটে দিতে। প্রথম থেকেই মামলার পর মামলা করে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে বিলম্বিত করা হয়েছে। তারপরের লক্ষ্য ছিল পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনে বিলম্বিত করা। কিন্তু কোনও চক্রান্তই ফলপ্রসূ হল না।
তৃণমূলের অভিযোগ, পুনরায় পঞ্চায়েত ভোটের জন্য সওয়াল চালায় বিজেপি। অন্য বিরোধী দলগুলিরও একই অভিমত ছিল। সবাই-ই চেয়েছিল, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী আসনে ফের ভোট হোক। মানুষের ভোটদানের অধিকার ও ভোটে অংশগ্রহণ করার অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানান বিজেপির আইনজীবী। কিন্তু রাজ্য সরকার ও নির্বাচন কমিশেনর পক্ষেই শীর্ষ আদালতের রা. গেল। মুখ পুড়ল বিজেপির।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র এদিন পঞ্চায়েত মামলার রায়ে, জানান নির্বাতন কমিশন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ীদের নাম ঘোষণা করতে পারে। যদি কারও আপত্তি থাকে তাঁরা ট্রাইব্যুনালে আপত্তি জানাতে পারে। সেইমতোই নির্বাচন কমিশন শুক্রবারের মধ্যে জয়ী ঘোষণার বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, জয়ের শংসাপত্র আগেই প্রদান করা হয়েছিল। এখন বিজ্ঞপ্তি জারি হলেই তা কার্যকর হবে। সেক্ষেত্রে শনিবার থেকে ৩০ দিনের মধ্যে আপত্তি জানিয়ে ট্রাইব্যুনালে যেতে পারে বিরোধীরা।
[আরও পড়ুন: '২০১৯ -এ দেখে নেব কার কত কব্জির জোর', পঞ্চায়েত মামলার রায়ের পর তৃণমূলকে তোপ দিলীপের ]
রাজ্য সরকারের দাবি ছিল, রাজ্যের গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির মেয়াদ ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে। এই মামলার কারণে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন করা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় রাজ্যে তৈরি হয়েছে সাংবিধানিক সংকট। ২২ হাজার কোটি টাকার তহবিল পড়ে রয়েছে। সেই টাকা গ্রামের উন্নয়নে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ফলে আবশ্যক হয়ে পড়েছে মামলার জরুরি রায়দান।
[আরও পড়ুন: ফেস রেকগনিশন বাধ্যতামূলক! আধার প্রমাণীকরণে জুড়ল অতিরিক্ত নিরাপত্তার স্তর ]
সেইমতোই এদিন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ রায়দান করে। এই রায়দানের পর তৃণমূল কংগ্রেসের আইনজীবী-সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিরোধীরা চেয়েছিলেন নির্বাচন প্রক্রিয়াটিকে একেবারে নস্যাৎ করে দিতে। তিনি বলেন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কখনও কোনও দল জেতেনি, এমনটা তো নয়। এর আগেও বহুবার এমন ঘটনা ঘটেছে। প্রার্থী দিতে না পারায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে কোনও না কোনও দল। এবারও তাই হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছে, তাতে আমরা খুশি।
[আরও পড়ুন:আবহাওয়ার ভেলকি! কেরলে বন্যা অথচ দক্ষিণ ভারতের বহু জেলায় দেখা দিয়েছে খরার আশঙ্কা]