মমতার অনুপ্রেরনাতে কিছু লোক মা দুর্গা এবং হিন্দুদের অপমান করছে! ভারতচক্র পুজোকে আইনি নোটিশ
গত বছর করোনা আবহেও শহরের পুজোগুলিতে ছিল থিমের চমক। এই বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। উত্তর থেকে দক্ষিণ সর্বত্রই সৃষ্টির ছোঁড়াছুড়ি। কেউ দিচ্ছেন এনআরসি নিয়ে বার্তা আবার কেউ সাওম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতিকে তুলে ধরছেন।
গত বছর করোনা আবহেও শহরের পুজোগুলিতে ছিল থিমের চমক। এই বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। উত্তর থেকে দক্ষিণ সর্বত্রই সৃষ্টির ছোঁড়াছুড়ি। কেউ দিচ্ছেন এনআরসি নিয়ে বার্তা আবার কেউ সাওম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতিকে তুলে ধরছেন।
তবে শহরতলির একটি স্থানীয় ক্লাব এ বছর তাদের পুজোয় কৃষকদের যন্ত্রণার কথা তুলে ধরেছেন। তাঁদের সংঘর্ষের কথা তুলে ধরেছেন প্যান্ডেল জুড়ে। যাঁরা প্রায় এক বছর ধরে কৃষি আইন নিয়ে বিরোধিতা করে চলেছেন দিল্লির সীমান্তে।
তবে শুধু কৃষি আইন নয়, এই পুজো মণ্ডপে তুলে ধরা হয়েছে কৃষক আন্দোলনের ধারাবাহিকতা। যেখানে সম্প্রতি হওয়া লখিমপুর খিরির ঘটনাও ঠাঁই পেয়েছে, যেখানে আটজন কৃষক মারা গিয়েছেন।
আর তা বোঝাতে গিয়ে গোটা মন্ডপজুড়ে ব্যবহার করা হয়েছে পা এবং চটি।
সবদিক থেকেই ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত
আর তা থেকেই শুরু বিতর্ক! মন্ডপে কেন চটির ব্যবহার তা নিয়ে প্রশ্ন বিজেপি নেতৃত্বের। এমনকি ইতিমধ্যে ওই পুজোকে আইনি নোটিশও পাঠানো হয়েছে। ধর্ম বিশ্বাসে আঘাত বলে দাবি আইনজীবীর। শুধু তাই নয়, এই নিয়ে তাঁর লড়াই জারি থাকবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। পুজোর ঠিক আগে এই নোটিসে বেশ অস্বস্তিতে পুজো কমিটি। আইনজীবীর অভিযোগ, এই মণ্ডপসজ্জায় জুতো, চটি ব্যবহার করা হয়েছে। আর তা সবদিক থেকেই ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত বলে দাবি আইনজীবীর। আর সেই কারনে দমদম পার্ক ভারতচক্রকে এই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে এই বিষয়টিকে মোটেই ভালো চোখে দেখেছেন না বঙ্গ বিজেপি নেতারা।
ষষ্ঠীর মধ্যে চটি সরাতে হবে!
ষষ্ঠীর মধ্যে চটি সরাতে হবে! টুইটারে হুঁশিয়ারি শুভেন্দু অধিকারীর। তাঁর মতে, শিল্পের নামে মা দুর্গাকে অপমান করা হচ্ছে। রাজ্যের মুখ্য সচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে বিরোধী দলনেতার আর্জি বিষয়টি দেখার জন্যে। এবং আগামী ষষ্ঠীর মধ্যে সরিয়ে নেওয়ার কথা বলেন শুভেন্দু। অন্যদিকে বিজেপি নেতা অমিত মালব্য বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুপ্রেরনাতে কিছু লোকজন মা দুর্গা এবং হিন্দুদের অপমান করা হয়েছে। তৃণমূলের যোগ আছে বলেই কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
পুজো নিয়েই বেশি ভাবতে চান উদ্যোক্তারা
ইতিমধ্যে পুজো উদ্যোক্তাদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে আইনি নোটিশ। তবে বিষয়টি নিয়ে এখন খুব একটা ভাবতে নারাজ উজো উদ্যোক্তারা। তাঁদের মতে, পায়ের চিহ্ন দিয়ে আমরা শাসকের ক্ষমতা দেখাতে চেয়েছি। কারও ভাবাবেগে আঘাত করা উদ্দেশ্য নয়।
দমদম ভারত চক্রে কৃষক প্রতিবাদ
দমদম পার্ক ভারতচক্রের প্রবেশ পথেই বিশাল ট্রাক্টরের প্রতিরূপ নজরে আসবে। এছাড়াও লখিমপুরের ঘটনাকে অনুসরণ করে মণ্ডপের দেওয়ালে আঁকা হয়েছে বিশার মোটরগাড়ি, যার নীচে পিষে মরছেন কৃষক। বাংলায় তার চারপাশে লেখা রয়েছে, 'মোটরগাড়ি উড়ায় ধূলো, নীচে পড়ে চাষীগুলো।' এছাড়াও মণ্ডপের দেওয়ালে সারি সারি চটি কৃষকদের কঠিন যাত্রারই প্রতীক। প্রধান মণ্ডপ সাজানো হয়েছে ছাদ থেকে খড় ঝুলিয়ে ঝুলিয়ে। শিল্পী অনির্বাণ দাস, যাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত এই থিমের ভাবনা, তিনি জানিয়েছেন, আন্দোলন চলাকালীন যে সব কৃষক মারা গিয়েছেন তাঁদের নাম কাগজের চিরকুটে করে লেখা রয়েছে ট্রাক্টরের ডানায়। শিল্পী বলেন, 'ডানাগুলি তাদের বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ার আকাঙ্ক্ষার প্রতীক।' ইংলিশে পোস্টারে লেখা রয়েছ, 'আমরা কৃষক, জঙ্গি নয়। কৃষকরা খাবারের সৈনিক।'