হাইকোর্টের নির্দেশ মত রাজ্যের সংশোধনাগার থেকে বন্দি মুক্তির পক্রিয়া শুরু হয়েছে
হাইকোর্টের নির্দেশ মত রাজ্যের সংশোধনাগার থেকে বন্দি মুক্তির পক্রিয়া শুরু হয়েছে
রাজ্যের বিভিন্ন সংশোধনাগার থেকে বন্দীদের যাবতীয় নথি খতিয়ে দেখে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় ২৮০০ বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে করেছে কলকাতা হাইকোর্টের গঠিত কমিটি। সোমবার হাইকোর্টের কাছে এই বন্দীদের তালিকাও পাঠানো হয়েছে হাইকোর্টের কমিটির তরফে। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৬ এপ্রিল।
করোনায় প্রত্যেকটি রাজ্যের সংশোধনাগার থেকে বন্দির চাপ কমাতে আগেই উদ্যোগ নিয়েছিল সুপ্রিমকোর্ট। তা কার্যকর করতেও প্রত্যেকটি রাজ্যের হাইকোর্টের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সুপ্রিমকোর্টের তরফে। সেই নির্দেশ কার্যকর করতে উদ্যোগী হল কলকাতা হাইকোর্টও। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব অথবা মুখ্য সচিব, রাজ্যের লিগ্যাল এইড সার্ভিস অথরিটি বা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান দীপঙ্কর দত্ত এবং কারা বিভাগের মুখ্যসচিবকে নিয়ে হাইকোর্টের গঠিত কমিটি প্রাথমিকভাবে ২৮০০ বন্দিকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য সুপারিশ জানিয়েছে আদালতের কাছে। সেই সুপারিশ মেনেই এই বন্দীদের ছাড়া কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
রাজ্যের
লিগ্যাল
এইড
সার্ভিস
অথরিটি
সূত্রের
জানা
গিয়েছে,
প্রাথমিকভাবে
কমিটি
সিদ্ধান্ত
নিয়েছে
যে
সমস্ত
বন্দি
কম
সাজা
প্রাপ্ত,
বা
অর্ধেকের
বেশি
জেল
খাটা
হয়ে
গিয়েছে,
বা
যাদের
শারীরিক
অসুস্থতা
নেই।
তাদেরকেই
মুক্তি
দেওয়া
হবে।
শর্ত
অনুযায়ী
বাড়ির
বাইরে
তারা
বের
হতে
পারবেন
না।
তবে
যারা
পস্ক
মামলায়
অভিযুক্ত,
যাদের
বিরুদ্ধে
ধর্ষণের
অভিযোগ
রয়েছে,
যারা
বড়
কোন
মাদক
পাচার
চক্রের
সঙ্গে
জড়িত
এবং
ভিনদেশের
ও
ভিন
রাজ্যের
নাগরিক
হয়েও
গুরুতর
অভিযোগে
অভিযুক্ত
এমন
বন্দীদের
মুক্তি
না
দেওয়ার
সিদ্ধান্ত
নেওয়া
হয়েছে।
জানা গিয়েছে, বর্তমানে রাজ্যের সংশোধনাগারগুলিতে ২৬৫০০ বন্দি রয়েছেন। এঁদের মধ্যে মুক্তি পেতে চলেছে ২৮০০ বন্দী। বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত দু'হাজারের বেশি বিচারাধীন বন্দি এবং সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে এক হাজারের বেশি বন্দি রয়েছেন। ওই বিচারাধীন বন্দিদের অন্তর্বর্তী জামিন এবং সাজাপ্রাপ্তদের প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হবে। গত ২৪ মার্চের পর হাইকোর্টের কমিটি গঠিত হওয়ার পর গত কয়েক দিন ধরে দফায় দফায় অনলাইনে আবেদন করা হয়েছে।
আদালত সূত্রে খবর, সাজাপ্রাপ্ত বন্দীদের মধ্যে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকে ১৬৮ জনের, হাওড়া সংশোধনাগার থেকে ৭৯ জনের, জলপাইগুড়ি সংশোধনাগার থেকে ১৪৮ জনের, দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে ৮৯ জনের, বহরমপুর সংশোধনাগার থেকে ১১৭ জনের, বালুরঘাট থেকে ৩৭ জনের, মালদা জেলার সংশোধনাগার থেকে ১৪০ জনের, বর্ধমান থেকে ৫৯ জনের, হুগলি থেকে 81 জনের, সিউড়ি থেকে ৭৬ জনের, আসানসোল থেকে ২৭ জনের, মেদিনীপুর থেকে ৯২ জনের, বসিরহাট থেকে ৬০ জনের, ব্যারাকপুর থেকে ১৫ জনের এবং আলিপুর মহিলা সংশোধনাগার থেকে ১২ জনের নাম সুপারিশ করা হয়েছে।
রাজ্য লিগাল সার্ভিসেস অথরিটির সদস্য সচিব দুর্গা খৈতান জানান, যাবতীয় নথিপত্র খতিয়ে দেখে সংশোধনাগারগুলোতে পৌঁছে গেলে যত দ্রুত সম্ভব বন্দিদের ছেড়ে দেওয়া হবে। একইসঙ্গে বন্দিদের জামিন ও প্যারোলের ক্ষেত্রে যে সব শর্ত দেওয়া হয়েছে, তা যাতে লঙ্ঘিত না-হয়, তা দেখার জন্য পুলিশকেও নির্দেশ দেওয়া হবে। বিচারাধীন বন্দিদের অন্তর্বর্তী জামিনের ক্ষেত্রে নথি সংশ্লিষ্ট স্থানীয় আদালতে পাঠিয়ে লিগাল এইডের প্যানেলভুক্ত আইনজীবীদের রেখে জামিনের ব্যবস্থা করা হবে।