পায়ের তলার মাটি সরছে মোর্চার, সেই সুযোগে ঘর গুছাতে ময়দানে নেমে পড়ল জিএনএলএফ
পাহাড়ে তৃণমূলের শক্তিহরণ করে নিজেরা বাড়তে চাইছে। সেই আঙ্গিকেই জিএনএলএফ সূত্রে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে পাহাড়ে তৃণমূলের সঙ্গে শুধু নির্বাচীন জোট হয়েছিল, এখন তা অতীত।
পাহাড়ে এবার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের আওয়াজ তুলে দিল জিএনএলএফ। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাকে চাপে ফেলতেই এই নয়া কৌশল পাহাড়ি সুবাস ঘিসিংয়ের দলের। মোর্চার পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে ধরে নিয়েই এবার নিজেদের প্রাসঙ্গিক করে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে জিএনএলএফ। ইতিমধ্যেই ঘর গুছাতেও লেগে পড়েছে তারা। পাহাড়ে তৃণমূলের শক্তিহরণ করে নিজেরা বাড়তে চাইছে। সেই আঙ্গিকেই জিএনএলএফ সূত্রে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে পাহাড়ে তৃণমূলের সঙ্গে শুধু নির্বাচীন জোট হয়েছিল, এখন তা অতীত।
সেইসঙ্গে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাকেও বার্তা দিয়েছে জিএনএলএফ নেতৃত্ব। রবিবার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক করে জিএনএলএফ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তাঁরা পাহাড়ে হিংসাত্মক আন্দোলন সমর্থন করে না। তাঁরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেই পাহাড়বাসীর দাবি আদায়ের পক্ষে। তাই এখন থেকে তাঁরা কোনওরকম হিংসাত্মক ঘটনাকে সমর্থন করবে না।
সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে অনির্দিষ্টকালীন বনধ ডাকা হলেও, তারপর থেকেই প্রতিদিন নিয়ম করে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে মোর্চা সমর্থকরা। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও আগুন ধরানো হচ্ছে। মিছিল করে হিংসা ছড়ানো হচ্ছে। কিন্তু তা মানতে নারাজ জিএনএলএফ। তাঁরা চান, শান্তিপূর্ণ পথে আন্দোলন জারি থাকুক। পাহাড়কে আবার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে দেওয়া হোক।
পাহাড়ে মোর্তা একা আন্দোলন শুরু করলেও, পরে পাহাড়ের সমস্ত দলকে তারা পাশে পেয়েছিল। কিন্তু এখন কার্যত একা হয়ে গিয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। এদিন মিছিল ও থানা ঘেরাও কর্মসূচিতে শুধু মোর্চা সমর্থকদেরই দেখা গিয়েছে। ফলে পাহাড় আন্দোলনের রাশ আলগা হচ্ছে ক্রমশ।
গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলি এককাট্টা থাকবে- এমন সিদ্ধান্ত হয়েছিল সর্বদলীয় বৈঠকে। পাল্টা পাহাড়ের দলগুলির অধিকাংশই চেয়েছিল বনধ শিথিল করতে। কিন্তু মোর্চা একক ক্ষমতা প্রদর্শন করে সিদ্ধান্ত নেয় বনধ চলবে। তারপর থেকেই পাহাড়ের আন্দোলনে একা পড়ে যাচ্ছে মোর্চা। সব দলেরই দু'জন সদস্যকে স্থান দেওয়া হয়েছিল মুভমেন্ট কমিটিতে। তাও গৌণ হয়ে গিয়েছে।
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এদিন পাহাড়ে থেকে শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ পরিবহণ নিগমের বাস নামতে দেয়নি। কেন নামছে, তা লিখিত বিবৃতি দিয়ে জানাতে হবে বলে মোর্চা সমর্থকরা দাবি জানায়। লিখিত না দিলে বাস নামতে দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় মোর্চা সমর্থকরা। ফলে বাসে আটকে পড়েন যাত্রীরা। শেষপর্যন্ত তাঁরা কেউ নামতে পারেননি।