উপনির্বাচনে প্রার্থী দেবে না কংগ্রেস ! অধীরের মন্তব্যে জল্পনা রাজনৈতিক মহলে
উপনির্বাচনে তৃণমূল বা বিজেপি সুবিধা পাবে এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না কংগ্রেস। বামেদের জোট বার্তা দিতে সাহস না করলেও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এই মন্তব্যকে ঘিরে রাজনাতিক মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা।
কলকাতা, ১৭ অক্টোবর : তৃণমূল বা বিজেপি সুবিধা পাবে এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না কংগ্রেস। বামেদের দিকে সরাসরি জোট বার্তা দিতে সাহস না করলেও সোমবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী সাফ জানালেন, উপ-নির্বাচনে লড়ার বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি। তাই রাজনৈতিক মহলে এমনই জল্পনা শুরু হয়েছে যে, আসন্ন উপনির্বাচনে কোনও কেন্দ্রেই প্রার্থী দেবে না কংগ্রেস। প্রকারান্তের তৃণমূল বিরোধী ভোট ভাগ হোক, চাইছেন না তিনি।
বিগত বিধানসভা নির্বাচনে ধরাশায়ী হয়েছে কংগ্রেস-বাম জোট। ফলে সেই জোটের এই মুহূর্তে আর সে অর্থে প্রাসঙ্গিকতা নেই। মানুষের আস্থা অর্জনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ জোট। তাই জোট করে লড়ব, এক ইঞ্চিও জমি ছাড়ব না তৃণমূলকে, তা আর বড় মুখ করে বলতে পারছেন না অধীরবাবুরা। এদিন বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করে জোটবদ্ধ থাকার বার্তা দিলেও, আসন্ন উপনির্বাচনে কী স্ট্র্যাটেজি হবে তা ঠিক করতে ব্যর্থ হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
সোমবারই রাজ্যের দুটি লোকসভা এবং একটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে বামেদের দিকে ফের জোট-বার্তা দিতে পারে কংগ্রেস, এমনটা মনে করা কঠিন মনে হচ্ছে। বামফ্রন্টও এবার একলা চলো নীতি নিয়ে নিয়েছে। তাই আবার যেচে কংগ্রেস জোট বার্তা কি দেবে? প্রদেশ সভাপতির কথায় একটা ইঙ্গিত মিলেছে, প্রার্থী নাও দিতে পারে কংগ্রেস। সেক্ষেত্রে পার্টির কর্মীদের কী জবাব দেবেন তিনি। অধীরবাবুর শুধু সেক্ষেত্রে সেই একটাই কথা বলার থাকবে, 'আমরা নিশ্চিত করতে চাই বিরোধী ভোট তৃণমূল বা বিজেপির কাছে যেন না যায়।'
এর আগে গত সপ্তাহে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জানিয়েছিলেন, কোচবিহার কেন্দ্রে প্রার্থী দেবে ফরওয়ার্ড ব্লক। অন্যদিকে, তমলুক ও মন্তেশ্বরে প্রার্থী দেবে সিপিএম। তিন এ-ও জানিয়ে রাখেন, কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও জোট-আলোচনা হয়নি এবং বামফ্রন্ট এই উপ-নির্বাচনে একলা চলো নীতিতেই এগোতে চাইছে। এদিকে অধীরের এই মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে বাম নেতৃত্বের একাংশ। এখন সিপিএম মনে করছে, সরকারিভাবে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধা সম্ভব নয়। তাই কংগ্রেস যদি নির্বাচনে না লড়াই করে, তাহলে আখেরে লাভ হবে বামেদেরই।
এদিকে এদিন কংগ্রেস বিধায়কদের দলে ধরে রাখা নিয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে। এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তাঁর দল টার্গেট করছে কংগ্রেস বিধায়কদের। সাধের মুর্শিদাবাদ তৃণমূলের কাছে খুইয়েছে কংগ্রেস। এখন সব হারিয়ে বিধায়ক বাঁচানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। কেননা ১৫ জন কংগ্রেস বিধায়কের একটা তালিকা ইতিমধ্যেই তৈরি করে ফেলেছে।
তৃণমূল যেকোনওভাবে দলত্যাগী বিধায়কদের আবার ভোটের মুখোমুখী হওয়া রুখতে চাইছে। সেক্ষেত্রে এখনও ১৫ বিধায়ককে ভাঙিয়ে আনতে হবে কংগ্রেস থেকে। তাহলে তৃণমূল আর দলত্যাগী আইনে পড়বে না। আর কংগ্রেস সেটই রুখে দিয়ে উচিত 'শিক্ষা' দিতে চাইছে।